ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্র গড়তে চাই: ডা. এনামুর রহমান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্র গড়তে চাই: ডা. এনামুর রহমান বক্তব্য রাখছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ত্রাণভিত্তিক কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ থাকতে চাই না। আমরা দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

ডা. এনামুর রহমান বলেন, আমরা চাই না, কোনো ধরনের দুর্যোগে দেশের মানুষের মৃত্যু ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হোক, যদিও হয়ে থাকে তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য সহযোগিতা করবো। আমরা দেশকে একটি দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

দুর্যোগ মোকাবিলা করে অনেকটাই আমরা দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্রের দিকে এগোচ্ছি। ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য আমরা জাপানের সঙ্গে যৌথভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মানিক মিয়া মিলনায়তনে উপকূল ফাউন্ডেশন ও এডুএইড আয়োজিত ‘ভয়াল ১২ নভেম্বর: টেকসই উপকূল ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

উপকূল অঞ্চলের কথা উল্লেখ করে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৭১০ কিলোমিটার আমাদের যে উপকূলীয় অঞ্চল আছে, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্ভাবনাময়। দুর্যোগে উপকূলবাসীদের রক্ষা করতে হবে।

উপকূলীয় অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি, আমাদের উপকূলীয় ৭১০ কিলোমিটার অঞ্চলকে আরসিসি ঢালাই করতে চাই, যেন টেকসই হয়। আমরা যদি এটা করতে পারি তাহলে শুধু ঘূর্ণিঝড় নয়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লে আমাদের উপকূলকে এই বাঁধ রক্ষা করবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিংয়ে আমরা টেকসই ঘরবাড়ি নির্মাণের বিষয়ে কথা বলেছি। বাংলাদেশের গৃহহীনদের জন্য আমরা দুর্যোগ সহনীয় ঘর তৈরি করে দিয়েছি। ১১ হাজার ছয়শ চারটি ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। ২৩ হাজার ঘর নির্মাণ কাজ চলছে। আগামীতে আরও তিন লাখ ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন তিন কোটি ঘর নির্মাণ করতে হবে। কারণ আমাদের তিন কোটি উপকূলের মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ ঘরে বসবাস করছে। উপকূলীয় নয়টি জেলায় চারতলা করে বিল্ডিং করা হবে। এই বিল্ডিংগুলোর নিচতলায় ফাঁকা থাকবে। দুর্যোগে এই বিল্ডিংগুলোই আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারের ঘূর্ণিঝড়ের বাংলাদেশের ইতিহাসে আমরা সর্বোচ্চ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পেরেছি। ২১ লাখ আট হাজার সাতশ ৫৮ জনকে পাঁচ হাজার সাতশ ৮৮ আশ্রয়কেন্দ্র নিতে সক্ষম হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পরিবর্তনশীল জলবায়ু মোকাবিলায় আমরা পদ্মাসেতুর অর্থায়নের মতোই নিজস্ব অর্থায়নেই করবো। সুতরাং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সেটা থেকে উপকূলবাসী রক্ষা পাবে ও নিরাপদে থাকবে।

এছাড়াও মন্ত্রী উপকূলবাসীর ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলায় ও জীবনমান উন্নয়নে একটি উপকূল বোর্ড গঠনের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

গোলটেবিল বৈঠকের শুরুতেই উপকূল ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক এম আমিরুল হক পারভেজ লিখিত বক্তব্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ১২ নভেম্বরকে ‘উপকূল দিবস’ হিসেবে ঘোষণাসহ আট দফা দাবি তুলে ধরেন।  

গোলটেবিল আলোচনায় আলোচনা করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের মহা-পরিচালক নিখিল রঞ্জন রায়, নির্বাচন কমিশনের সাবেক কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কিউ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাবির ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিস ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন, বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক নাসির আহমেদ প্রমুখ।

বক্তারা ১২ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা তুলে ধরে ভয়াল ১২ নভেম্বরকে উপকূল দিবস হিসেবে ঘোষণার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
আরকেআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।