ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফেনীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে হানাদারমুক্ত দিবস পালিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৯
ফেনীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে হানাদারমুক্ত দিবস পালিত

ফেনী: বিজয় দিবসের ১০ দিন আগেই হানাদার মুক্ত হয় ফেনী জেলা। মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের নেতৃত্বে ৬ ডিসেম্বর ভোরেই মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে ফেনী প্রবেশ করে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে পুরো শহর প্রকম্পিত করে তোলে। সাধারণ মানুষ শুরুতে এমন শ্লোগানে হতচকিত হয়ে পড়লে পরে আনন্দে শামিল হয়।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ফেনী মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে।

এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় শহরের জেল রোডস্থ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ফেনী পৌরসভা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

এরপর সকাল ১০টায় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ সংলগ্ন স্থানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আকরামুজ্জামান, ফেনী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবদুর রহমান, সাবেক কমান্ডার আবদুল মোতালেব, দাগনভূঞা উপজেলার সাবেক কমান্ডার শরীয়ত উল্যাহ ও মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল্লাহ বাহার ভূঁইয়া প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা পার্শ্ববর্তী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থান নিয়ে শত্রুর মোকাবিলায় ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে থাকেন। পরশুরামের বিলোনিয়ায় পাক সেনাদের সঙ্গে কয়েক দফা লড়াই হয় মুক্তিযোদ্ধাদের। সর্বশেষ ৪ নভেম্বর রাতে মুহুরী নদীর পাড় ঘেঁষে পরশুরামে প্রবেশ করেন দশম ইস্ট-বেঙ্গল রেজিমেন্টের ইপিআর সদস্য ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা।

‘তারা পাক সেনাদের দখলে থাকা চিথলিয়া ও পরশুরামের মজুমদার হাট ক্যাম্পের মাঝ বরাবর ঢুকে পড়ে শত্রুর অবস্থানে অতর্কিতে হামলা করে তাদের নাস্তানাবুদ করে তোলেন। দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই শেষে ৭ নভেম্বর পরশুরামকে শত্রুমুক্ত করা হয়। শত্রুদের অবস্থানের মাঝ বরাবর ঢুকে পড়ে যুদ্ধ করার এমন ঘটনা শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়, বিশ্বের যুদ্ধের ইতিহাসেও বিরল। যে কারণে বিভিন্ন দেশের সামরিক শিক্ষার বইয়ে বিলোনিয়ার যুদ্ধ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ’

আলোচনা সভা শেষে সুসজ্জিত হয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ঢাকঢোল বাজিয়ে সর্বস্তরের জনগরের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যা‌লিটি জেল রোড থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দোয়েল চত্বরে এসে শেষ হয়।

তরুণ সংঘের সভাপতি নুর শাহ মো. আজাদ জানান, প্রতিবারের মতো এবারও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তরুণ সংঘের উদ্যোগে ৬ ডিসেম্বর ভোর ৬টায় ছাগলনাইয়া থেকে নোয়াখালী সীমান্তের সেবারহাট ব্রিজ পর্যন্ত ৪১ কিলোমিটারের তারুণ্যের পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৭১জন সদস্য অংশ নেন। এর আগে তারা নিজাম হাজারী ও জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামানের হাতে জাতীয় পতাকা হস্তান্তর করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৯
এসএইচডি/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।