ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

শীতের আগমনে লেপ-তোষকের দোকানে চলছে ব্যস্ততা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৯
শীতের আগমনে লেপ-তোষকের দোকানে চলছে ব্যস্ততা

বগুড়া: কাগজে কলমে এখন চলছে অগ্রহায়ণ। অগ্রহায়ণকে বিদায় দিয়ে আগমন ঘটবে শীতের। কিন্তু গ্রামে-মহল্লায় এরইমধ্যে হালকা ঠাণ্ডা পরতে শুরু করেছে। পাশাপাশি কুয়াশা মোড়ানো দাপটও দেখা যাচ্ছে। ঠাণ্ডা তাড়াতে ঘরে ঘরে নামতে শুরু করেছে ভারী পোশাক ও লেপ-তোষক। রীতিমতো লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে বেড়ে গেছে কারিগরদের ব্যস্ততা। এই ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে বগুড়া শহর ও শহরতলীর আশপাশের এলাকার লেপ-তোষক তৈরির দোকানগুলোতেও।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকার লেপ-তোষকের দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, কারিগররা তুলোর স্তুপ করে তার ওপর ধনুক বা মোটা লাঠি দিয়ে আঘাত করে চলেছেন। এতে তুলোধুনো হচ্ছে স্তুপটা।

পুরোপুরি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সেই তুলো ভরা হবে রংবেরংয়ের কাপড়ের তৈরি করা লেপ-তোষকের কভারে। পরে শুরু হয় সুই-সুতার কাজ। কভার ও ভেতরে ঢোকানো তুলা ভেদ করে খস খস শব্দ তুলে চলতে থাকে সূঁচ। সুই-সুতোর গাঁথুনিতে বাধা পড়ে যায় সেই কভার-তুলো। আর এতেই তৈরি হয়ে যায় একেকটি আকর্ষণীয় লেপ-তোষক।

বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথার উত্তরে নিকটতম এলাকা ঝাউতলায় রেললাইন ঘেঁষে সারিবদ্ধভাবে বেশ কয়েকটি লেপ-তোষকের দোকান গড়ে তোলা হয়েছে। দোকান রয়েছে শহরের কলোনি এলাকাগুলোতেও। এসব দোকানের মালিক ও কারিগররা অর্ডার অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরিতে খুব ব্যস্ত। পাশাপাশি পুরনো লেপ-তোষক মেরামত করতে হচ্ছে তাদের। সারাবছরের ব্যবসা শীতের এ কয়েক মাসে পুষিয়ে নিতে যেন মরিয়া তারা।

লেপ-তোষকের দোকানে কাজ করছেন একজন কারিগর।  ছবি: বাংলানিউজ

শহরতলীর ফুলতলা এলাকার মো. ইসমাইল হোসেন সাচ্চু, মো. জোব্বার হোসেন, আল-আমিনসহ একাধিক দোকানিরা বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবছর শীতের শুরুতেই ক্রেতারা লেপ-তোষকের দোকানগুলোয় আসতে থাকেন। ঠাণ্ডার মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়তে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটছে না।

তারা আরও জানান, সারাবছর তেমন একটা ব্যবসার লাভ হয় না। পুরো বছরের ব্যবসা শীতের এই তিন থেকে চার মাসে করতে হয়। তবে, এজন্য তাদের ব্যাপক শ্রম দিতে হয়। দিন ছোট হওয়ায় কাজ করতে করতে রাত হয়ে যায়। এমন কী খাওয়াও সময় থাকে না।

বর্তমানে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ায় ব্যবসায় লাভ কমে গেছে বলেও জানান ওই দোকানিরা।

তারা জানান, আগের তুলনায় ব্যবসায় প্রতিযোগিতা অনেক বেড়েছে। তাই সামান্য লাভেই ক্রেতাসাধারণের কাজ করে দিতে হচ্ছে।

বানানো লেপ-তোষক।  ছবি: বাংলানিউজ

দোকান মালিক সাচ্চু বাংলানিউজকে জানান, লেপ-তোষক বানাতে গার্মেন্টেসের ঝুট ও কার্পাস তুলো ব্যবহার করতে হয়। একটি সিঙ্গেল লেপ বানাতে ৬০০-৮০০ টাকা, সেমি-ডাবল লেপ ৭০০-১০০০ টাকা এবং ডাবল লেপ তৈরিতে ৮০০-২০০০ টাকা বিক্রি হয়। এরমধ্যে রয়েছে সুতো, কাপড় ও মজুরি ব্যয়। তবে, তোষক বানানোর ক্ষেত্রে দাম বেশি পড়ে। তুলার মান, পরিমাণ, নারিকেলের ছোবলা ও কাপড়ের ওপর নির্ভর করে একেকটি তোষক তৈরির ব্যয়।

গড়ে প্রতিদিন ৩/৫টি করে লেপ তৈরি হয় তার দোকানে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৯
কেইউএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।