ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কাঁচামালের দাম বাড়লে ওষুধের দাম কমিয়ে রাখা সম্ভব না

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৯
কাঁচামালের দাম বাড়লে ওষুধের দাম কমিয়ে রাখা সম্ভব না বক্তব্য রাখছেন নাজমুল হাসান পাপন। ছবি: বাংলানিউজ

মুন্সিগঞ্জ: বিসিবি সভাপতি ও বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, সরকার সব সময় ওষুধের দাম স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সবসময় তা সম্ভব হয় না। ৯৫ ভাগ ওষুধের দামই স্থিতিশীল ছিল। তবে এভাবে কাঁচামালের দাম বাড়তে থাকলে সরকারের পক্ষে ওষুধের দাম কমিয়ে রাখা সম্ভব না। 

একটি এপিআই ইণ্ডাস্ট্রি করার জন্য আমরা অনেকদিন ধরে বলে আসছি। আমরা ৯৮ ভাগ ওষুধ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করি।

এটা আমাদের একটা বড় শক্তি। কিন্তু ওষুধের কাঁচামালের ৯৫ ভাগ আমরা আমদানি করি। এদিক থেকে আমরা পেছনে রয়েছি। অবশ্য এটার জন্য আমাদের মাথাব্যথা ছিল না কারণ, বাইরে থেকে কাঁচামাল আমদানি করাই লাভজনক ছিল।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার এপিআই ওষুধ শিল্প পার্কে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।  

এর আগে এপিআই ওষুধ শিল্প পার্কে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) কার্যক্রমের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।  

নাজমুল হাসান বলেন, বাংলাদেশের বাজার অত বড় নয়। তাই বাইরে থেকে আমদানি করাই লাভজনক। বিশ্বে চায়না সবচেয়ে বড় এপিআই ম্যানুফেকচারার। তবে কিছুদিন আগে পরিবেশ রক্ষার ইস্যুতে আড়াই হাজারের মত এপিআই বন্ধ হয়ে গেছে। সেজন্য কাঁচামালের দাম অনেক বেড়ে গেছে। যেটা দাম ছিল ১২০/১২৫ ডলার সেটা ৩০০ ডলার হয়ে গেছে। চাহিদা বেশি থাকলে দামতো বাড়বেই। কাজেই আমাদের এপিআই যত দ্রুত উৎপাদনে যাবে তত আমাদের জন্য ভাল।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ কারখানাগুলো আগে সস্তায় ওষুধ তৈরি করতে পারত। কিন্তু, এখন তা আর থাকবে না। প্রত্যেক জিনিসের দাম যখন বাড়ে তখন ওষুধের দাম আর কত জোর করে কমিয়ে রাখতে পারব? অন্যদিকে ডলারের দামও বেড়ে গেছে। সেজন্য কাঁচামালের দামও বেড়েছে। আমরা পেটেন্টেড ওষুধ বানাতে পারছি না। ২০৩২ সাল পর্যন্ত আমাদের পেটেন্ট মুক্ত থাকার কথা। কিন্তু, তিন বছরের এক্সটেনশনসহ ২০২৭ সাল পর্যন্ত আমরা পেটেন্টমুক্ত থাকতে পারব। তবে, এক্সটেনশন নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে ২০২৪ সালেই আমাদের পেটেন্টেড ওষুধ বানাতে হবে।  

২৭টি কোম্পানি এখানে ওষুধের কাঁচামাল তৈরি করবে। আমি বলব এখানে প্যারাসিটামল তৈরি করে লাভ নেই। যে সব ওষুধের দাম বেশি সে সব ওষুধ তৈরি করার অনুরোধ করব।

পাপন বলেন, যারা (যে সব দেশ) এপিআই করে তারা নিজেরাই ৬০ ভাগ কনজিউম করে। আর আমরা যদি রপ্তানি করতে চাই, করতে পারি। এপিআই পার্ক হওয়ার পর ওষুধ রপ্তানি না করার কোনো কারণ দেখি না। তবে কিছু সমস্যা আছে। কারণ, আমাদের এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগ আছে কিন্তু এখনো ওষুধের কাঁচামাল তৈরির কোনো স্কুল নেই।

তিনি বলেন, এপিআই পার্ক তৈরি করতে সরকার ও বিসিক সাপোর্ট দিয়েছে। সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আমরা সেন্ট্রাল ইটিপি করেছি। কোনো কোম্পানি যদি ইটিপি না করে, সেজন্য আমরা এটা সেন্ট্রালি করেছি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. মোসতাক হাসান, ভারতের রামকি গ্রুপের চেয়ারম্যান অযোধ্যা রামি রেড্ডি।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৯ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।