ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঘর থেকে ত্রাণের টিন ফেরত দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৯
ঘর থেকে ত্রাণের টিন ফেরত দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

লালমনিরহাট: সরকারের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগের পর নিজের ঘর থেকে ত্রাণের ঢেউটিন খুলে ভুক্তভোগীকে দিলেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী।

ভুক্তভোগী ভ্যানচালক একরামুল হক রোববার (১৩ অক্টোবর) রাতে টিন ফেরত দেওয়ার বিষয়ে আদিতমারী থানায় অভিযোগ করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে উপজেলা ত্রাণ অফিস থেকে নামুড়ি গ্রামের একরামুল হকের নামে ১৬টি ত্রাণের ঢেউটিন বরাদ্দ দেওয়া হয়।

সেই টিন পলাশী ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী নিজের বাড়িতে ব্যবহার করেন। একই সঙ্গে ওই ভ্যান চালকের নামে একটি সোলার প্যানেল বরাদ্দ নিয়ে চেয়ারম্যান নিজের কাজে ব্যবহার করেন। সেই টিন ও সোলার চাইতে গেলে আজ না কাল বলে ঘোরাতে থাকেন ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী।

অবশেষে নিরুপায় হয়ে টিন ও সোলার উদ্ধার করতে ভ্যান চালক একরামুল গত ৯ অক্টোবর জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি জানতে পেয়ে নিজেকে বাঁচাতে পলাশী ইউপি চেয়ারম্যান কৌশলে ওই ভ্যান চালককে রোববার (১৩ অক্টোবর) বাড়িতে ডেকে নিয়ে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ব্যবহৃত ১২টি ঢেউটিন ফেরত দেন। তবে সেগুলো ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সরবরাহকৃত ৪৪ মিলি গ্রামের নয়। ফেরত দেওয়া ঢেউটিনে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিলমোহর নেই এবং এসব টিন ৩২ মিলি গ্রামের।

এ ঘটনায় প্রকৃত ত্রানের টিন ও সোলারসহ স্বাক্ষর নেওয়া সাদা কাগজটি উদ্ধার করতে রোববার (১৩ অক্টোবর) রাতে আদিতমারী থানায় একটি অভিযোগ দেন ওই ভ্যান চালক একরামুল হক।  

ভ্যান চালক একরামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, টিন দিতে চেয়ে দেড় বছর আগে আমার স্বাক্ষর নেন চেয়ারম্যান। সেই টিন দেড় বছরেও পাইনি। দিচ্ছি বলে দেড় বছর অতিবাহিত হলে বিভিন্নস্থানে অভিযোগ করি। এরপর বাড়িতে ডেকে নিয়ে চেয়ারম্যান ১২টি টিন দিয়ে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। কিন্তু ফেরত দেওয়া টিন ত্রাণের নয়, হালকা টিন। ত্রাণের টিন ও সোলারসহ স্বাক্ষর নেওয়া সাদা কাগজটি উদ্ধার করতে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।

আদিতমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মজিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ত্রাণ শাখার সরবরাহ করা ঢেউটিনে ত্রাণের সিলমোহর দেওয়া রয়েছে এবং টিনগুলো ৪৪ মিলি গ্রামের।  

পলাশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শওকত আলী ত্রাণের টিন আত্মসাতের বিষয়ে অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, দেড় বছর আগেই প্রাপ্তিস্বীকার নিয়ে ত্রাণের ঢেউটিন একরামুলকে দেওয়া হয়েছে। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এ মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।