ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

‘শুদ্ধি অভিযান’ অঙ্গীকারের কার্যকর বাস্তবায়ন চায় টিআইবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৯
‘শুদ্ধি অভিযান’ অঙ্গীকারের কার্যকর বাস্তবায়ন চায় টিআইবি ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান শুদ্ধি অভিযান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ‘কাউকে ছাড় না দেওয়া হবে না’ বলে যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা কার্যকরের নিশ্চয়তার দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। টিআইবি সদস্যদের বার্ষিক সভায় এই দাবি জানানো হয়।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি জানায়, ন্যায়ভিত্তিক, সুশাসিত ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দুর্নীতি প্রতিরোধের সম্মিলিত প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে টিআইবির সদস্যদের বার্ষিক সভা ২০১৮-১৯। সভায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও সহিংসতামুক্ত শিক্ষাঙ্গন, সব নাগরিকের জন্য মানবাধিকার নিশ্চিত, সড়ক পরিবহন আইন- ২০১৮’র কঠোর বাস্তবায়ন এবং আর্থিক খাতে আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে স্বাধীন কমিশন গঠনের মাধ্যমে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান সংস্থার সদস্যরা।

সভার ঘোষণাপত্রে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে কার্যকর দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় উন্নয়নে স্বচ্ছতা ও সবার অংশগ্রহণ, অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব পর্যায়ের অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তাসহ উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিতের তাগিদ জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে টিআইবির ধানমন্ডি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সদস্যরা জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে জনগণকে অধিকতর সম্পৃক্ত করে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন জোরদারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির সাধারণ পর্ষদে সদস্যদের নির্বাচিত প্রতিনিধি কাজী  মোরতুজা আলী। টিআইবির সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার ৫১ সদস্য সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে টিআইবি পরিচালিত বহুমুখী গবষেণা, অধিপরার্মশ ও প্রচারণাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম এবং তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আর্থিক হিসাবের সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন নিরীক্ষা প্রতিবেদনের ওপর সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে টিআইবির কার্যক্রম ভবিষ্যতে আরও গতিশীল ও কার্যকর হবে, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তারা।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একের পর এক রক্তক্ষয়ী ছাত্র সহিংসতা, ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম, দলীয় রাজনৈতিক প্রভাবদুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যত নিস্ক্রিয়তা তথা শিক্ষাঙ্গনে শৃংখলা বজায় রাখতে সরকারের ব্যর্থতায় সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে, সরকারের চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ক্ষমতাসীন ছাত্র ও যুবনেতাদের একাংশের সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কমকর্তা-কর্মচারীর অবাধ দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্রকে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দুর্নীতি বিস্তৃতির পরিচায়ক হিসেবে অভিহিত করেন সদস্যরা। পাশাপাশি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপরাধ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বুলিংসহ বিভিন্ন নির্যাতন এবং সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফেরত আসা নির্যাতনের শিকার নারী শ্রমিকদের আশংকাজনক চিত্রের প্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ জানানো হয়।

সমাজের সব পর্যায়ে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ প্রতিরোধে ‘কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না’ মর্মে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের সঙ্গে সদস্যরা একাত্মতা ঘোষণা করে অনিয়মে জড়িত সবাইকে পরিচয় ও অবস্থান নির্বিশেষে জবাবদিহিতার আওতায় আনা অপরিহার্য বলে মতপ্রকাশ করেন। পাশাপাশি, শিক্ষাঙ্গনের সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকা এবং উত্থাপিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।  

বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের কার্যক্রমে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধিতে আগ্রহী বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাধারণ নাগরিককে টিআইবি সদস্যভুক্ত করে আসছে। পাশাপাশি, সারাদেশে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) প্ল্যাটফর্মে স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে যুক্ত রয়েছেন প্রায় সাত হাজার নাগরিক, যার সিংহভাগ তরুণ প্রজন্মের সদস্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৯
টিআর/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।