ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শেবাচিমের ডক্টরস হোস্টেলে অভিযান, ইয়াবাসহ কারবারি আটক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৯
শেবাচিমের ডক্টরস হোস্টেলে অভিযান, ইয়াবাসহ কারবারি আটক

বরিশাল: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ডক্টরস হোস্টেলে অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ এক মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী হাসপাতাল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন যৌথভাবে এ অভিযান চালায়। এ সময় হাসপাতালের এফ.এম নূর-উর-রফী হোস্টেলের সামনের ব্লকের তৃতীয় তলার ৩০৩ নম্বর কক্ষ থেকে ৫২০ পিস ইয়াবাসহ  রিফাতুল ইসলাম খান রন্টি নামে ওই কারবারিকে আটক করা হয়।

রন্টি নগরের দক্ষিণ আলেকান্দার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার নামে কোতোয়ালি মডেল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সম্প্রতি তার স্ত্রী আসমা আক্তার রুবিনাকেও আড়াই হাজার পিস ইয়াবাসহ নগরীর গোরস্থান রোড এলাকা থেকে আটক করা হয়। মাদক মামলায় তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।  

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে হাসপাতালের সহকারী পরিচালকসহ তিনি ইন্টার্ন ডক্টরসদের হোস্টেলে যান। সে সময় কিছু অসংলগ্ন বিষয় সামনে এলে বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপস্থিতিতে বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি শুরু করা হয়।

এরই এক পর্যায়ে তৃতীয় তলার ৩০৩ নম্বর কক্ষে এক যুবককে পাওয়া যায়, তিনি কলেজ কিংবা হাসপাতালের কেউ নন। ওই রুমে অবস্থানের কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে রুমে তল্লাশি চালিয়ে ৫২০ পিস ইয়াবা, ইয়াবা সেবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী, মদের বোতল, ছুরিসহ বেশ কিছু সিগারেটের প্যাকেট উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে সন্দেহজনক বাকি কক্ষগুলো পরিদর্শন করে অভিযানের সমাপ্তি টানা হয়।

বাকির হোসেন বলেন, মূলত হোস্টেলে সাবেক ছাত্র বা বহিরাগত কেউ রয়েছে কিনা তা তদারকি করতেই এ অভিযান। আমরা নিয়মের বাইরে কাউকে কোনো কাজ করতে দেবো না।  জিরো ট্রলারেন্স নীতিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আমরা শতভাগ পালন করবো।

ঘটনাস্থল থেকে কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী কমিশনার (এসি)  মো. রাসেল বলেন, আটক যুবকের কাছ থেকে ইয়াবাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধারের পাশাপাশি একটি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটনের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঞা বলেন, আটক হওয়া ব্যক্তি একজন মাদক কারবারি, তার বিরুদ্ধে আগেরও মাদক মামলা রয়েছে। ডক্টরস হোস্টেলে তার আসার কারণ, তার কাছে পাওয়া মাদকের উৎস এবং তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা এসবকিছুই খতিয়ে দেখা হবে।  তার কাছে ছুরি থাকার বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখছি।

তিনি বলেন, আমরা নগরের বিভিন্ন ছাত্রাবাসগুলোতে নজরদারি রাখছি। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রশাসনের উপস্থিতিতে শেবাচিম হাসপাতালে আজকের এ অভিযান। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছি।

এদিকে হোস্টেলে থাকা অন্য অনেকের অভিযোগ, সাবেক সিনিয়র শিক্ষার্থীদের কারণেই বহিরাগতরা এ হোস্টেলে যাতায়াত শুরু করে। মেডিকেল কলেজের ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীর সঙ্গে তারা সেখানে গিয়ে বিভিন্ন কক্ষে থাকতে শুরু করে। তা এখনও অব্যাহত আছে। এরা প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ নিবাসীরা কিছু বলার সাহস পায় না। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই তারা হোস্টেল ঘিরে মাদক ব্যবসা গড়ে তোলে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৯
এমএস/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