ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হালে পানি পাচ্ছে না ভারতবিরোধী স্লোগান

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১০
হালে পানি পাচ্ছে না ভারতবিরোধী স্লোগান

ঢাকা: বাংলাদেশের রাজনীতিতে  ভারতবিরোধী স্লোগান এখন আর হালে পানি পাচ্ছে না। ঈদ-উল-ফিতরের পর ভারতবিরোধী ইস্যুতে ‌`দুর্বার আন্দোলন` গড়ে তোলার যে আওয়াজ বিএনপি শিবির থেকে দিচ্ছে তা মিইয়ে যেতেও সময় লাগবে না বলে মনে করছে সরকার পক্ষ।


সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ‘ডানপন্থী’ জোটের ভরাডুবি ভারতবিরোধী স্লোগানের অসারতাই প্রমাণ করেছে বলে মনে করেন রাজনীতি-বিশ্লেষকরা। আর ভারতের সঙ্গে  ক্ষমতাসীন মহাজোটের চুক্তি ও সমঝোতা-পরবর্তী গণপ্রতিক্রিয়াতেও ‘দেশ গেল ধর্ম গেল, দেশ নিল ভারত’ স্লোগানও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি বলে মনে করছেন তারা।

বিশ্লেষকদের মতে, কেবল রাজনৈতিক কারণে ভারত বিরোধিতার বাস্তবতা এখন আর নেই।   কথায় কথায় ভারতবিরোধিতাকে পুঁজি করে  আন্দোলনে নামার যৌক্তিকতাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

মুসলিম লীগের ‘দেশ গেলো ধর্ম গেলো, বাংলাদেশকে নিয়ে গেলো ভারত’ স্লোগান নিয়ে আন্দোলন করতে থাকলে বিএনপিকেও মুসলিম লীগের পরিণতি বরণ করতে হবে বলে মনে করছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘বিএনপি যে স্লোগান নিয়ে আন্দোলন করতে চায় তা পুরোনো। এটা জনগণ এখন শুনতে চায় না। মুসলিম লীগের স্লোগান নিয়ে আন্দোলন করলে বিএনপি’রও পরিণতি হবে মুসলিম লীগের মতো। ’

বিরোধীদলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা রাস্তায় কথা বলতে চায় ভালো কথা। আমরা গণতান্ত্রিক সমালোচনাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু ইস্যু ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো ও জনদুর্ভোগ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কোনো কর্মসূচি দিলে জনগণ অবশ্যই তা প্রতিহত করবে। যারা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে সহযোগিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেবে সরকার। সরকারের দায়িত্ব জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। ’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘সরকার জনগণের ওয়াদা পূরণে ব্যর্থ হলে বিরোধীদল সুযোগ নেবে। আর বিরোধীদলের আন্দোলনের সাফল্য নির্ভর করবে জনগণের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতার ওপর। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলনের হুমকি দেওয়া আর আন্দোলন সফল করা এক নয়। গণদাবির সঙ্গে কর্মসূচির মিল থাকলেই কেবল আন্দোলন সফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু কেবল রাজনৈতিক বিরোধিতার খাতিরে ভারতবিরোধী জুজুর বাস্তবতা এখন আর নেই। ’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন গণতান্ত্রিক অধিকার। তাই কোনো রাজনৈতিক দল কর্মসূচি দিতেই পারে। কিন্তু কেউ যদি আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে সরকার তা মোকাবেলা করবে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘কেউ যদি গণতান্ত্রিক চর্চার নামে দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করে সরকার তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। কারণ জনগণের জানমাল রক্ষা করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। ’

কথায় কথায় ভারতবিরোধী প্রপাগাণ্ডা আর এ জাতীয় ইস্যুতে আন্দোলনের যৌক্তিকতা জনমনে সংশয় জাগায় বলেও মনে করেন প্রগতিশীল রাজনীতিক ও রাজনীতি বোদ্ধারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।