ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘নার্স ভিসার কথা বলে সৌদি পাঠানো হয় সুমিকে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
‘নার্স ভিসার কথা বলে সৌদি পাঠানো হয় সুমিকে’ সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলছেন সুমির স্বামী নূরুল ইসলাম। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: নার্স ভিসার কথা বলে সুমিকে সৌদি আরবে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন তার স্বামী নূরুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, দালাল আক্তার মেডিক্যাল ভিসায় সুমিকে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি পাঠায়। পরে সুমি গিয়ে দেখেন সেখানে গৃহকর্মীর কাজ।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৮টায় সুমির অপেক্ষায় থাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে অঅলাপকালে তিনি একথা জানান।  

এয়ার এরাবিয়ার জি৯-৫১৭ নম্বর ফ্লাইটে দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে সেই নারী গৃহকর্মী সুমি। একই সঙ্গে সৌদি থেকে দেশে ফেরার কথা রয়েছে  নির্যাতিত আরও ৯১ নারী গৃহকর্মীর।  

নূরুল ইসলাম বলেন, ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় পল্টনের আকতার মিয়ার মাধ্যমে তিন মাস আগে সৌদি যান সুমি। যাওয়ার পর থেকেই নির্যাতন শুরু করে কফিল।  

এনিয়ে সম্প্রতি বাংলানিউজে সংবাদ প্রকাশের পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সুমিকে দেশে ফেরাতে উদ্যােগ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে ফেরেন সুমি আক্তার।  

সুমির স্বামী নূরুল ইসলাম বলেন, সুমি দেশে ফেরায় খুব আনন্দ লাগছে, তেমনি কষ্টও লাগছে। কারণ ভাগ্য বদলের আশায় সৌদি গিয়েছিল সুমি, এখন খালি হাতে ফিরছে। সবকিছুর পর সুমি দেশে ফেরায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

সুমি আক্তার পঞ্চগড় জেলার বোদা সদর থানার রফিকুল ইসলামের মেয়ে। দুই বছর আগে আশুলিয়ার চারাবাগের নুরুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

সম্প্রতি ফেসবুকে কান্নাজড়িত কন্ঠে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া পাশবিক নির্যাতনের কথা বলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান সুমি। পরবর্তীতে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।

ভিডিওটিতে সুমি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমি আমার সন্তান ও পরিবারের কাছে ফিরতে চাই। আমাকে আমার পরিবারের কাছে নিয়ে যান। এখানে আমার ওপর অনেক নির্যাতন হয়। আর কিছুদিন থাকলে হয়তো মরেই যাবো। তাই প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে অনুরোধ আপনারা আমাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যান। ’

বাংলানিউজে এমন খবর প্রকাশের পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সুমিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রতিমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) সিরাজুল ইসলামকে নির্দেশ দেন।

এরপর সোমবার (৪ নভেম্বর) রাতে সুমিকে সৌদি আরবের জেদ্দার দক্ষিণ-দক্ষিণে নাজরান এলাকার কর্মস্থল থেকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পুলিশের তত্ত্বাবধানে নাজরান শহরের একটি সেইফ হোমে ছিলেন তিনি।

পরদিন মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল থেকে দেওয়া এক চিঠিতে সুমি আক্তারকে দেশে ফেরাতে ট্রাভেল এজেন্সি ‘রূপসী বাংলা ওভারসিজ’কে ২২ হাজার রিয়াল (প্রায় পাঁচ লাখ টাকা) ও প্লেনের টিকিট দেওয়ার প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে নাজরান শহরের শ্রম আদালতে সুমিকে দেশে ফেরার ‘ফাইনাল এক্সিট’ দেয়। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
টিএম/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।