ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এখনই দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৯
এখনই দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি বক্তব্য রাখছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ছবি: বাংলানিউজ

কিশোরগঞ্জ: দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্নীতি। তাই এখনই দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। দুর্নীতি যেই করুক, তিনি যে দলেরই হোক না কেন, কোনো অবস্থাতেই তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।

বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন।

সরকারের চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, সরকার সমাজ থেকে দুর্নীতি নির্মূলে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে।

দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।

রাষ্ট্রপতি তার নিজের ‘ভাটির শার্দুল’ উপাধি পাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, তাড়াইলে আমার বহুকালের অনেক স্মৃতি রয়েছে। ছাত্রজীবনে সর্বপ্রথম তাড়াইলে আমি জনসভা করেছি। সেটা তাড়াইলের পুরুড়া হাইস্কুলে। ১৯৬৯ সালে তখন ছাত্র আন্দোলন গণ আন্দোলনে রূপ নিল। পুরুড়া হাইস্কুলের আব্দুর রাশিদ আমার কাছে এসে বললো, হামিদ ভাই, পুরুড়া হাইস্কুলে আমরা একটি জনসভা করতে চাই। তো আমরা তো ছাত্রসভা করেছি, জনসভা জীবনে করিনি। তখন রাশিদ বললো, ঢাকা থেকে বড় নেতা আনতে হবে। ’৬৯’র গণআন্দোলনের সময় ঢাকা থেকে কোনো নেতা যে এখানে এসে মিটিং করবে, বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আসবে, সে পরিস্থিতিতে সেটা সম্ভব ছিল না।

তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মহিউদ্দিন সাহেব। রাশিদকে নিয়ে গেলাম। তিনি বললেন, তুমি বড় নেতা খুঁজতেছো, আমাদের হামিদ কী কম বড় নেতা নাকি? তাকে নিয়ে যাও। এ কথা বলার পর রাশিদ বললো, টাইটেল কী দেবো?

তিনি বললেন, নাম লেখবা, টাইটেল লাগবে কেন? আর যদি টাইটেল দিতে চাও লেখবা, ‘ভবিষ্যৎ মন্ত্রী’। আমি বললাম ‘ভবিষ্যৎ মন্ত্রী’ এটা কেন লেখবা, এটা লেখা যাবে না।

তখন মহিউদ্দিন সাহেব বললেন, ব্যাটা, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের বঙ্গশার্দুল। তিনি তখন বঙ্গবন্ধু টাইটেল পাননি, তাকে বঙ্গশার্দুল ডাকা হতো। তোমাদের তাড়াইলও ভাটি, হামিদের বাড়িও ভাটি। সে হলো ‘ভাটির শার্দুল’।

রাষ্ট্রপতি স্মৃতিচারণ করে আরও বলেন, সেই পুরুড়া হাইস্কুল মাঠে তখন লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়েছিল। সেখানে আমি একাই সোয়া দুই ঘণ্টা বক্তৃতা দিয়েছিলাম।

কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. মুজিবুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মো. আফজাল হোসেন, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ আফজাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক, তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আজিজুল হক ভুঁইয়া মোতাহার, তাড়াইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম ভুঁইয়া শাহীন, শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম মওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এর আগে তাড়াইল উপজেলা সদরে স্বাধীনতা ৭১ ভাস্কর্য উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরে বিকেলে রাষ্ট্রপতি তাড়াইল উপজেলা থেকে কিশোরগঞ্জ সদরে আসেন। সন্ধ্যায় তিনি সার্কিট হাউসে সরকারি কর্মকর্তা, গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন। পরে জেলা শহরের খড়মপট্টিস্থ নিজ বাসায় তিনি রাত্রিযাপন করবেন।

৭ দিন সফরের প্রথম দিন বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা সফর করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি আগামী মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ সদর, মিঠামইন, ইটনা ও অষ্টগ্রাম উপজেলা সফর করবেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন, সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন, মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়াসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সময় কাটাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৯
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।