ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে ফাহাদ হত্যার বিচার: আইনমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে ফাহাদ হত্যার বিচার: আইনমন্ত্রী

ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্র দেওয়ার পর বুধবার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা জানান আইনমন্ত্রী।

আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ২৫ জনকে আসামি করে এদিন গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

গত ৬ অক্টোবর দিনগত রা‌তে ফাহাদকে নির্দয়ভাবে পেটান বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। প‌রে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চি‌কিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা ক‌রে।

এই ঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ফাহাদ হত্যা মামলায় এর ম‌ধ্যে চার্জ‌শিটভুক্ত ১৬ জনসহ মোট ২১ জন‌কে গ্রেফতার ক‌রে‌ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বা‌হিনী।

আরও পড়ুন>>>২৫ জনকে আসামি করে ফাহাদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র

আইনমন্ত্রী বলেন, যে কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হোক না কেন এটা হত্যাকাণ্ড। এরকম হত্যাকাণ্ড ঘটানো উচিত নয়। সমাজ এটাকে মেনে নেবে না, আমরা এটাকে মেনে নেবো না। এটার উচিত বিচার হতে হবে, শুধু উচিত বিচার এ কারণে না যে একটা হত্যাকাণ্ড হয়ে গেছে। এটার মতো আর কোনোদিন যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।

আইনমন্ত্রী অনিসুল হক বলেন, নিশ্চয়ই ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা চাই। কিন্তু ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের বিচার তার পরিবারকে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আরো যেটা চাই, এই বিচারের মাধ্যমে অন্ততপক্ষে একটা বার্তা জনগণের কাছে যাক যে এরকম হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক, অপরাধীরা সাজা পাক।  

বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, যখন এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটে তখনই বলেছিলাম- তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র যখন আদালতে দাখিল করা হবে তখন থেকে দায়িত্ব হবে প্রসিকিউশন টিমের। তখন বলেছিলাম, আমি একটা প্রসিকিউশন টিম প্রস্তুত রাখবো। এই মামলাটি যখনই বিচারিক আদালতে পৌঁছে তখনই যেন তারা বিচার কাজ শুরু করতে পারে।

‘ঠিক সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমি প্রসিকিউশন টিম প্রস্তুত রেখেছি। অভিযোগপত্র চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে দাখিল করার পরে কিছু ফর্মালিটিজ আছে যেমন- যদি পলাতক আসামি থাকে তাহলে তাকে হাজির হওয়ার জন্য আদেশ দিতে হয়। যদি হাজির না হয় তাহলে পলাতক থাকা অবস্থায় বিচার করা যায় সেজন্য একটি গেজেট নোটিফিকেশন করতে হয়। এসব ফর্মালেটিজ যত শিগগিরই সম্ভব আমরা সম্পন্ন করবো এবং সোমবারের মধ্যে প্রসিকিউশন টিমকে বলবো দায়িত্ব নিতে। তারা যেন এই ফর্মালিটিগুলো শিগগিরই সম্পন্ন করে।

আইনমন্ত্রী বলেন, আইনে কিন্তু বলা আছে একটা সময় দিতে হবে, সেই সময়ের ওপর দিয়ে কিন্তু আমরা যেতে পারবো না। সেই বাধ্যবাধকতা আছে। সেই আইনি বাধ্যবাধকতা মেনেই যত দ্রুত করা যায় সেটা করা হবে।

তিনি বলেন, ‘দ্রুত বিচার আইন, ২০০০’ এটাকে বিচার করার জন্য আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আবেদন আসতে হয়। সেটা যখন আইন মন্ত্রণালয়ে আসবে তখন আমরা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলার বিচার করার জন্য আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবো।

দ্রুতবিচারের সময়সীমা নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, দ্রুতবিচারে যদি বিচার করা হয় তাহলে প্রথম সময়সীমা হচ্ছে ৯০ দিন। তাপরের সময় ৩০ দিন। মোট ১২০ দিনের মধ্যে যদি বিচার সম্পন্ন করতে না পারে তাহলে তৃতীয়বারের জন্য ১৫ দিনের সময় আছে। এই ১৩৫ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করতে হবে।   

‘আমার দায়িত্ব হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও জনগণের চাহিদা অনুযায়ী এই হত্যাকাণ্ডের বিচার যথা শিগগির করা। আপনারা আগেও দেখেছেন যে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিচারও দ্রুত করা হয়েছে। সব আইনি বাধ্যবাধকতা শেষ করে আমরা ফাহাদ হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করবো। ’

পলাতকদের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আদালতের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি তারা আত্মসমর্পণ না করে তাহলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার করার জন্য প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে অর্থাৎ খবরের কাগজে দিতে হবে। খবরের কাগজে দেওয়ার পরেও তারা না আসলে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন যে পলাতক অবস্থায় বিচার করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।