ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৯
মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার 

নরসিংদী: নরসিংদীর মনোহরদীতে তোফাজ্জল হোসেন (৩০) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

শনিবার (২ নভেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে মনোহরদী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কুলি মিয়ার বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।  

এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তোফাজ্জলের স্ত্রী আয়েশা আক্তার হ্যাপীকে (৩৫) আটক করা হয়েছে।

আয়েশা আক্তার পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার খিরাটি গ্রামের সিরাজুজ্জামানের মেয়ে। নিহত তোফাজ্জল হোসেন নেত্রোকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার পূবাইল গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের দরবেশেরকান্দা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন।  

গত ছয় মাস ধরে মনোহরদী বাসস্ট্যান্ডের পূর্বপাশে কুলি মিয়ার বাড়িতে তোফাজ্জল এবং তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার ভাড়া থাকেন।  

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ১৫ বছর আগে চালাকচর গ্রামের কাজিম উদ্দিনের সঙ্গে আয়েশা আক্তারের বিয়ে হয়। সেখানে সামি (১৩) নামে তার এক ছেলে রয়েছে। ১০ বছর আগে তার স্বামী মারা গেলে তিনি বাবার বাড়ি চলে আসেন। পরে মনোহরদীর একদুয়ারিয়া দরবেশেরকান্দা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ছেলেকে ভর্তি করান। একই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন তোফাজ্জল হোসেন। সেই সুবাদে তোফাজ্জলের সঙ্গে আয়েশা আক্তারের পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত রমজান মাসে তারা নিজেদের সিদ্ধান্তে বিয়ে করেন এবং মনোহরদী ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকেন। বিয়ের পর কিছুদিন দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক মধুর থাকলেও গত তিন মাস ধরে দেখা দেয় তিক্ততা। প্রায় প্রতিদিনই তাদের মধ্যে ঝগড়া এবং মারামারি হতো।  

নিহতের স্ত্রী আয়েশা অাক্তার বলেন, দুই মাস আগে তোফাজ্জল মাদ্রাসার শিক্ষকতা ছেড়ে দেন। সারাদিন বাসায় শুয়ে বসে সময় কাটাতেন। কোনো কাজ-কর্ম না করায় সংসারে আর্থিক সংকট দেখা দিলে আমরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ি। এসব নিয়ে তার সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। ঋণ পরিশোধ, সংসার এবং ছেলের পড়ালেখার খরচের জন্য সম্প্রতি তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করি। এ নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় আমাদের ঝগড়া হয়। রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে একসঙ্গে শুয়ে পড়ি। সাড়ে ১১টার দিকে তোফাজ্জল বাথরুমে ঢোকে। দীর্ঘক্ষণ পরও সে বের না হওয়ায় আমি বাথরুমের দরজা ভেঙে দেখি সে বটি দিয়ে নিজের গলাকেটে ছটফট করছে। এ সময় প্রচুর রক্তক্ষরণে সে বাথরুমেই মারা যায়।

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, শনিবার রাতের দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রোববার সকালে নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।