ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘বুলবুল’র প্রভাবে বরিশালজুড়ে রাতেও বৃষ্টি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৯
‘বুলবুল’র প্রভাবে বরিশালজুড়ে রাতেও বৃষ্টি রাতে বৃষ্টি/ফাইল ফটো

বরিশাল: শক্তি সঞ্চার করে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল।  যার প্রভাবে গোটা বরিশাল বিভাগ জুড়েই বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করেছে। 

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দুপুর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। তবে কখনও থেমে থেমে, কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কখনও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

 

এদিকে সবকিছু মিলিয়ে বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা ও পিরোজপুরের উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ নভেম্বর মাসের দুর্যোগগুলোই সবচেয়ে বেশি রুদ্রমূর্তি ধারণ করে। ১৯৭০ সালরে ১২ নভেম্বর ভোলা কিংবা ২০০৭ সালে ১৫ নভেম্বরের সিডর নামের ঘূর্ণিঝড় উপকূল দুমড়ে-মুচড়ে দেয়।  

তবে সিডরের পর থেকে প্রশাসনের তৎপরতায় বিগত সময়গুলোতে যে কোনো দুর্যোগেই প্রাণহানিসহ সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ কম ছিল। এবারও সরকারের উচ্চপর্যায়ের তদারকিতে স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান।

ধারাবাহিকতায় উপকূলীয় এলাকায় প্রশাসন স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দিনভর ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সতকর্তামূলক প্রচারণা চালিয়েছেন, যার ঘাটতি দেখা যায়নি রাতেও। গোটা বরিশাল বিভাগজুড়ে ২ হাজার ৯৪টি সাইক্লোন শেল্টারসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ভবন, পাকা ও নিরাপদ স্থাপনা প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়ের জন্য।  প্রস্তুত করা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রভিত্তিক মেডিক্যাল টিম, স্বেচ্ছাসেবক দল। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস, জেলা পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সদস্যদেরও বিভিন্ন কাজে এরইমধ্যে নিয়োজিত রাখা হয়েছে।

অপরদিকে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকাল থেকে দফায় দফায় বিভাগের ছয় জেলার জেলা প্রশাসন সভা করেছে। যার মধ্যে দিয়ে প্রতিটি জেলা ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। বিভাগের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তারও ছুটি বাতিল করা হয়েছে।  

জেলা প্রশাসকরা সভার মাধ্যমে জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় তারা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। পাশাপাশি সবাইকে সতর্ক থাকা আর নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। ধারাবাহিকতায় শনিবার সকাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে জনসাধারণকে। তবে এরআগে পরিস্থিতি খারাপ হলে সে লক্ষ্যে করণীয় বিষয়ক পরিকল্পনাও করা হয়েছে। এক কথায় বিভাগের ছয় জেলার প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

শুক্রবার ভোর থেকেই গভীর সাগরে মাছ ধরারত ট্রলারগুলো উপকূলে নিরাপদে আশ্রয়ে আসতে শুরু করে এবং দুপুর নাগাদ বেশরিভাগ ফিশিংবোট নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার খবর জানিয়েছেন বোট মালিক ও জেলেরা। তবে ঢেউয়ের তোড়ে কুয়াকাটার ঝাউবাগান সংলগ্ন এলাকায় এফবি কুলসুম নামে মাছ ধরার ট্রলার থেকে পড়ে বেল্লাল হোসেন (৪০) নামে এক জেলে নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আনছার উদ্দিন মোল্লা।

অপরদিকে বিকেল থেকে বিভাগের অভ্যন্তরীণ রুটে ছোট আকারের সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। এর বাইরে ঢাকা থেকে রাতে কোনো লঞ্চ উপকূলীয় জেলাগুলোর উদ্দেশ্যে না এলেও বরিশালসহ আশপাশের জেলা থেকে ঢাকাগামী বেশ কয়েকটি লঞ্চ যথাসময়ে ঘাট ত্যাগ করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০২১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৯
এমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।