ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

লিজার ‘আত্মহননে’ পুলিশের গাফিলতি নেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৯
লিজার ‘আত্মহননে’ পুলিশের গাফিলতি নেই

রাজশাহী: রাজশাহীতে থানা থেকে বেরিয়েই শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে কলেজছাত্রী লিজার ‘আত্মহননের’ ঘটনায় পুলিশের কোনো গাফিলতি খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করেছে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস এ তথ্য জানিয়েছেন।  

তিনি বলেন, কলেজছাত্রী লিজা রহমান তার স্বামীর মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন শাহ মখদুম থানায়।

কিন্তু এটি ধর্তব্য কোনো অপরাধ না হওয়ায় মামলা রেকর্ড করেননি ওসি।

পরে লিজাকে দুই নারী কনস্টেবলের সঙ্গে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে এসেই লিজা রাজশাহী মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে গিয়ে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন।

এরপর তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে এ ঘটনাটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) আকারে একটি রেকর্ড রাখতে পারতেন বলে উল্লেখ করা হয়।   

বিকেলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) সালমা বেগমের নেতৃত্বে গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি পুলিশ কমিশনার মো. হুমায়ুন কবিরের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন।

তদন্ত কমিটির অপর সদস্য ছিলেন- রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের উপ-কমিশনার আবু আহম্মদ আল মামুন।

তবে এ ঘটনায় আলাদাভাবে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ওই কমিটি এরইমধ্যে রাজশাহী গিয়ে ঘটনাস্থল ঘুরে পুলিশ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবার বক্তব্য রেকর্ড করে নিয়ে গেছেন।

এদিকে, লিজা রহমানের আত্মহননে প্ররোচনার মামলায় তার স্বামী সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ৩ অক্টোবর গভীর রাতে পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাখাওয়াত হোসেন রাজশাহী সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।

লিজার বাবা আলম মিয়া বাদী হয়ে গত বুধবার (২ অক্টোবর) রাতে মহানগরের শাহ মখদুম থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তার মেয়েকে আত্মহত্যার জন্য প্ররোচিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আলম মিয়া।

এজন্য লিজার স্বামী সাখাওয়াত হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া শ্বশুর মাহাবুব আলম খোকন ও শাশুড়ি নাজনিন বেগমকে আসামি করা হয়েছে। শাহ মখদুম থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) বণী ইসরাইলকে মামলাটি তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর মহানগরের শাহ মখদুম থানায় স্বামী সাখাওয়াত ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে যান লিজা। কিন্তু অভিযোগ না নেওয়ায় থানা থেকে বেরিয়েই নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন তিনি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেখানে অবস্থা অবনতি হলে রাতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। টানা চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বুধবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বুজরুক বোয়ালিয়া গ্রামে। পারিবারিক গোরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৯
এসএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।