ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে ‘অচল’ বিভিন্ন জেলা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে ‘অচল’ বিভিন্ন জেলা

ঢাকা: নতুন ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ সংশোধন না করার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় দ্বিতীয় দিনের মতো বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকরা। শ্রমিকদের আকস্মিক এ ধর্মঘটে যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। 

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকে খুলনা, মেহেরপুর, নড়াইল, নওগাঁ, বরিশাল, মাদারীপুর, সাতক্ষীরা ও ঝালকাঠিতে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর আগে সোমবার (১৮ নভেম্বর) থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়।

বাংলানিউজের সিনিয়র, স্টাফ ও ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্টদের পাঠানো খবর:

খুলনা থেকে সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মাহবুবুর রহমান মুন্না জানিয়েছেন, সকালে খুলনার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। এ সুযোগে মাহেন্দ্র, মিনি পিকআপ, মাইক্রোবাসসহ ছোট যানবাহনগুলোতে কয়েকগুণ ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে।

আন্দোলনরত চালকরা বলছেন, নতুন আইনে দুর্ঘটনার জন্য চালকদেরই দায় নিতে হচ্ছে। পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে। চালকরা কাউকে ইচ্ছা করে হত্যা করে না। তারপরও তাদের শাস্তি হবে। এ আইন মেনে নেওয়া যায় না। যার প্রতিবাদে এ কর্মবিরতি।

এদিকে, মঙ্গলবার সকালে খুলনা মহানগরের সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল ও রয়্যালের মোড়ে ধর্মঘটের প্রথম দিনের মতো বাসগুলো সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যাত্রীরা এসে বাস চলাচল সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। কিন্তু বাস চলাচল কখন শুরু হবে, কেউ তা বলতে পারছেন না।

মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি জানান, তার স্বজনরা ওমরা হজের জন্য ঢাকায় যাবেন। যে কারণে তিনি রয়্যালের মোড় বাস কাউন্টারে এসে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু বাস ছাড়ছে না। কীভাবে যাবেন তা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত।

খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বেবী বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে শ্রমিকরা দ্বিতীয় দিনের মতো বাস চালাচ্ছেন না। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন। আইন সংশোধন না করা পর্যন্ত শ্রমিকরা ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে কিছু গাড়ি খুলনা থেকে ছেড়েছে আবার খুলনায় ঢুকেছে এমন প্রশ্নের উত্তরে বেবী বলেন, গতকাল ৯০ ভাগ বাস চলাচল বন্ধ ছিল। কিন্তু আজকে শতভাগ বাস চলাচল বন্ধ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খুলনার এক পরিবহন মালিক বলেন, শ্রমিকদের এ ধর্মঘটের সঙ্গে আমরা শতভাগ একাত্মতা প্রকাশ করেছি। কেননা কোনো চালক ইচ্ছে করে দুর্ঘটনা ঘটায় না। নতুন সড়ক পরিবহন আইনে দুর্ঘটনা ঘটলে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে। এত জরিমানা দেওয়ার মতো টাকা কোনো চালকের নেই। পাঁচ থেকে সাত দিন কাজ না থাকলে যে চালকদের ঘরে চুলা জ্বলে না, তাদের কাছে এত টাকা জরিমানা হাস্যকর।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, চালকের দায়ে ট্রেন দুর্ঘটনা হলেও সেখানে সরকার এক লাখ টাকা মৃত ব্যক্তির পরিবারকে দেয়। আর পরিবহন দুর্ঘটনা হলে একজন চালককে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ধরা হয়েছে। যা কোনোভাবে ঠিক নয়।

এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দুই পক্ষের আলোচনা শেষে মধ্যস্থতার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা চলমান পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন।

মেহেরপুর থেকে ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট জুলফিকার আলী কানন জানিয়েছেন, ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলার সব মানুষ। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও চাকরিজীবীরা বেশি। তবে সড়কে আলগামন, নসিমন, করিমন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ ছোট যানবাহন চলছে।

মেহেরপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইনে বড় ধরনের জেল ও জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। আর তাই আইন সংশোধনের দাবিতে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া, মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কসহ জেলার সবরুটে বাস চলাচল বন্ধ রখেছেন শ্রমিকরা।

নড়াইল থেকে ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ইমরান হোসেন জানিয়েছেন, নড়াইল-যশোর, নড়াইল-লোহাগড়াসহ অভ্যন্তরীণ পাঁচটি রুটে কোনো ঘোষণা ছাড়াই শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ দিয়েছেন। পূর্বঘোষণা ছাড়া বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে।  

