ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাবি শিক্ষার্থী ফিরোজ শঙ্কামুক্ত, আন্দোলন স্থগিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৯
রাবি শিক্ষার্থী ফিরোজ শঙ্কামুক্ত, আন্দোলন স্থগিত হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে আহত ফিরোজকে

রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফিরোজ আনাম এখন শঙ্কামুক্ত। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন তিনি। তার মাথায় তিনটি সেলাই পড়েছে। ক্যাম্পাসে এ হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলেও রাত দেড়টার দিকে আন্দোলন স্থগিত করা হয়।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দিনগত রাত সোয়া ১২টার দিকে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম রফিক বাংলানিউজকে বলেন, রাবি শিক্ষার্থী ফিরোজ আনামের শারীরিক অবস্থা এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। তিনি বর্তমানে হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভালো আছেন এবং শঙ্কামুক্ত।

তিনি জানান, দুর্বৃত্তরা লোহা জাতীয় ভোঁতা কোনো কিছু দিয়ে আনামের মাথায় আঘাত করেছে। এতে কিছু অংশ থেঁতলে গেছে। ফলে ওই স্থান থেকে রক্ত ঝরছিল। তাই রক্ত বন্ধের জন্য তার মাথায় থাকা ক্ষতস্থানে সেলাই দিতে হয়েছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের মাঠে অর্থনীতি বিভাগের ফিরোজ নামে এক শিক্ষার্থীকে দুর্বৃত্তরা ছুরিকাঘাত করে। এসময় তার কাছে থাকা ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ফিরোজের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা তার মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়। আহতাবস্থায় তাকে প্রথমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। পরে নেওয়া হয় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

এ ঘটনায় দুর্বৃত্তদের আটকের দাবিতে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এসময় সেখানে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মো. লুৎফর রহমান বলেন, বিক্ষোভ হচ্ছে, দাবি জানাচ্ছে। দাবি মানবো তবে যতটুকু পারি।  

তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর এ ঘটনাকে বরাবরের মতোই তুচ্ছ করে দেখছেন।

ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা চার দফা দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হচ্ছে- বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করতে হবে, দ্বিতীয়ত ১২ ঘণ্টার মধ্যে আসামি ধরতে হবে, তৃতীয়ত ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, চতুর্থত ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।

সড়কে বিক্ষোভকারীরা বলেন, খুব দ্রুত আমরা বিচার চাই। না হয় আন্দোলন বেগতিক হবে। আমরা জানি প্রশাসন চাইলে আসামি ধরা সম্ভব। কিন্তু প্রশাসন প্রতিবারই দায় এড়িয়ে যায়। এবার আর সে সুযোগ দেওয়া হবে না।

রাজশাহীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, হামলাকারী বহিরাগত না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এটা এখনও জানা যায়নি। তবে তারা ছিনতাই করতে আসেনি। ছিনতাই করতে এলে তারা যেভাবেই হোক ওই শিক্ষার্থীর টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিতো। কিন্তু সেটাও করেনি। আর মাথায় আঘাত করেছে। তবে কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে নয়। লোহা জাতীয় ভোঁতা কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তাই মাথার ওপরে কিছু অংশ থেঁতলে গিয়ে রক্ত ঝরেছে।  

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ছাত্ররা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে। দাবি জানাতেই পারে, খুব স্বাভাবিক। তবে তাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে এ ঘটনায় যতটুকু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা নেবে।

প্রক্টরের আশ্বাসের পর আন্দোলন আপাতত স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৯
এসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।