ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফুটপাতের পিঠাপুলি ডেকে আনছে শীত

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
ফুটপাতের পিঠাপুলি ডেকে আনছে শীত ফুটপাতে পিঠাপুলির পসরা। ছবি: বাংলানিউজ

লালমনিরহাট: কার্তিকের বিদায় লগ্নে সন্ধ্যা নামতেই উত্তরাঞ্চলের প্রকৃতিতে উঁকি দিচ্ছে শীত। শীতের সঙ্গে লালমনিরহাটের বিভিন্ন ফুটপাতে হরেক রকমের পিঠাপুলি নিয়ে বসেছেন মৌসুমি পিঠাবিক্রেতারা।

বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্রে পৌষ ও মাঘ মাস শীতকাল হলেও উত্তরাঞ্চলের প্রকৃতিতে শীতের আগমন ঘটে দু’মাস আগেই। এবারও এর ব্যর্তয় ঘটেনি।

কার্তিক মাসের শুরুতেই হিমালয়ের পাদদেশের জেলা লালমনিরহাটে শীতের আগমন ঘটেছে। দিনভর গরম অনুভব হলেও সন্ধ্যার সঙ্গে প্রকৃতিতে নেমে আসে শীতের বুড়ি। দিনের বেলা বাসাবাড়িতে বৈদ্যুতিক পাখা ঘুরলেও রাতে লেপ-কম্বলে জড়িয়ে ঘুমাতে হচ্ছে ।

শীতের সন্ধ্যায় পিঠাপুলি বাঙালিদের একটি প্রিয় মুখরোচক খাবার। তাই শীতের দিনে ফুটপাতের দোকানের চিত্রও পাল্টে যায়। ক্রেতাদের চাহিদাকে বিবেচনায় রেখে পিঠাবিক্রেতারাও খাবার মেনু পাল্টান। তাই শীতের সঙ্গে ফুটপাতে শোভা পাচ্ছে পিঠাপুলির দোকান। শীতের রাতে সব থেকে জনপ্রিয় ভাপা ও চিতই পিঠা। ফুটপাতে পিঠাপুলির পসরা।  ছবি: বাংলানিউজলালমনিরহাট শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড়, শহরে অলিগলি, বিভিন্ন হাট বাজার,  গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও জনসমাগম স্থানে বসেছে এমন পিঠাপুলির দোকান। মূলত ফুটপাতজুড়ে রয়েছে শীতের আগমন বার্তা। দুপুরে গড়িয়ে বিকেল হওয়ার আগেই পিঠাবিক্রেতারা সাজিয়ে ফেলেন দোকান। সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের সামনেই তৈরি করা গরম পিঠাপুলি পরিবেশন করা হচ্ছে। প্রায় প্রতিটি দোকানেই সন্ধ্যার পরে ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে যায়। এভাবে পিঠাপুলি বেচে সংসার চালাচ্ছেন ফুটপাতের মৌসুমি বিক্রেতারা।

লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কের স্বর্ণামতি ব্রিজের পশ্চিমপাড়ে এমন পিঠাপুলি নিয়ে বসেছেন শফিকুল ইসলাম।

তিনি জানান, চলতি সময়ে হাতে কাজ নেই। শীত এসেছে তাই সংসারের খরচ মিটাতে ব্রিজের পাশে পিঠার দোকান দিয়েছেন। দিনভর বাড়িতে চালের আটাসহ পিঠা তৈরির নানান সরঞ্জাম প্রস্তুত করে বিকেলে দোকান চালু করেন। সেখানে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী তাদের সামনেই গরম গরম ভাপা ও চিতই পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের পিঠা বিক্রি করেন। পিঠা ছাড়াও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সেদ্ধ ডিমও বিক্রি করেন তিনি। সন্ধ্যা থেকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়লেও মধ্যরাতের আগেই দোকান বন্ধ করেন তিনি। ফুটপাতে পিঠাপুলির পসরা।  ছবি: বাংলানিউজশফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেন। যা দিয়ে চলছে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ তার সংসার। তবে, শীত বিদায় নিলে তিনি আবারও অন্য পেশায় চলে যাবেন বলে যোগ করেন তিনি।

কালীগঞ্জের কাকিনা রংপুর সড়কের শেখ হাসিনা সেতুপাড়ে পিঠাবিক্রেতা আমিনুর জানান, আগে দিনমজুর করে সংসার চালাতেন। এখন হাতে কাজ নেই। কর্মহীন হয়ে সংসার চালানো বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ে। আর শীতের ঠাণ্ডায় শরীর গরম করতে পথিকরা গরম গরম পিঠা খেতে পছন্দ করেন। শীত এসেছে তাই সেতুপাড়ে পিঠা বিক্রি করছেন তিনি। স্ত্রী বাড়িতে আটাসহ পিঠা তৈরির সরঞ্জাম প্রস্তুত করে দেন। তিনি ক্রেতাদের সামনে গরম গরম পিঠা তৈরি করে পরিবেশন করেন।

সেতুপাড়ের পথিক আতিক, সন্তোষ রায় ও ফারুক মিয়া বাংলানিউজকে জানান, সন্ধ্যা নামলেই শীত অনুভূত হয়। ঠাণ্ডায় গরম গরম পিঠা খেতে বেশ মজাদার। তাই সন্ধ্যা হলেই পিঠা খেতে সেতুপাড়ে আসেন তারা। অনেকেই পরিবারসহ পিঠা খেতে সেতুপাড়ে ভিড় করেন বলেও জানান তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।