ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’ বিপর্যস্ত খুলনার জনজীবন

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৯
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’ বিপর্যস্ত খুলনার জনজীবন ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’ বিপর্যস্ত খুলনার জনজীবন। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে খুলনার গ্রামের পর গ্রাম তছনছ হয়েছে। ভেঙেছে বসতঘর। এতে সাধারণ মানুষের জীবন প্রায় বিপন্ন। গৃহহীন মানুষের আর্তনাদে চারিদিকে করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তবে সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসনও।

 ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’ বিপর্যস্ত খুলনার জনজীবন।  ছবি: বাংলানিউজজানা যায়, ঝড়ে খুলনার কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছাসহ বিভিন্ন উপজেলায় হাজারো ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কাঁচা বসতঘর মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। রাস্তাঘাটে গাছপালা উপড়ে পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মাছের ঘের ভেসে গেছে। ধানক্ষেতসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছচাপা পড়ে দু’জন নিহত হয়েছেন। নিহত দু’জন হলেন- খুলনার দাকোপ উপজেলার দক্ষিণ দাকোপ গ্রামের সুভাষ মণ্ডলের স্ত্রী প্রমিলা মণ্ডল (৫২) ও খুলনার দীঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি গ্রামের আলমগীর হোসেন (৩৫)। বিভিন্ন এলাকায় হাজারো টিনের চালা গাছপালা, বাড়িঘর, প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে। উপজেলা পর্যায়ে বিদ্যুৎ অবস্থা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। মোবাইল ফোন নেট ওয়ার্ক রয়েছে নানা সমস্যায়। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’ বিপর্যস্ত খুলনার জনজীবন।  ছবি: বাংলানিউজওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিক উদ্দিন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, বুলবুলের কারণে খুলনা পাঁচটি জেলার চার লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। ৩২টি ফিডারের এসব গ্রাহকদের মধ্যে ১৫টি ফিডার চালু উপযোগী হয়েছে। সন্ধ্যার মধ্যে বাকি ফিডারের কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’ বিপর্যস্ত খুলনার জনজীবন।  ছবি: বাংলানিউজবুলবুলের তাণ্ডেবে পাইকগাছা কপিলমুনির হবিনগর মোড়ের সামনে টাওয়ারের পাশে বিদ্যুতের তারের উপর গাছ পড়ে তৈরি হয়েছে মৃত্যুফাঁদ, নিচে আটকে গেছে ঢাকা থেকে আসা পাইকগাছাগামী পরিবহন, যে কোনো মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা, যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’ বিপর্যস্ত খুলনার জনজীবন।  ছবি: বাংলানিউজউপজেলা ছাড়াও মহানগরের সড়কের ওপর গাছপালা ও সাইনবোর্ড ভেঙে পড়ায় অনেকস্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। গাছপালা কেটে সরানোর পর রোববার (১০ নভেম্বর) বিকেলে পুনরায় যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

নগরীর অধিকাংশ স্থানে বিদ্যুৎ না থাকায় বাসাবাড়িতে পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়। পানি-বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক বাড়িতে রান্নাও হয়নি। বিদ্যুৎ না থাকায় জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে। বৃষ্টিপাতের কারণে নগরের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টিতে মহানগরের শান্তিধাম মোড়, রয়্যাল মোড়, বাইতি পাড়া, তালতলা, মডার্ন ফার্নিচার মোড়, পিকচার প্যালেস মোড়, পিটিআই মোড়, সাতরাস্তার মোড়, শামসুর রহমান রোড, আহসান আহমেদ রোড, দোলখোলা, নিরালা, বাগমারা, মিস্ত্রিপাড়া, ময়লাপোতা, শিববাড়ি মোড়, বড় বাজার, মির্জাপুর রোড, খানজাহান আলী রোড, খালিশপুর মেঘার মোড়, দৌলতপুর, নতুনবাজার, পশ্চিম রূপসা, রূপসা স্ট্যান্ড রোড, সাউথ সেন্ট্রাল রোড, বাবুখান রোড, লবণচরা বান্দা বাজারসহ প্রায় সব এলাকার রাস্তায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এসব এলাকার অনেক ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চলের বস্তি ঘরগুলোতে দেখা গেছে হাঁটুপানি। অনেক এলাকার ভবনের নিচতলায় পানিতে ডুবে গেছে। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’ বিপর্যস্ত খুলনার জনজীবন।  ছবি: বাংলানিউজএদিকে, ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে খুলনার কয়রা ও দাকোপ উপজেলায় দুই হাজার ২৬৫টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৫ শতাধিক পুকুর ও মাছের ঘের। খুলনা জেলা প্রশাসন ও দাকোপ উপজেলা প্রশাসন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৯
এমআরএম/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।