ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

লিজ নেওয়া পুকুরে ভবন বানাচ্ছে শিল্প ও বণিক সমিতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৯
লিজ নেওয়া পুকুরে ভবন বানাচ্ছে শিল্প ও বণিক সমিতি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কুমারশীল মোড়ে লিজ নেওয়া সরকারি পুকুর অবৈধভাবে ভরাট করে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করছে জেলা শিল্প ও বণিক সমিতি।

নির্মাণ কাজের সময় ভবনের মাটির নিচের অংশে (পাইলিং) গভীর খনন কাজ করায় পার্শ্ববর্তী একটি ভবনেও ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে করে স্থানীয়দের মাঝে ঝুঁকি ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমারশীল মোড় এলাকায় অবস্থিত ১ নম্বর খতিয়ান ভুক্ত ১৮১৯ দাগে ১৫ শতক ডোবা শ্রেণির জমি ২০১৪ সালের ১৯ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিল্প ও বণিক সমিতির নামে অস্থায়ী বন্দোবস্ত দেয় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোশাররফ হোসেন। যা সিএস খতিয়ানে রাধিকা মোহন চৌধুরী ও জগত চন্দ্র রায়ের ব্যক্তি মালিকানায় পুকুর এবং বিএস খতিয়ানে জেলা প্রশাসনের মালিকানায় পুকুর শ্রেণিভুক্ত। এরপর কোনো ধরনের অনুমতি না নিয়ে পুকুর ভরাট করে ২০১৮ সালের ১৫ মে নির্মাণ কাজ শুরু করে সমিতি। যার উদ্বোধন করেন স্থানীয় জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা।

৬ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণে চেম্বারের সহ-সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীরের চুক্তি হয়। সরকারি বন্দোবস্তের সময় ১৫ শতক ভূমির মূল্য ৫৮ লাখ ৩৩ হাজার ১৩ টাকা দেখানো হলেও চেম্বার ও জাহাঙ্গীরের মধ্যে ৯ শতাংশ ভূমির মূল্য ৩ কোটি ৫ লাখ ৯ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। এরফলে, একদিকে সরকারের রাজস্ব লোপাট করা হয়েছে অন্যদিকে নিজ প্রতিষ্ঠানের সদস্যকে নির্মাণ কাজের জন্য চুক্তিভুক্ত করে আইন ভঙ্গ করা হয়েছে। সরকারি বন্দোবস্তের জমিতে অস্থায়ী ভবন নির্মাণের আইন থাকলেও শিল্প ও বণিক সমিতি সেই আইনকে তোয়াক্কা না করে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে যা বন্দোবস্তের চুক্তির লঙ্ঘন করে।
 
এদিকে, অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণে গভীর খনন কাজের জন্য পাশে থাকা মদিনা জামে মসজিদে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে মসজিদের মুসুল্লি ও আশপাশের ভবন মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদে ফাটল দেখা দেওয়ার পর জেলা প্রশাসনের নির্দেশে গভীর খনন কাজ বন্ধ রয়েছে।

সেখানে উপস্থিত মসজিদ কমিটির সভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন বাংলানিউজকে বলেন, নানাভাবে আইনি পদক্ষেপ নিয়েও তারা নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে পারছে না।  

জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান বাংলানিউজকে বলেন, মসজিদে ফাটলের বিষয়ে খবর পেয়ে তিনি নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। বন্দোবস্তের চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়ে তিনি বলেন, দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

জেলা শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আজিজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, সকল আইন ও শর্তাদি মেনেই আমরা নির্মাণ কাজ করছি। তবে বন্দোবস্তের ভূমিতে স্থায়ী ভবন নির্মাণের কোনো অনুমতিপত্র আছে কি না? জানতে চাইলে তিনি কাগজ দেখাতে পারেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।