ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

রাবিতে নির্দেশনা অমান্য করে মেস মালিকদের অর্থ আদায়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৯
রাবিতে নির্দেশনা অমান্য করে মেস মালিকদের অর্থ আদায় -

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এর ক্যাম্পাস, মেসসহ নগরীর বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ইতোমধ্যে ভরে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ ও রাজশাহী মেস মালিক সমিতির নির্দেশনা অমান্য করে ভর্তিচ্ছুদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে মেস মালিকরা।  

সোমবার (২১ অক্টোবর) ও মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, মহানগর পুলিশ ও রাজশাহী মেস মালিক সমিতির এক যৌথ সভায় ভর্তিচ্ছুদের মেসে অবস্থানের বিনিময়ে কোনো অর্থ আদায় না করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া মেস মালিকরা যেনো অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে না পারে সেজন্য মেস এলাকাগুলোতে মেস মালিক সমিতির হেল্প ডেস্ক কাজ করবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

নগরীর বিনোদপুর, কাজলা, তালাইমারি এলাকার কয়েকটি মেসের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকটি মেস নির্দেশ মেনে চললেও অধিকাংশ মেস মালিকরা মানছেন না। প্রত্যেক পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছে থেকে প্রতি রাতের জন্য দুইশত টাকা থেকে ১ হাজার টাকা দাবি করছে মেস মালিকরা। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে ভর্তিচ্ছুদের মেসে থাকতে না দেওয়া ও মেস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

নগরীর বিনোদপুর এলাকার রাতিশা ছাত্রীনিবাস, মির্জাপুর এলাকার রোজা ছাত্রীনিবাস, সোনামনি ছাত্রীনিবাস, আমজাদের মোড়ের জাহানারা মেস, সাইপা ছাত্রীনিবাস, লেবুবাগান এলাকার সাহেরা ভিলাসহ বেশ কয়েকটি মেস প্রতি রাতের জন্য ১৫০ থেকে ১০০০ টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,  ‘ছাত্রী মেসগুলো থেকে মালিকরা বেশি অর্থ নিচ্ছে। কারণ ছেলেরা মেস মালিকদের সঙ্গে দেন-দরবার করতে পারলেও মেয়েরা মালিকদের কথার বাইরে যেতে পারে না। তাই অধিকাংশ ছাত্রীনিবাসের শিক্ষার্থীরা মালিকদের অতিরিক্ত অর্থ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাতিশা ছাত্রীনিবাসের এক শিক্ষার্থী বলেন,  ‘ভর্তিচ্ছুদের কাছ থেকে মেস মালিক প্রতি রাতের জন্য ১০০০ টাকা করে আদায় করছে। টাকা না দিলে কাউকে মেসে থাকতে দিবে না বলে জানিয়েছে মেস মালিক। ’

তবে রাতিশা মেসের মালিক টাকা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘কারো কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে না। মেসে এসে কথা বলুন। ’

সাইপা ছাত্রীনিবাসের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘ফোনে কথা বলা যাবে না’ বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।

রাজশাহী মেস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, ‘কয়েকটি মেসের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ পেয়েছি। টাকা নেওয়া আসলেই অমানবিক কাজ। মেস মালিক সমিতি নগরীর ৩টি এলাকার জন্য বুথ স্থাপন করেছে। কোনো মেস টাকা আদায় করলে আমাদের বুথে এসে অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ’ 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন,  ‘ভর্তি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে মেস মালিকরা যেনো অর্থ না নিতে পারে, সেজন্য মালিক সমিতিকে ডেকে কথা বলেছি। তারা আমাদের কথা দিয়েছেন। আমি মালিক সমিতিকে জানাবো বিষয়টি যেনো তারা সমাধান করেন। ’

এদিকে ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে রাজশাহীর প্রায় অর্ধশতাধিক হোটেল-মোটেলের কোন কক্ষ ফাঁকা নেই। নগরীর পর্যটন মোটেল,  হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল, হকস ইন, ওয়ে হোম, মুক্তা ইন্টারন্যাশনালসহ অভিজাত ও মাঝারি মানের কোনো হোটেলে কক্ষ পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া, ভর্তি পরীক্ষা দিতে সরকারি কর্মকর্তারা তাদের সন্তানদের নিয়ে আসায় সার্কিট হাউসসহ বিভিন্ন সরকারী দফতরের গেস্ট হাউজগুলোও ফাঁকা নেই।
 
হোটেল ডালাস ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার আলমগীর হোসেন জানান,  রাবি ও রুয়েটের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে আমাদের হোটেলের সব কক্ষ ভাড়া হয়ে গেছে। ২০ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত কোনো কক্ষ ফাঁকা নেই। প্রায় ৭-১০ দিন আগে কক্ষগুলো ভাড়া হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘন্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৯
আরকেআর/ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।