ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতেও সচেতন নয় সাধারণ মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৯
১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতেও সচেতন নয় সাধারণ মানুষ ফাঁকা পড়ে রয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রেগুলো। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: কয়েকদিন ধরে সবার মুখে একটা নাম ‘বুলবুল’। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকাল থেকে বুলবুলকে নিয়ে শুরু হয় তোড়জোড়। একের পর এক সভা ও মাইকিং চলে স্থানীয়ভাবে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৩ ও ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত বৃদ্ধি পায় সাতে। সর্বশেষ শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে বুলবুলের প্রভাবে উপকূলীয় ১০টি জেলাকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়।

এরপর থেকে জনসাধারণকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে জেলা প্রশাসন, সিপিবি, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা মাইকিং করছে। এমনকি শুক্রবার রাতেও বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধিরাও চেষ্টা করছেন যাতে জনগণ আশ্রয় কেন্দ্রে যায়। কিন্তু বাগেরহাটের সাধরণ মানুষ বুঝছেনা মহাবিপদ সংকেতের গুরুত্ব। বুঝলেও গুরুত্ব দিচ্ছে না বিষয়টির। চরম পর্যায়ের জন্য অপেক্ষা করছেন জনসাধারণ।

এর কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে কিছুদিন আগের ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’কে। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র সময় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত থাকলেও হালকা বৃষ্টি ও দমকা বাতাস ছাড়া বড় ধরনের কোনো সমস্যা হয়নি। এরফলে সাধারণ মানুষ মনে করছে আগের বারের মতো এবারও স্বাভাবিক থাকবে সবকিছু। এজন্য আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না লোকজন।

শনিবার দুপুরে মোংলা উপজেলার দিগন্ত প্রকল্প মাধ্যমিক বিদ্যালয় কাম আশ্রয় কেন্দ্রে দেখা যায় মাত্র ৪-৫ জন লোক। আর পুরো আশ্রয় কেন্দ্রই ফাঁকা। কথা হয় আশ্রয়কেন্দ্র আগতদের সঙ্গে। তারা বলেন, হয়ত সন্ধ্যার আগে আগে আসবেন। বাড়ির হাঁস-মুরগী, মূল্যবান মালামাল রেখে কেউ আসতে চায় না আশ্রয়কেন্দ্রে।

শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ফয়েল খায়ের সাইক্লোন শেল্টারেও তেমন কোনো লোক ছিল না দুপুরে দেড়টার দিকে।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার আমিনুল ইসলাম বলেন, ঝড় আসার কথা মাঝে মধ্যেই তো শুনি, এতে কিছু হবে বলে মনে হয়না।

রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন নারী বলেন, ‘ফণী’র সময় হাঁস-মুরগী রেখে আশ্রয়কেন্দ্রে গেছি, পরে কিছু হয়নি আরো হাঁস-মুরগী হারায়ে গেছে। এবার আর যাচ্ছি না। তবে ঝড় বৃষ্টি বেশি হলে যাব।

মোংলা উপজেলার ইসমাইল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, রাত পর্যন্ত দেখব। যদি বৃষ্টি ও বাতাস থাকে তাইলে রাতের খাবার খেয়ে সকলকে নিয়ে যাব আশ্রয় কেন্দ্রে।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বুলবুল’র প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে আমরা সকলকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। কাল থেকে বিভিন্নভাবে নিরবিচ্ছিন্ন প্রচার চলছে। কিছু কিছু আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন যাওয়া শুরু করেছে। প্রত্যন্ত এলাকায় সব থেকে বেশি মানুষ যাচ্ছে আশ্রয় কেন্দ্রে। কিন্তু কিছু মানুষ ভয়াবহতা সম্পর্কে সন্দিহান, তাই যাচ্ছে না। তবে যদি বৃষ্টি ও বাতাসের গতি বৃদ্ধি পায় তাহলে বেশিরভাগ মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে চলে যাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।