ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মহানবমীতে অসুর বধের প্রত্যয়

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৯
মহানবমীতে অসুর বধের প্রত্যয়

ঢাকা: অষ্টমীর আনন্দ শেষে নবমীতে দুর্গোৎসবের শেষ দিনে গা ভাসিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তাইতো ঢাকের বাদ্য, পূজার আমেজ আর প্রতিমা বন্দনায় এখন মাতোয়ারা গোটা বাংলা। মণ্ডপে মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ঢল, মেঘ-রোদ্দুরের লুকোচুরি খেলা। এর মধ্যেই চলেছে ঠাকুর দেখা।

সোমবার (০৭ অক্টোবর) মহানবমীর দিন অপশক্তি অসুর বধের প্রতিজ্ঞায় দুর্গোৎসবের মহানবমী তিথিতে দুর্গতিনাশিনী দেবীর আরাধনা করছে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সকাল থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে ভক্তরা দেবীর চরণে অর্পণ করছেন পুষ্পাঞ্জলি।

নবমীর সকাল মানে অশুভ শক্তি থেকে মুক্তি। শারদীয় দুর্গা উৎসবের নবমীর এ দিনটিতে দেবী দুর্গা অসুরকে বধ করেছিলেন। সে প্রত্যয়েই এদিন নিজেদের মনের ভেতর ও বাইরের অসুর বধের আশায় মায়ের কৃপা প্রার্থনা করেছে ভক্তরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বাংলানিউজকে বলেন, রামচন্দ্রের অকাল বোধনই আজ শারদীয় দুর্গোৎসব। সেদিন রামচন্দ্র অশুভের প্রতীক রাবণ বধের নিমিত্তে দেবী দুর্গাকে আহ্বান করেছিলেন। ঠিক তেমনিভাবে আমরাও মনের ভেতর ও বাইরের অসুর বধের আশায় মায়ের কৃপা প্রার্থনা করবো। খামারবাড়ী পূজামণ্ডপ।  ছবি: ডি এইচ বাদলতিনি বলেন, গোটা পৃথিবীতে অস্থিরতা। আজ বাদে কাল আমরা মায়ের প্রতিমা বিসর্জন দেব। তারপর করবো বিজয় উৎসব। অশুভোর বিপরীতে শুভোর বিজয় সূচিত করতে আমরা মায়ের কাছে প্রার্থনা করছি।

রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, ভক্তরা এদিন প্রাণভরে স্মরণ করেছে দুর্গা মাকে। এ প্রসঙ্গে কলাবাগান পূজামণ্ডপে মায়ের ভক্ত নিবেদিতা বকশির সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বাঙালির কাছে দেবী দুর্গা কিন্তু ঘরেরই মেয়ে। চার দিনের জন্য গিরিরাজ আর মেনকার কাছ থেকে দশমীতে বিদায় নেবে গৌরী।

'নবমী মানেই অবশ্য একটু চোখ ছল ছল, একটু মন খারাপ, একটু বিদায়ের সুর। মা ফিরে যাবেন কৈলাসে। বছর ভরে অপেক্ষা শুরু হবে আবার। ' যোগ করেন তিনি।

অষ্টমী পেরিয়ে আজ নবমী। উৎসবমুখর পুরো দেশ। তাই তো সকাল থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে মা দুর্গাকে দেখার ভিড়। ঢাকের তালে ধুনুচি নাচ। শারদোৎসবে নানা-ধর্ম ও বর্ণের মানুষ। এদিন নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মহানবমীর পূজা শেষে যথারীতি থাকবে অঞ্জলি নিবেদন ও প্রসাদ বিতরণ। খামারবাড়ী পূজামণ্ডপ।  ছবি: ডি এইচ বাদলএর আগে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ষষ্ঠী তিথিতে বেলতলায় দেবী দুর্গার বোধন ও পরে সন্ধ্যায় মূল প্রতিমায় দেবী ও তার সন্তানদের প্রাণ প্রতিষ্ঠা ও চক্ষুদানের মাধ্যমে শুরু হয় দুর্গোৎসবের মূল আচার।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপনের পর শুরু হয়েছিল সপ্তমী পূজা, যা দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। রোববার (৬ অক্টোবর) কুমারী পূজার পর হয় মহাঅষ্টমীর সন্ধিপূজা।

সোমবার (৭ অক্টোবর) সকালে বিহিত পূজার মাধ্যমে হয় মহানবমী পূজা। আর মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

এ বছর সারা দেশে ৩১ হাজার ৩৯৮টি মণ্ডপে দুর্গা পূজার আয়োজন হয়েছে, যা গতবারের চেয়ে ৪৮৩টি বেশি। রাজধানীতে ২৩৬টিসহ ঢাকা বিভাগে ৭ হাজার ২৭১টি মণ্ডপে পূজা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৯
এইচএমএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।