এদিকে, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা করে গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীদের অতিরিক্ত টাকাসহ সময় ব্যয় হচ্ছে।

গত ১৭ নভেম্বর নড়াইল প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর জেল-জরিমানা সংশোধনসহ ১১ দফা দাবিতে নড়াইলে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।  

মানববন্ধনে বক্তারা প্রতিটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০৪/খ ধারায় মামলা রুজু করা, মোটরযান ও চালকেদের ওপর অধিক অর্থদণ্ড ও জেল-জরিমানা সংশোধনের দাবি ছাড়াও ১১ দফা দাবি জানান। সেদিন রাত থেকে কোনো ঘোষণা ছাড়াই নড়াইল-যশোর, নড়াইল-লোহাগড়া, নড়াইল-মাগুরা, নড়াইল-নওয়াপাড়া ও নড়াইল-কালিয়া সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা।

নড়াইল জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহম্মেদ খান  বাংলানিউজকে বলেন, বাস বন্ধ রাখার ব্যাপারে সংগঠন থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে আলাপ না করে বাস চালক-শ্রমিকরা নতুন সড়ক পরিবহন আইনের ভয়ে স্বেচ্ছায় অভ্যন্তরীণ পাঁচটি রুটে বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন।

নওগাঁ থেকে ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট তৌহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত নওগাঁর অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোনো বাস চলাচল করেনি। ফলে নওগাঁর সঙ্গে বগুড়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

পরিবহন ধর্মঘটের কারণে যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। এ সুযোগে ছোট যানবাহনগুলোতে কয়েকগুণ ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে। পাশাপাশি বেশি ভাড়া দিয়েও সময়মতো পৌঁছাতে পারছে না গন্তব্যে।

নওগাঁর বালুডাঙ্গা বাস টার্মিনালে কথা হয় এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, রাজশাহী যাওয়ার জন্য বাসের অপেক্ষায় আছি। আগে জানতাম না যে, বাস ধর্মঘট চলছে। এখানে এসে দেখি বাস চলাচল বন্ধ। টার্মিনালে প্রায় তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু কোনো যানবাহন পাচ্ছি না। এ দুর্ভোগ শুধু আমার একার না, সারা জেলার মানুষের।

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক বাংলানিউজকে জানান, বাস মালিক পক্ষ বা শ্রমিক নেতাদের নির্দেশনায় নয়, শ্রমিকরা নিজেরাই বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। নতুন সড়ক পরিবহন আইন মেনে শ্রমিকরা বাস চালাতে পারবে না বলেই এ ধর্মঘট।

বরিশাল থেকে স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মুশফিক সৌরভ জানিয়েছেন, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ব‌রিশাল থেকে জেলার বি‌ভিন্ন এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। এতে তাদের বাড়তি ভাড়া দিয়ে অটো‌রিকশা অথবা মোটরসাইকেলে করে যাতায়াত করতে হচ্ছে।  

এ‌দিকে শ্র‌মিকরা বলছেন, তাদের পক্ষে নতুন আইনের জ‌রিমানা দেওয়া সম্ভব না। তাই তারা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।

বাসচালক বশির বাংলানিউজকে বলেন, নতুন সড়ক আইনে ‌যে হারে জেল-জ‌রিমানা বাড়ানোর হয়েছে। তাতে যানবাহন চালনা বন্ধ করা ছাড়া উপায় নেই। দুর্ঘটনায় পাঁচ লাখ টাকা জ‌রিমানা করা হলে সে টাকা দেওয়ার সাধ্য নেই। আর সাধ্য থাকলে অন্য পেশায় যেতাম, বাস চালাতাম না।

‌কোনো চালকই দুর্ঘটনা হোক, এটা চান না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ব‌রিশাল জেলা সড়ক প‌রিবহন শ্রমিক ইউ‌নিয়‌নের সাধারণ সম্পাদক ফ‌রিদ হোসেন সরদার বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ২২ নভেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে মি‌টিং আছে। কিন্তু তার আগেই শ্র‌মিকরা অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।

ঝালকাঠি থেকে ওই স্টাফ করেসপন্ডেন্ট জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে ঝালকাঠি-বরিশাল, ঝালকাঠি-ঢাকাসহ অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার ৯টি রুটে সবধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।  

কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ সবরুটে বাস বন্ধ করে দেন। এতে শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীসহ যাত্রীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।  

