ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

২২ দিনে মুন্সিগঞ্জে ২ কোটি টাকার ইলিশ জব্দ

সাজ্জাদ হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৯
২২ দিনে মুন্সিগঞ্জে ২ কোটি টাকার ইলিশ জব্দ

মুন্সিগঞ্জ: ইলিশের প্রজনন মৌসুমে চলতি বছরের ৯-৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মুন্সিগঞ্জ জেলায় অভিযান চালিয়ে ২২ টন মা ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। বর্তমানে বাজারে ইলিশের বাজারমূল্য এক হাজার টাকা কেজি। সেই হিসাবে ২২ হাজার কেজি (২২ টন) ইলিশের দাম ২ কোটি ২০ লাখ টাকা। এছাড়া, অভিযানে ৯৫ লাখ ৩৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ৫৬০ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। 

জেলার সর্বত্র চলেছে মৎস্য অফিসের নেতৃত্বে অভিযান। যে অভিযানে জেলা-উপজেলা প্রশাসন, র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌ-বাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনী সহায়তা করছে।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এবার মৎস্য অফিস সফলতা পেয়েছে কয়েকটি ক্ষেত্রে। মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে চলতি বছরে মুন্সিগঞ্জ জেলায় ২৩০টি অভিযান পরিচালিত হয়। ১১০টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৫৬০ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া ৮৭১টি মামলা করা হয় এবং ১১ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযানে ৯৫ লাখ ৩৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয় যার মূল্য ৫০ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা। প্রায় ২১ টন ৮৯০ কেজি মা ইলিশ জব্দ করা হয়।  

লৌহজং উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, পদ্মা নদীতে অভিযান চালিয়ে ১৪ টন ৫৮ কেজি মা ইলিশ ও ৬১.৬৫ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। ৪৩৫ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও ৫৫৪টি মামলা হয়। ১০৬ জনকে ৩ লাখ এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে জানান, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় এক টন ৪০৫ কেজি মা ইলিশ ও ১১.৭৮ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। এছাড়া ২৫টি মোবাইল, ১৭ জনের জেল, ৬১টি মামলা ও এক লাখ ৯১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

টংগিবাড়ী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাকির হোসেন মৃধা বাংলানিউজকে জানান, ৯-৩০ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযানে তিন টন ৮৭০ কেজি মা ইলিশ, এক দশমিক ৪৬৫ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। ২৮টি মোবাইল কোর্ট, ১১০টি জরিমানায় ১.২৯ লাখ টাকা এবং ৭৩ জন জেলেকে সাজা দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে।

গজারিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসলাম হোসেন শেখ বাংলানিউজকে জানান, এবার ইলিশের আকার তুলনামূলকভাবে বড় ছিল। ইলিশের আনাগোনাও ছিল বেশি। ইলিশ প্রজনন মৌসুম শুরুর সময়সীমা আরও এগিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ ৯ অক্টোবর এর পরিবর্তে মাস শুরুর দিকে মৌসুম চালু করা প্রয়োজন বলে মনে করি। কেননা ইলিশের আকৃতি বড় ছিল। এবার উপজেলার প্রকৃত জেলেরা আইন মেনে নদীতে নামেনি।

জেলা কারাগারের জেলার আব্দুল্লাহ ইবনে তোফাজ্জল হোসেন খান বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে প্রায় ৯ শতাধিক জেলে কারাগারে আছেন। নতুন জেলে কারাগারে আসার সম্ভাবনা আছে। তবে সম্প্রতি কারাগারের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।  

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, গত বছরের তুলনায় এবারের মা ইলিশ রক্ষার অভিযান অনেক জোরদার হয়েছে। বিগত বছরে যে অর্জন হয়েছিল তার থেকে এবার প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে অর্জন ভালো। এছাড়া শেষ দিকে যেসব ইলিশ ধরা পড়েছে এগুলো যথেষ্ট ডিম দিয়েছে। বিজ্ঞানীরাও দেখেছে সফলভাবে মা ইলিশ ডিম দিয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।