ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নাটোরে সিরিয়াল কিলার বাবু শেখ গ্রেপ্তার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৯
নাটোরে সিরিয়াল কিলার বাবু শেখ গ্রেপ্তার বাম থেকে বাবু শেখ ও তার সহযোগী। পুলিশের প্রেস ব্রিফিং। ছবি: বাংলানিউজ

নাটোর: নাটোরে ৮টি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সিরিয়াল কিলার বাবু শেখ ওরফে কালুকে তার দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

বাবু নাটোর, টাঙ্গাইল ও নওঁগায় ৮ জন নারীকে হত্যা করেছে। নাটোরের লালপুরে একটি জোড়া খুনের হত্যা মামলার তদন্তে উঠে আসে এ দুর্ধর্ষ খুনের কাহিনী।

এসব হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বাবু। সবক’টি খুনের ঘটনায় শ্বাসরোধ করে হত্যার আলামত পায় পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি এ কে এম হাফিজ আকতার।  

এসময় উপস্থিত ছিলেন-নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আকরামুল হোসেনসহ পুলিশ কর্মকর্তাগণ।

মানসিকভাবে বিকৃত এই সিরিয়াল কিলারের বাড়ি নওঁগা জেলার রানিনগর থানার হরিশপুর গ্রামে।  

ডিআইজি বলেন, গত ৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে নাটোরের লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলায় পরপর দুই নারীকে হত্যা করে নগদ টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে যায় একদল চোর। এ ঘটনায় দুই থানায় পৃথক মামলা দায়েরের পর মাঠে নামে পুলিশ। তদন্তের ধারাবাহিকতায় প্রথমে নাটোরের সিংড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রুবেল আলী (২৩) নামে এক যুবককে। তার দেওয়া তথ্যমতে নাটোর শহরের স্বর্ণকার লিটন খাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যমতে আসাদুল ইসলাম (৩৬) নামে অারও একজনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় দুই হত্যার সঙ্গে জড়িত বাবু শেখ ও রুবেল। ১৯ অক্টোবর বাবু শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

নাটোর জেলায় ৫টি, টাঙ্গাইলে ২টি ও নওগাঁয় ১টি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে সিরিয়াল কিলার বাবু শেখ। আটটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে তিনজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করে বাবু।  

এর মধ্যে নাটোরের নলডাঙ্গার বাশিলা এলাকায় আমেনা বেওয়া ও খাজুরা এলাকার স্কুলছাত্রী মরিয়ম খাতুন লাবনি, সিংড়ার শেফালী খাতুন, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বাঁশতল গ্রামের রুপ বানু, টাঙ্গাইলের সখিপুরের সমলা বেগম ও ২০০৭ সালে নওগাঁ জেলা সদরে একটি হত্যাকাণ্ড ঘটায় বাবু।  

এছাড়া গত ৯ অক্টোবর নাটোর জেলার লালপুর থানার চংধুপইল এলাকার আনসার সদস্য সাবিনা পারভীন ও বাগাতিপাড়ার জয়ন্তীপুর এলাকায় রেহেনা বেগমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এ দুটি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বেরিয়ে আসে আসাদুলের নাম।  

তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নাটোর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে বাবু শেখ ওরফে কালু ও শাহিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বাবু শেখ আটটি খুন করার কথা স্বীকার করে।  

ডিআইজি আরও বলেন, জেলে সেজে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়াতো কালু। পুরুষশূন্য বাড়ির ওপর নজরদারি করতো সে। সুযোগ বুঝে ওই বাড়িতে রাতে প্রবেশ করে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর নগদ টাকা ও স্বর্ণলংকার চুরি করতো বাবু ওরফে কালু। বাবুকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে ৮টি মামলার সবকয়টির বিচার করা সম্ভব হবে।

গ্রেপ্তারকৃতদের নাটোর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে উপস্থিত করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৯ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad