ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৬ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় শেরপুরের শ্রীবরদী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৯
৬ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় শেরপুরের শ্রীবরদী

শেরপুর: ৬ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা। ১৯৭১ সালের এই দিনে খণ্ড-খণ্ড কয়েকটি যুদ্ধের পর পরাজিত হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, শত্রুমুক্ত হয় উপজেলাবাসী। যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা। হত্যা করা হয় অনেক গ্রামবাসীকে।

যুদ্ধকালীন সময়ের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জানান, ৪ ডিসেম্বর ধানুয়া কামালপুর মিত্র বাহিনীর আক্রমণে পরাজিত হয় পাকস্তানি হানাদার বাহিনী। পরে হানাদার সেনারা ছুটে আসে শ্রীবরদীর দিকে।

এ সংবাদ পান ১১ নম্বর সেক্টরের কর্নেল আবু তাহের। তার নেতৃত্বে গেরিলা সৈনিকদের নিয়ে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন মুক্তিযোদ্ধারা। কর্নেল তাহের আরও জানতে পারেন ৫ ডিসেম্বর রাতে কামালপুর থেকে পার্শ্ববর্তী উপজেলা বকশিগঞ্জ ও শ্রীবরদী হয়ে পাকিস্তানি মেজর আইয়ুব জামালপুর যাবে। সেই সূত্র ধরে শ্রীবরদী থেকে বকশিগঞ্জ সড়কের টিকরকান্দি এলাকায় সম্মুখযুদ্ধের প্রস্তুতি নেন মুক্তিযোদ্ধারা। মেজর আইয়ুব সাজোয়া গাড়ি নিয়ে সেই রাস্তায় আসার পথে শুরু হয় যুদ্ধ। রাতভর চলে মুখোমুখি যুদ্ধ। বিস্ফোরিত হয় স্থলমাইন। চলে গুলিবর্ষণ।  

এলাকার লোকজন ভয়ে ঘর-বাড়ি ফেলে ছুটে যায় নিরাপদ আশ্রয়ে। অবশেষে এ যুদ্ধে নিহত হন মেজর আইয়ুবসহ পাকিস্তানি সেনারা। হানাদারদের পরাজিত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। ৬ ডিসেম্বর ভোরে শত শত মানুষ জড়ো হয় শ্রীবরদী-বকশিগঞ্জ সড়কে। সবার কন্ঠে মুখরিত হয়ে ওঠে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’। সেসময় সেখান থেকে দলে দলে উচ্ছশিত মানুষ আর মুক্তিযোদ্ধারা আসে শ্রীবরদী বাজারের পুরাতন হাসপাতাল মাঠে। এখানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ওইসব মুক্তিকামী মানুষসহ মুক্তিযোদ্ধারা।

হানাদার বাহিনীর পরাজিত হওয়ার বর্ণনা দেন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহুরুল হক মুন্সী (বীর প্রতীক ‘বার’)। তিনি বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধে এ দিন ছিল শ্রীবরদীর জন্যে বিজয়ের দিন। এ যুদ্ধে মেজর আইয়ুবসহ পাকিস্তানি সেনারা পরাজিত হওয়ার কারণে শেরপুর ও জামালপুরের হানাদার সেনারা আরও দুর্বল হয়ে পড়ে।  

৬ ডিসেম্বর শ্রীবরদী হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৯
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।