ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শীতকালীন সবজি বাজারে এলেও বাড়ছে দাম, কমেছে মাছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৯
শীতকালীন সবজি বাজারে এলেও বাড়ছে দাম, কমেছে মাছে

ঢাকা: প্রতিদিন রাজধানীর বাজারে প্রবেশ করছে হরেক পদের সবজি। শীতকালীন সবজির আগমন ঘটেছে আরও বেশ আগে। অথচ বাজারে পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ থাকলেও দাম কমছে না মোটেও। বরং নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে চলেছেন বিক্রেতারা। একই অবস্থা শাক ও ডিমের বাজারে। তবে মাছ ও মুরগির দাম কিছুটা নিম্নমুখী। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে পণ্য দুটির। 

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট বাজার, খিলগাঁও ও ফকিরাপুল কাঁচা বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

এসব বাজারে  মানভেদে প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ও উস্তি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, কাকরোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৪০ টাকা, দেশি শসা ৪৫ থেকে ৬০ টাকা, কচুর ছড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর লতা ৪০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গাজর ৭০ থেকে ১০০ টাকায়।

এছাড়া আকারভেদে প্রতি পিস বাঁধা কপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ফুল কপি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে দাম কমেছে সিম ও কাঁচা মরিচের। কেজি প্রতি ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে পণ্য দুটির। বর্তমানে কাঁচা মরিচ প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, সিম বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে।

অন্যদিকে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম ও সব ধরনের শাক। প্রতি আটি লাল শাক ১২ থেকে ১৫ টাকা, মুলা শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, পালং শাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কুমড়া শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লাউ শাক ৩০ থেকে ৫০ টাকা এবং পুঁই শাক ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বাজারে সব ধরনের সবজি থাকলেও পরিমাণে কিছুটা কম থাকায় দাম কমছে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, দেশের অনকে স্থানে সম্প্রতি বন্যার কারণে সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাজারে সবজির আমদানি কম।  

খিলগাও কাঁচা বাজরের সবজি বিক্রেতা হাসিবুল ইসলাম জানান, বাজারে সব ধরনের সবজি আছে, তবে তা পরিমাণে কম। তার মতে, বছরের এ সময়ে সবজির দাম তুলনামূলক কম থাকার কথা, কিন্তু সাম্প্রতিক বন্যার কারণে অনেক এলাকা থেকে সবজি আসছে না বলে দাম কমছে না। সরবরাহ বাড়লেই দাম কমে যাবে বলে ধারণা এ ব্যবসায়ীর।

এ বাজারের ক্রেতা ও রেলওয়ে কর্মচারী আয়ুব বলেন, এখন শীতের সব ধরনের সবজি বাজারে এসেছে। এ সময় সবজির দাম কম হওয়ার কথা, কিন্তু দাম কমছে না কেন জানি না। এ বিষয়ে সরকারিভাবে বাজার মনিটরিং করা দরকার, তাহলে হয়ত দাম সাধ্যের মধ্যে আসবে।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি বিভিন্ন মাছ ‍ও মুরগীর দর ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এসব বাজারে প্রতি কেজি রুই আকার ভেদে  বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২০০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, পাঙাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, কৈ ১৭০ থেকে ২০০ টাকা  দরে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও প্রতিকেজি রুই আকারভেদে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙাস ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া দাম কমে  প্রতি কেজি তেলাপিয়া বর্তমানে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, পাঙাস ১০০ থেকে ১১০ টাকা, কৈ ১৭০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতে দেখা যায়
 
এ ছাড়া কেজি প্রতি ৫০ টাকা পর্যন্ত কমে বাগদা চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৬৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৪৪০ থেকে ৮৫০, দেশি বাইন মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, নদীর বাইন ৫০০ থেকে ৮৫০ টাকা, বাইলা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মলা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি পুঁটি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে এখন প্রচুর পরিমাণে খাল ও নদীর মাছের সরবরাহ বেড়েছে, তাই দাম কিছুটা নিম্নমুখী। তবে মাছের সরবরাহ কমলেই দাম বেড়ে যাবে।

আব্দুল হালিম নামে এক মাছ বিক্রেতা বলেন, কাঁচা বাজারে দাম ওঠা-নামা করে। এখন বাজারে নদী, খাল-বিলের মাছের সরবরাহ বেড়েছে তাই দাম কমেছে।

মাছের মতোই দাম কমেছে মুরগীর বাজারেও। বর্তমানে এসব বাজারে কেজিতে ১০ টাকা কমে  প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, লাল লেয়ার ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায়।  

অন্যদিকে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংসের বাজার। প্রতি কেজি গরু ও মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা, খাসি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, ছাগল ৭০০ থেকে ৭২০ টাকায়।  

এসব বাজারে প্রতি ডজন ব্রয়লার ডিম  ১১৫ টাকা, হাঁসের ডিম  ১৭০ টাকা, সোনালী মুরগির ডিম ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।  

এছাড়া  চাল, ডাল, ভোজ্য তেল ও আদা-রসুনের দাম অপরিবর্তিত আছে।

আরও পড়ুন>>> আবারও একশ ছাড়ালো পেঁয়াজের দাম

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৯
ইএআর/এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad