ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাগেরহাটে ইলিশের আড়তে উপচেপড়া ভিড়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৯
বাগেরহাটে ইলিশের আড়তে উপচেপড়া ভিড় ইলিশের আড়তে উপচেপড়া ভিড়। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: আসেন বড় মাছ (৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি), এক পোন (৮০টি) ৩০-৩৫ হাজার। ছোট মাছ (৪০০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম), পোন ২০ হাজার। তেলে ভরপুর লোকাল ইলিশ। রান্নায় তেল লাগবে না, ইলিশের তেলেই ভেজে খাবেন। দাম কম আছে নিয়ে যান। কাল আর পাবেন না। এমনই হাঁক ডাকে মুখরিত ছিল বাগেরহাটের ইলিশের আড়ত কেভি বাজার। 

মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এমন অবস্থা ছিল বাগেরহাট শহররক্ষা বাঁধ সংলগ্ন কেভি বাজারের। কেউ মাছ নিয়ে যাচ্ছেন, কেউ বিভিন্ন পরিবহনে মাছ উঠাচ্ছেন, কেউ আবার ঝুড়িতে বরফ দিয়ে মাছ সাজাচ্ছেন।

মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার শেষ সময়ে আড়তে ছিল ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। অন্যান্য দিনের থেকে কয়েকগুন বেশি ভিড় বাজারে। সাধারণত এই বাজারে প্রতিদিন ফজরের আজান থেকে সকাল ৯টার মধ্যে ইলিশ কেনাবেচা শেষ হয়। বিভিন্ন বাজারে ইলিশের খুচরা বিক্রেতারা এখান থেকে পাইকারি হিসেবে মাছ কিনে নিয়ে যান। পরে ওই সব বাজারে চড়া দামে বিক্রি করেন ক্রেতাদের কাছে। কিন্তু দুপুর আড়াইটার সময়ও বাজারে পাইকারি ক্রেতা-বিক্রেতার পাশাপাশি খুচরা ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। কারণ ঘড়িতে রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী ৯ অক্টোবর হয়ে যাবে। আর ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশি জলসীমায় ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আর এ সময় দেশের অভ্যন্তরে ইলিশ পরিবহন, বিপণন ও মজুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। তাই শেষ মুহূর্তে তড়িঘড়ি করে ইলিশ কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। আর আজকের মধ্যে ইলিশ বিক্রি করে চিন্তামুক্ত হতে চান জেলেরাও। ঝুড়ি ভরা ইলিশ।  ছবি: বাংলানিউজ

ইলিশ বিক্রি করতে আসা জেলে মনিরুল হক, মুন্সি আমিনুর, নুরুল হাওলাদারসহ কয়েকজন বলেন, কাল থেকে ২২ দিন ইলিশ আহরণ ও বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকবে। তাই গত রাতে আসছি। ট্রলারে অনেক মাছ রয়েছে। বিক্রি করে মালিককে ট্রলার বুঝিয়ে দিয়ে বাড়িতে চলে যাব। কম বেশি যা হয় এখনই বিক্রি করতে হবে। তা না হলে নদীতে ঢেলে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

ট্রলার মালিক মানিক হোসেন বলেন, সকাল থেকে ক্রেতার ভিড় থাকলেও মাছের কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছি না। মানুষ জেনে গেছে কাল থেকে বিক্রি করতে পারব না তাই কম দাম বলছে। আমাদেরও বাধ্য হয়ে কম দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

মাছ ক্রেতা নাহিদুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখেছি কাল থেকে ২২ দিন ইলিশ মাছ ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ থাকবে। তাই এ সময় খাওয়ার জন্য মাছ কিনতে এসেছি। অনেক ভিড় থাকায় একটু কষ্ট হচ্ছে দেখে শুনে মাছ কিনতে।

ট্রলার থেকে ইলিশ তুলছেন জেলেরা।  ছবি: বাংলানিউজক্রেতা ফয়সাল হক বলেন, বাজারের থেকে কেভি আড়তে মাছের দাম কিছুটা কম। তবে বাজারে দোকানদারদের কাছ থেকে দেখে শুনে দর-দাম করে ইলিশ কেনা যায়। কিন্তু আড়তে অনেকগুলো এক সঙ্গে কিনতে হয়। ভিড় থাকায় দেখে শুনে নেওয়া যায় না।

বাগেরহাট উপকূলীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী বলেন, শেষ মুহূর্তে বাজারে ইলিশের দাম বেশি থাকবে। তাই সবাই চাচ্ছে কেভিবাজার থেকে মাছ কিনতে।

বাগেরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র কেভি বাজার মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার বলেন, আজ শেষ দিন তাই জেলেরা যেমন চাচ্ছেন মাছ বিক্রি করতে, ক্রেতারাও চাচ্ছেন একটু বেশি পরিমাণ মাছ কিনতে। তাই বাজারে এত বেশি ভিড়। আশাকরি বিকেল পর্যন্ত এ ভিড় থাকবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad