ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জরিপভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদনে অনাস্থা তথ্যমন্ত্রীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৯
জরিপভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদনে অনাস্থা তথ্যমন্ত্রীর সাংবাদিকদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: দেশের বিভিন্ন বিষয়ে জরিপভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, দেশে অনেক সংস্থা আছে যারা শুধু খারাপ দিকগুলো তুলে ধরে বিভিন্ন জরিপভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিম্নগতি দেখানোর চেষ্টা করে। তাই, এসব প্রতিবেদনের সঙ্গে আমি একমত নই। তবে, সত্য বিষয়গুলো তুলে ধরার ক্ষেত্রে আমার কোনো দ্বিমত নেই। 

বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (আত্মা) উদ্যোগে তামাক নিয়ন্ত্রণ সাংবাদিকতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশে গেলে দেখা যায়, প্রতিটি রাস্তায়, মোড়ে কিংবা রেস্টুরেন্টে প্রচুর মানুষ ধূমপান করে, সেখানে অধূমপায়ীদের অবস্থান করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

সেগুলো আমাদের দেশে নেই। আমাদের দেশের রেস্টুরেন্টে বসে ধূমপানের জন্য অস্বস্তি সৃষ্টি হয় না। অর্থাৎ, আমাদের দেশে ধূমপায়ীদের জন্য কোনো করুণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় না। তাই, আমি মনে করি, এ ধরনের প্রতিবেদন তৈরি করে আমাদেরকে ছোট করা অন্যায়। ২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে ধূমপানমুক্ত হবে। আগে, দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ ধূমপান করতো, এখন তা ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে।

বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অথবা বাণিজ্যমন্ত্রীকে রাখলে ভালো হতো। তারাই বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ও এ সম্পর্কে কিছু বলতে পারতেন। তবুও আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের এসব তথ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজটা করতে পারবো। আমি সম্প্রতি এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করেছি।  

হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের অগ্রগতি হচ্ছে, তার সঙ্গে কিছু ক্ষতিকর দিকও সামনে চলে আসছে। তামাকজাত পণ্য ছাড়াও ই-সিগারেট আমাদের তরুণ সমাজকে ব্যাপক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। সিনেমার সেন্সরবোর্ডে ধূমপান মৃত্যুর কারণ কথাটি লেখা না থাকলে আটকে দেওয়া হয়। তবে, আমাদের গণমাধ্যমকে এ ব্যাপারে আরও এগিয়ে আসতে হবে। জনসম্মুখে ধূমপান করলে জরিমানা হয়, এমন খবর গণমাধ্যমে আসে না। কেননা, তাদের কাছে এটি চটকদার খবর নয়। জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের আরও ভূমিকা বেশি পালন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিজয়ী সাংবাদিকদের হাতে এ বছরের পুরস্কার তুলে দেন। মোট ১৪টি প্রতিবেদন নির্বাচিত হয়েছিল যাচাই-বাছাইয়ের জন্য। দশজনের জুরি বোর্ড তার মধ্যে থেকে তিনজনকে সেরা প্রতিবেদক হিসেবে নির্বাচিত করেন। এর মধ্যে পুরস্কার পেয়েছে বাংলানিউজের সিনিয়র রিপোর্টার শরীফ সুমন।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, থাইল্যান্ডের থামাসাত ইউনিভার্সিটির হেড অব গ্লোবাল রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ড. মেরি আসুন্তা, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফজেইউ) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, সিটিএফকের বাংলাদেশ কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, বিডিনিউজের সাংবাদিক মুর্তজা হায়দার লিটন, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যান্সার ইপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন প্রমুখ।  

এর আগে অনুষ্ঠানে ডব্লিউএইচও এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়ন বিষয়ক গবেষণা ফল প্রকাশ করা হয়।

এসময় জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের আগেই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার দীর্ঘমেয়াদী একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। ইতোমধ্যে তিন বছর অতিবাহিত হলেও তামাক নিয়ন্ত্রণে ধীরগতির কারণে নির্ধারিত সময়ে এই লক্ষ্য অর্জন কঠিন হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় সম্প্রতি প্রজ্ঞার পক্ষ থেকে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে সহায়তার লক্ষ্যে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়ন বিষয়ক একটি গবেষণা সম্পন্ন করা হয়েছে, যার ফলাফল এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৯
এমএএম/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।