ঝালকাঠি থেকে বরিশাল, বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে খুলনা, বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে পিরোজপুর, বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে ভাণ্ডারিয়া, বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে মঠবাড়িয়া, বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে পাথরঘাটা, ঝালকাঠি-আমুয়া, বরিশাল-ঝালকাঠি ও ঝালকাঠি-ঢাকার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাহাদুর চৌধুরী জানান, সড়ক পরিবহন আইন শ্রমিকদের স্বাভাবিক জীবনের বিপরীতে। তাই আইন সংশোধনের দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। এর অংশ হিসেবেই সবরুটে শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।

ঝালকাঠি বাস ও মিনি বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ জানান, শ্রমিকরা নতুন আইনের প্রতিবাদে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। তারা বেশি শিক্ষিত নয়, আইন সম্পর্কে পুরোপুরি জ্ঞাত নয়। বাস বন্ধের সঙ্গে মালিক সমিতির কোনো যোগসাজস নেই। দেখা যাক, তারা কতোদিন এ আন্দোলন চালাতে পারেন। কারণ তাদের ভরণপোষণ তো হয় গাড়ি চলাচল থাকলে।

ঝালকাঠি-মোল্লারহাট (নলছিটি), ঝালকাঠি-নবগ্রাম এবং ঝালকাঠি-কাউখালী যাত্রী সংকটের কারণে দীর্ঘদিন (কয়েক বছর) বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ​

মাদারীপুর থেকে ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ইমতিয়াজ আহমেদ জানিয়েছেন, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার ভোর থেকে মাদারীপুর থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

শ্রমিকদের দাবি, নতুন আইনটি সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়ন করতে হবে। এটা না করা পর্যন্ত জেলায় সব বাস চলাচল বন্ধ রাখা হবে।

চালকরা বাংলানিউজকে জানান, নতুন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে চালকদের মৃত্যুদণ্ড ও আহত হলে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। যেকোনো দুর্ঘটনা কোনো চালকের ইচ্ছাকৃত নয়। তাছাড়া এত পরিমাণ টাকা জরিমানা দেওয়ার সামর্থও চালকদের নেই। আর তাই নতুন আইনটি পরিবর্তনের দাবি তাদের।

এদিকে, বাস চলাচল বন্ধ থাকার সুযোগে থ্রি-হুইলার যানবাহনগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।  

সাতক্ষীরা থেকে ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট শেখ তানজির আহমেদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরীণ সব রুটের বাস চলাচলও।

তবে যাত্রীবাহী বাস বন্ধ থাকলেও দুই একটি বিআরটিসি বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন দূর-দূরান্তের যাত্রীরা। ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, ভ্যানসহ তিন চাকার বিভিন্ন যানবাহনে যাতায়াত করছেন তারা।  

বাসচালক মিলন সরদার বাংলানিউজকে বলেন, নতুন সড়ক আইন সংশোধন না হলে আমরা বাস চালাবো না। আইনে চালকদের এক তরফাভাবে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। যে দণ্ড ও পরিমাণ জরিমানার বিধান করা হয়েছে, সেগুলো চালকদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না। যেকোনো দুর্ঘটনাই কারও ইচ্ছাকৃত নয়।

সাতক্ষীরা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান বাংলানিউজকে  বলেন, নতুন সড়ক আইন সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত কোনো শ্রমিক বাস চালাতে রাজি না। তবে জেলার অভ্যন্তরীণ সব রুটে বাস চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। সাতক্ষীরা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ছাইফুল করিম সাবু বাংলানিউজকে বলেন, কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এক তরফাভাবে বাসচালক ও শ্রমিকদের কঠোর শাস্তির বিধান করা হয়েছে নতুন সড়ক আইনে। দুর্ঘটনা কারও ইচ্ছাকৃত ও একা হয় না, তবুও সব শাস্তি বাসচালক ও শ্রমিকদের। আর তাই নতুন সড়ক আইন পরিবর্তন করার দাবিতে পরিবহন ধর্মঘট চলছে।

** বরিশা‌লের ৮ রু‌টের বাস চলাচল বন্ধ
** নড়াইলে বাস ধর্মঘট ২য় দিনে, দুর্ভোগ
** নওগাঁর সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ
** মেহেরপুরে চলছে দ্বিতীয় দিনের মতো বাস ধর্মঘট, ভোগান্তি
** খুলনায় পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও দুর্ভোগে যাত্রীরা
** বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের পণ্য পরিবহন ধর্মঘটের ডাক
** মাদারীপুরে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ
** সাতক্ষীরায় ২য় দিনের মতো চলছে পরিবহন ধর্মঘট
** খুলনার অভ্যন্তরীণ রুটে বুধবার থেকে চলবে বাস
** ঝালকাঠি থেকে ৯ রুটে বাস চলাচল বন্ধ

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad