ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সচেতনতা কার্যক্রম চলছে, আগামী সপ্তাহ থেকে মামলা

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৯
সচেতনতা কার্যক্রম চলছে, আগামী সপ্তাহ থেকে মামলা নতুন সড়ক আইন প্রচারণায় পুলিশের লিফলেট বিতরণ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে কার্যকর হয়েছে সড়ক নিরাপত্তা আইন-২০১৮। আইনটি নিয়ে যানবাহন চালকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকলেও এখনও শুরু হয়নি আইনভঙ্গের অপরাধে মামলা দায়ের কার্যক্রম। চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে আইনটি সম্পর্কে চালক ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কার্যক্রম। আর আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হবে মামলা দায়ের।

সম্প্রতি সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা বেড়ে গেলে অনেকটাই নড়েচড়ে বসে সরকার। ট্রাফিক আইনের পুরনো অনেক ধারা পরিবর্তন করে বাড়ানো হয় শাস্তির পরিমাণ।

বিশেষ করে ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা, রেজিস্ট্রেশন ও যানবাহনের ফিটনেস না থাকা, উলটো পথে গাড়ি চালানো, অবৈধ পার্কিং, হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালানোর অপরাধের আর্থিক জরিমানা এবং কারাদণ্ড বাড়ানো হয় নজিরবিহীনভাবে বেশি।

তবে ব্যাপকহারে বাড়া এই শাস্তির বিধান কার্যকরে খানিকটা বেগ পেতে হচ্ছে খোদ পুলিশকেও। অন্যদিকে এমন কঠোর আইনের সুবাদে পুলিশের দুর্নীতির সুযোগ বহুমাত্রায় বেড়ে যায় বলে মনে করছেন সাধারণ নাগরিকেরা। সব মিলিয়ে অনেকটা মাঝপথ ধরেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নতুন সড়ক আইন প্রচারণায় পুলিশের সভা।  ছবি: বাংলানিউজসম্প্রতি ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম ট্রাফিক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় বিভিন্ন ধারায় জরিমানার পরিমাণ নির্ধারণ করে দেন। নিজস্ব ক্ষমতাবলে মূল আইন থেকে কিছুটা কমিয়ে সেই জরিমানা নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে আগামী বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) পর্যন্ত মামলা প্রয়োগের পরিবর্তে জনসাধারণ ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

মূলত এরপর থেকে ডিএমপি ট্রাফিকের চারটি বিভাগ অর্থাৎ উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম নিজেদের আওতাধীন এলাকায় আইনটি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম শুরু করে। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর আবদুল্লাহপুর, এয়ারপোর্ট, গাবতলী, মোহাম্মদপুর ও ফার্মগেট এলাকায় পুলিশের এমন সচেতনতামূলক কার্যক্রম দেখা যায়। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে যানবাহন চালক, হেলপার-শ্রমিক, মালিক ও যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ এবং বিফ্রিং সেশন আয়োজন করা হয়। এছাড়াও খোলা জায়গায় মাইকিং করেও আইনটি সম্পর্কে জানানো হচ্ছে সবাইকে।

আইনটির আলোকে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ করা সার্জেন্ট ঝোটন শিকদার বলেন, এই সপ্তাহ পর্যন্ত আমরা মামলা কার্যক্রম পরিচালনা করছি না। আগামী শনিবার (৯ নভেম্বর) থেকে মামলার নতুন কাগজে মামলা দায়ের কার্যক্রম শুরু হবে। এরমধ্যে ডিজিটাল মেশিনে নতুন আইনের ধারা অনুযায়ী সিস্টেমের কাজ শেষ হলে তারপর থেকে ডিজিটাল মেশিনে আগের মতো মামলা দায়ের করা হবে। জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে পথচারীরা। নতুন আইনের কার্যক্রম নিয়ে ডিএমপি ট্রাফিকের উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) প্রবীর কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, কমিশনার স্যারের নির্দেশে আমাদের সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলছে। এর অংশ হিসেবে আমরা বিভিন্ন বাস টার্মিনালে পরিবহন চালক, শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করছি। তাদের মধ্যে আইন সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। গতকালও আমরা মহাখালী বাসটার্মিনালে এমন কার্যক্রম করেছি। আজ আবদুল্লাহপুর ও এয়ারপোর্ট এলাকায় চলন্ত গাড়িতে এবং পথচারীদের মধ্যেও এমন কার্যক্রম পরিচালনা করছি আমরা। ফলে যাত্রী ও সাধারণ জনগণকেও আমরা সচেতন করতে চাই। সবাই আইন মেনে সচেতনতার সঙ্গে চলাফেরা করলে সড়কে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব।

নতুন এ আইনের প্রতি সাধারণ জনগণের পাশাপাশি যানবাহন চালকদেরও সমর্থন ও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলেও দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৯
এসএইচএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।