ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ই-ট্রাফিক সিস্টেমে সিলেটে বাঁচছে কর্মঘণ্টা

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৯
ই-ট্রাফিক সিস্টেমে সিলেটে বাঁচছে কর্মঘণ্টা

সিলেট: প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে অনেক কিছুই। নিত্যনতুন পদ্ধতি আবিষ্কারে পুরনো (অ্যানালগ) পদ্ধতিকে বিদায় জানাচ্ছে মানুষ। তাতে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম কমে আসার পাশাপাশি বাড়ছে সেবার মান। সাশ্রয় হচ্ছে সেবাদাতা-গ্রহিতার কর্মঘণ্টা।

তেমনি ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) ট্রাফিক ব্যবস্থা। ‘ই-ট্রাফিকিং প্রসিকিউশন অ্যান্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেমসের কারণে কমে আসছে যানবাহন চালকদের ভোগান্তি।

একইসঙ্গে বাঁচছে পুলিশ ও চালকদের কর্মঘণ্টা।
 
ডিজিটাল এ পদ্ধতিতে ট্রাফিক ব্যবস্থায় যেমন স্বচ্ছতা এসেছে, তেমনি ভোগান্তি কমছে চালকদের। পাশাপাশি সিলেটের ট্রাফিক ব্যবস্থায় পস মেশিনের ব্যবহারে সহজ হয়ে আসছে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে মামলা দেওয়া ও জরিমানা আদায়।

পস মেশিন (পয়েন্ট অব সার্ভিস) কার্যক্রম ট্রাফিক পুলিশের প্রতি জনগণ ও কর্তৃপক্ষের সন্দেহ বা অবিশ্বাস দূর করতেও যথেষ্ট সহায়তা করবে, এমনই আশা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
 
এ বছরের ২০ মার্চ হয়রানিমুক্ত ট্রাফিক সেবায় ‘পস’ মেশিনে কাজের উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া। বর্তমানে নগরের বিভিন্ন পয়েন্টে পস মেশিন ব্যবহার করছে এসএমপি পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। পাশাপাশি নগরীর ২৫টি বুথে গ্রাহকরা ইউক্যাশে মামলার জরিমানা দিতে পারছেন।   
 
সিলেট নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা বাংলানিউজকে বলেন, পস মেশিনে রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিলেই গাড়ির মালিকানাসহ রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, ট্যাক্সসহ সব তথ্য পাওয়া যাবে। এতে গ্রাহকদের হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়া যাচ্ছে।
 
সিলেটের ট্রাফিক বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত চার মাসে ১৪ হাজার ৪৮১টি মামলা হয়েছে পস মেশিনে। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪২ লাখ ৩১ হাজার ৮শ টাকা। এরমধ্যে জুনে এক হাজার ৬৯৪টি মামলার বিপরীতে আদায় হয়েছে পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। জুলাই মাসে তিন হাজার ২৯০টি মামলার বিপরীতে ১১ লাখ ৯০ হাজার ৬৫০ টাকা, আগস্টে তিন হাজার ৯শ ৬৮ মামলার বিপরীতে ১১ লাখ ৪২ হাজার ৯শ ৫০ টাকা এবং সেপ্টেম্বর মাসে পাঁচ হাজার ৫শ ২৯ মামলার বিপরীতে ১৮ লাখ ৪১ হাজার ৭শ টাকা জরিমানা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে।
 
অবশ্য অ্যানালগ পদ্ধতিতে গত দু’মাসে ছয় হাজার ২২টি মামলার বিপরীতে ৩৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।    
 
এ বিষয়ে উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা আরও বলেন, গত চার মাসের কার্যক্রমের উপর ভিত্তি করে বলা চলে পস মেশিনে ক্রমশ মামলা ও জরিমানা আদায়ের পরিমাণ বাড়ছে।
 
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) নিকোলিন চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, পস মেশিনে কোনো সার্জেন্ট মামলা করলে আমরা অনলাইনে মনিটরিং করতে পারি। সার্ভার খতিয়ে দেখতে পারি জরিমানা আদায় হলো কিনা। যার ওপর মামলা হবে, তিনি ইচ্ছে করলে তাৎক্ষণিক জরিমানা পরিশোধ করে কাগজপত্র নিয়ে যেতে পারবেন, তাকে আর ট্রাফিক অফিসে আসা লাগবে না। অথচ আগে মামলা দিলে জব্দ করা কাগজ সমিতির মাধ্যমে ট্রাফিক অফিস থেকে নিতে হতো। এজন্য লাইনে অপেক্ষা করতে গিয়ে চালকদের সময় নষ্ট হতো। আর এখন কেউ তাৎক্ষণিক জরিমানার টাকা দিতে না পারলেও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ইউক্যাশে টাকা জমা দিতে পারবেন। এতে অতিরিক্ত ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
 
তিনি বলেন, এখনও সম্পূর্ণ নগর পস মেশিনের ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আসেনি। তাছাড়া অনেক সময় সার্ভার কাজ না করলে বা দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে প্রিন্ট দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এসব সমস্যার সমাধান হলে মামলা ও জরিমানা আদায়ে অ্যানালগ পদ্ধতিকে পেছনে ফেলে ডিজিটাল পদ্ধতি এগিয়ে যাবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৯
এনইউ/এবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।