ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নওগাঁয় ইটভাটায় ব্যবহার হচ্ছে কাঠ, অনুমোদন নেই সিংহভাগের 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৯
নওগাঁয় ইটভাটায় ব্যবহার হচ্ছে কাঠ, অনুমোদন নেই সিংহভাগের  ইটভাটার জন্য কাট ফাটানো হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

নওগাঁ: নওগাঁ জেলাজুড়ে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলোর সিংহভাগেরই পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসনের অনুমোদন নেই। আবার বেশিরভাগ ভাটাগুলোতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ।

ঝড়-বৃষ্টির বৈরীতা নেই তাই শীত মৌসুমের এ সময়টা যেন উৎসবে পরিণত হয় ভাটা কারিগরদের। কৃষি প্রধান এ জেলার শহর আর গ্রামে প্রতিদিনই গড়ে উঠছে নতুন নতুন ইটভাটা।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী নওগাঁয় ১৭০টি ইটভাটার মধ্যে অনুমোদন আছে মাত্র ৩০টির। যদিও এর বাইরে নামে-বেনামে আরও বেশ কয়েকটি ইটভাটা গড়ে উঠেছে।

অপরিকল্পিতভাবে দিন দিন বাড়ছে ইটভাটার সংখ্যা। এসব ভাটাগুলোর প্রভাবে আশপাশের জমিতে উৎপাদিত ফসলের কাঙ্ক্ষিত ফলনও পাচ্ছে না কৃষক। ভাটাগুলোতে বালু, মাটি আর ইট বহনকারী ট্রাক্টরের যাতায়াতের কারণে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হওয়াসহ প্রতিনিয়তই বেশ কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ভাটার আশপাশের বসবাসকারী মানুষেরা।  

ইটভাটার নীতিমালা অনুযায়ী কৃষি জমিতে ভাটা তৈরি বা কৃষি জমির মাটির ব্যবহার না করা, জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার না করা। পাশাপাশি কোনোভাবেই গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে ইট বা কাঁচামাল বহন করতে পারবে না ভাটাগুলো। কিন্তু আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হরহামেশায় এসব ব্যবহার হচ্ছে বেশিরভাগ ভাটায়।  

ইটভাটা।  ছবি: বাংলানিউজজেলার মান্দা উপজেলার কৃষক হাকিম প্রামাণিক বাংলানিউজকে জানান, ইটভাটার কারণে জমিতে ফসল ভাল হচ্ছে না। আবার ইটভাটার ধোয়ার জন্য গাছের ফলও ভাল ধরে না। ইট বহনে ট্রাক্টর ব্যবহার করা হচ্ছে বিধায় সড়কগুলোর অবস্থাও বেহাল হয়ে পড়ছে। এসব রাস্তা দিয়ে এখন হেঁটেও চলাফেরা করা মুশকিল।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নওগাঁ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ইটভাটা তৈরিতে যে নীতিমালা দেওয়া হয়েছে সেগুলো মেনে ইটভাটাগুলো তৈরি হয় না। ফলে আমাদের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইট আমাদের অতি প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। তবে পরিবেশের ক্ষতি করে ইট তৈরি করা যাবে না। ভাটাগুলোকে সঠিকভাবে পরিচালিত না করতে পারলে ভবিষ্যতে পরিবেশ মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়বে।

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ বাংলানিউজকে জানান, জেলায় যে সব অবৈধ ইটভাটা রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত অব্যাহত আছে। কোনো ইটভাটা যাতে অবৈধভাবে না চলে সে বিষয়ে আমাদের নজরদারি আছে।

এদিকে অনেক চেষ্টা করেও এ বিষয়ে ইটভাটার মালিকের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।