ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

রায়ের পরও আসামিদের আস্ফালন, মাথায় আইএস'র টুপি

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
রায়ের পরও আসামিদের আস্ফালন, মাথায় আইএস'র টুপি

ঢাকা: হলি আর্টিজান মামলার রায়ে আট আসামির মধ্যে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার পর সাড়ে ১২টার দিকে এজলাসকক্ষ থেকে আসামিদের একে একে আদালত চত্বরে প্রিজনভ্যানে নিয়ে আসেন পুলিশ সদস্যরা। এসময় প্রত্যেকে ছিলেন স্বাভাবিক, হাস্যোজ্জ্বল। তবে চোখে-মুখে ছিল আস্ফালন।

এসময় আসামিরা চিৎকার-চেঁচামেচি করে রায় মানি না, মানি না বলতে থাকে। প্রথমে বড় মিজানকে প্রিজনভ্যানে তোলা হয়।

এসময় তাকে বেশ হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায় এবং আল্লাহু আকবর বলতে বলতে প্রিজনভ্যানে ওঠেন তিনি।

প্রিজনভ্যানে ওঠার পরেও আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে এ রায় না মানার কথা বলতে থাকেন তারা। এদের একজন আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ মাথায় আইএস'র কালো পতাকা বেঁধে আল্লাহু আকবর বলে চিৎকার করতে দেখা যায়। তিনি লিফটে ওঠার সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সামনেই আইএসের প্রতীক চিহ্নিত কালো টুপি পরেন। এজলাসেও তার মাথায় ছিল এ টুপি।

আসামি হাদিসুর রহমান সাগর প্রিজনভ্যান থেকে বলতে থাকেন, আমরা কিছু করিনি। আমাদের কেন ফাঁসি দেওয়া হলো?

রাশেদ বলেন, আমরা ফাঁসি ভয় পাই না। আমরা খেলাফত যোদ্ধা।

তারা উত্তেজিত হয়ে নানা ধরনের বক্তব্য দিতে থাকেন। সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অকথ্য কথা বলতে থাকেন। সবাই ছিলেন হাস্যোজ্জ্বল। ফাঁসির আদেশ শোনার পরও কারও মধ্যে কোনোরকম ভীতি লক্ষ্য করা যায়নি।
প্রিজন ভ্যানে আঙুল উঁচিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরামৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের এমন আস্ফালনে আদালত প্রাঙ্গণে অনেকেই বেশ অবাক হন। তাদের এই চিৎকার চেঁচামেচির মধ্যেই আসামিদের বহনকারী প্রিজনভ্যান আদালত চত্বর ছেড়ে যায়।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (আত্মঘাতী) সদস্যরা। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি।

ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

একই বছরের ২৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান।

এক বছরের বিচারকালে মামলার মোট ২১১ জন সাক্ষীর ১১৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন এবং রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে গত ১৭ নভেম্বর এ মামলার বিচারকাজ শেষ হয়। ওইদিনই আদালত রায় ঘোষণার জন্য ২৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
এজেডএস/পিএম/কেআই/টিএম/এসএইচএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।