ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

চরাঞ্চলে বন্যার পানিতে চাঁই পেতে মাছ শিকার 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৯
চরাঞ্চলে বন্যার পানিতে চাঁই পেতে মাছ শিকার  মাছ ধরার জন্য পেতে রাখা চাঁই। ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: বন্যার পানির সঙ্গে দেশীয় মাছের অবাধ বিচরণ থাকে। নদী উপচে খাল-বিল, ফসলি ক্ষেতে পানি প্রবেশ করে সেই সঙ্গে চলে আসে মাছও। আর সেই বন্যার পানিতে মাছ ধরার হিড়িক পড়ে যায়। 

মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার পদ্মা নদীবেষ্টিত কাঁঠালবাড়ী, চরজানাজাত ও বন্দোরখোলা ইউনিয়নের পদ্মার চরাঞ্চল দ্বিতীয় দফা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। চরাঞ্চল হওয়ায় গবাদি পশু, কৃষি কাজ ও মাছ ধরা এ অঞ্চলের মানুষের জীবিকার অন্যতম উৎস।

 

এদের মধ্যে পেশাদার মাছ শিকারীর পাশাপাশি সৌখিন মাছ শিকারীদের সংখ্যাও কম নয়। চরের প্রায় সবক’টি পরিবারই বন্যা মৌসুমে মাছ শিকার করে থাকে। এসময় পুরো চরাঞ্চল ডুবে যায় পানিতে। বসতঘরেও উঠে যায় পানি।  

চারপাশে পানি থাকায় কমে যায় দিনমজুরের কাজ। এ সময়টায় মাছ শিকারে ঝুঁকে পড়ে চরের মানুষ। বাঁশের চাঁই (দোয়াইর), ঘুণি, নানা প্রকার জাল, বড়শি পেতে মাছ ধরা হয়।  

স্থানীয়রা জানান, চরের সব পরিবারই মাছ ধরায় ব্যস্ত হয়ে যায় বর্ষা মৌসুমে। নিজের খাওয়ার পাশাপাশি বিক্রিও করা হয়। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানের মানুষ মাছ কিনতে পদ্মার চরাঞ্চলে আসে। এখানে নদীর মাছ তুলনামূলক কম দামেই বিক্রি করা হয়।

সরেজমিনে গত শুক্রবার চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, পুরো চরাঞ্চল পানিতে ডুবে আছে। চরের প্রতিটি বাড়ির উঠানেই পানি। রাস্তার পাশ দিয়ে, বাড়ি-ঘরের আশপাশে মাছ ধরার ফাঁদ পেতে রেখেছেন স্থানীয়রা। অনেকে জাল পেতেও মাছ ধরছেন।

মাছ ধরার জন্য জাল ঠিক করা হচ্ছে।  ছবি: বাংলানিউজআক্কাস হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি বলেন, বন্যায় ডুবে গেছে আমাদের ঘর-বাড়ি। চারপাশেই পানি। নিজেদের খাওয়ার জন্য মাছ ধরি। বেশি পেলে বাজারে বিক্রিও করে দেই। তাতে কিছু চাল-ডাল কেনা হয়।

রশিদ আকন নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, রাস্তার পাশ দিয়ে বাঁশের চাঁই (দোয়াইর) পাতা হয়। সন্ধ্যায় পেতে রেখে ভোরে উঠানো হয়। দ্বিতীয় দফায় দুপুরে আরেকবার পাতা হয় দোয়াইরগুলো। তবে রাতে পেতে রাখা দোয়াইর ভোরে উঠালে বেশি মাছ পাওয়া যায়। তা বাজারে বিক্রি করে দেই। দুপুরে যা পাই তা নিজেদের রান্নার জন্য হয়ে যায়।

আরেক ব্যক্তি বলেন, আগে প্রচুর মাছ ছিল। এত মাছ পেতাম পরে আর খেতেও ভালো লাগতো না। এখন কমে গেছে মাছের সংখ্যা। আগের মতো প্রচুর মাছ এখন আর ধরা পড়ে না।

জানা গেছে, বেলে, ট্যাংড়া, বাঁচা, আইড়, বাইম, পুঁটি, চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। স্থানীয় বাজারে এ মাছের চাহিদা অনেক।

একদিকে বন্যার পানি। অন্যদিকে পদ্মার ভাঙন। সব মিলিয়ে চরাঞ্চলবাসী পার করছেন দুর্ভোগের সময়। পানিবন্দি হয়ে পড়ায় দৈনন্দিন কাজ কমে গেছে খেটে খাওয়া মানুষের তাই তারা মাছ ধরে সময় পার করছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।