ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দ্বিধায় বঙ্গবন্ধুর পূর্ণাঙ্গ জীবনী রচিত হয়নি: শাহরিয়ার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৯
দ্বিধায় বঙ্গবন্ধুর পূর্ণাঙ্গ জীবনী রচিত হয়নি: শাহরিয়ার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার মাত্র ছয় মাস পরেই তার মোহভঙ্গ হয়। পরে ১৯৬১ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত গোপনে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য ধাপে ধাপে প্রস্তুত করছিলেন। এ প্রস্তুতি ছাড়া বাংলাদেশ মাত্র নয় মাসে স্বাধীন হতো না। এ সময়কালকে আমরা কীভাবে দেখবো, এ ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠতে পারিনি। যে কারণেই সরকারিভাবে বঙ্গবন্ধুর আনুষ্ঠানিক কোনো জীবনী লেখা হয়নি বলে মনে করি।

বুধবার (০২ অক্টোবর) বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধুর স্মারক বক্তৃতামালায়’ তিনি এ বলেন।

শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত এ বক্তৃতামালায় ‘বঙ্গবন্ধুর পরিবেশ/প্রতিবেশ সচেতনতা: অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচার প্রতিবেশ-সমালোচনা’ শিরোনামে স্মারক বক্তৃতা দেন নাট্যকার অধ্যাপক আবদুস সেলিম।

শাহরিয়ার কবির বলেন, পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্র দীর্ঘদিন সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের আগে শুরু করে ফিলিস্তিন ও তিব্বত এখনও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে। সেখানে বাংলাদেশ মাত্র নয়মাসে স্বাধীন হয়েছে। এর পেছনে বঙ্গবন্ধুর একটি পূর্ব প্রস্তুতি ছিল। এর জন্য তিনি ছাত্রলীগের ভেতরে সিরাজুল ইসলাম দাদাভাই, আবদুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদকে নিয়ে নিউক্লিয়াস গঠন করেছিলেন। যারা ১৯৬১ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়ে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে সশস্ত্র যুদ্ধ করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।

আগরতলা মামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথে আগরতলা মামলা একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর সঙ্গে সম্পৃক্তরা এখনও কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাননি। তাদের মাত্র কয়েকজনই বেঁচে আছেন। তাদের কেন আমরা স্বাধীনতা পদক দেব না?

তিনি আরও বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে স্বাধীনতার পক্ষে ও বিপক্ষের লোকজন দুইভাবে দেখে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি বস্তুনিষ্ঠ ও সত্যনিষ্ঠ ইতিহাস রচনা করতে হবে। যা করতে গিয়ে সত্য ও মিথ্যা উভয় ধরনের তথ্য মিলবে। সেখান থেকে সত্য তথ্যটাই বেছে নিতে হবে। বিএনপিপন্থী অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখেছেন। সেসব ইতিহাস বাংলাদেশকে ৪৭-এ ফিরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যেই লিখেছেন।

অধ্যাপক আবদুস সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর বেড়ে ওঠা প্রতিবেশের ঘনিষ্ঠ পরিচর্যায়। তার অনন্য এক সখ্যতা ছিল বাংলার প্রকৃতি, নদী ও পানির সঙ্গে। সে বোঝাপড়া অন্তরের গভীর টানে হয়তো তাকে কবি তৈরি করেনি, কিন্তু এমন একজন মানুষ তৈরি করেছে, যিনি প্রকৃতির প্রতিটি উপাদানের সঙ্গে সংবেদনশীল। যা তাকে একজন ব্যতিক্রমী রাজনীতিবিদ হিসেবে গড়ে তুলেছে। তিনি রাজনীতিবিদ ছিলেন, কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য রাজনীতিবিদের মতো প্রতিবেশের প্রতি উদাসীন ছিলেন না। আজকের বিশ্বে প্রায় সব রাজনীতিবিদই পরিবেশ বা প্রতিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন। এর পেছনে কাজ করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর পরিবেশের প্রতি সহমর্মিতা ছিল অন্তর্জাত, আরোপিত নয়। যার প্রমাণ মেলে তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ বই দুইটিতে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৯
ডিএন/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।