ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের নজরদারিতে আনা হয়েছে: কাদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৯
অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের নজরদারিতে আনা হয়েছে: কাদের ওবায়দুল কাদের/সংগৃহীত

ঢাকা: সারাদেশে যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের নজরদারিতে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, যারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত তারা অনেকেই গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরেছেন, এখন সরকার কার কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সে বিষয়ে জানতে পারবেন।

মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্টভাবে বলেছেন।

আজ ভোরে তিনি দেশে ফিরেছেন। বিমান বন্দরে তিনি কোনো কিছু বলেননি। শুধু কুশল বিনিময় করেছেন। এখন মন্ত্রিপরিষদে ও দলের লোকদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করলে জানা যাবে পরবর্তিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সুতরাং এটা কথার কথা বা লোক দেখানো আন্দোলন না, সেটা প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন।  

অপরাধীদের তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কতজনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে এরকম কোনো তালিকা নেই। সারা বাংলাদেশেই অভিযান পরিচালনা করা হবে। সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন। সব জায়গায় অভিযান হবে। যারা অপরাধ করবে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একটা অভিযান চলছে। অনেকেই নজরদারিতে আছেন। তালিকার বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলতে পারবে।  

ওবায়দুল কাদের বলেন, অভিযান অবশ্যই কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। অভিযান হলো অপরাধ, অপকর্ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে। যারা দুর্নীতি, মাদকের ব্যবসা করে এধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ছাড় দেওয়া হবে না। এখানে দুর্নীতির বিষয়ে শুধু অওয়ামী লীগের দুর্নীতি নয়। আগে যারা ক্ষমতায় ছিল তারাও দুর্নীতি করে কে কতটা সম্পদের মালিক হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেও। সেজন্য সরকারি দল নিজের ঘর থেকেই অভিযান শুরু করেছে। এর মাধ্যমে সরকার প্রমাণ করতে চায় নিজের দলের লোকদের শাস্তি দিতে চাই। যেটা আগে কখনো হয়নি। বিএনপির আমলে তারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের একজন নেতাকর্মীকেও শাস্তি দেয়নি।

১১ বছর পড় কেন অভিযান জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা এতো  সময় নজরদারিতে রেখেছি। আমরা আরো সময় নিতে চেয়ছি। কারণ একটা অভিযোগ বাস্তবে তথ্য প্রমাণসহ না হয় তাহলে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। সরকারি দল কখনো এ ধরনের শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করে এটা এদেশের জন্য বিরল ঘটনা।  

আওয়ামী লীগের ভেতরে লোকদের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ভেতরের লোকইতো গ্রেপ্তার হচ্ছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ কী আওয়ামী লীগের বাইরে। আওয়ামী লীগের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ১০ দিনে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে যাবে। ধৈর্য ধরুন দেখতে পাবেন। আওয়ামী লীগ পরিচয়ে যারা অপকর্ম করছে তাদের বিরুদ্ধে এই শুদ্ধি অভিযান। অন্যদল থেকে আসা এ বিষয়টা গুরুত্ব দিচ্ছি না। কারণ আমি তাকে নিলাম কেন। সে অপরাধটা করছে আমার দলের পরিচয়ে। অনুপ্রবেশকারীদের বিষয় আমাদের নজরে আছে। তাদের তালিকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন। দলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। আরো বড় ধরনের ব্যবস্থা ভবিষ্যতে হতে পারে। অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে। শাস্তি অনেকভাবেই পায়। গতবার যারা অপরাধ করেছে তাদের অনেকেই কিন্তু এবার পুরস্কৃত হয়নি। আমি একটা বড় অবস্থানে আছি আমাকে যদি বাদ দেওয়া হয় সেটা একটা বিরাট শাস্তি।  

দেশের জনগণ অভিযানে খুশি জানিয়ে কাদের বলেন, বিএনপি ছাড়া বা একটা দল আছে তারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা, জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে এটা তাদের গাত্রদাহনে পরিণত হয়েছে। এটা তারা হজম করতে পারছে না। ফলে তারা বার বার আন্দোলন করতে গিয়ে হোঁচট খায়। এ অভিযানে তাদের আন্দোলন বড় ধরনের হোঁচট খাবে বলে জানান তিনি।  

সম্রাটকে গ্রেফতারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাকেই গ্রেফতার করবেন সেটা তদন্ত করে উপযুক্ত প্রমাণ নিয়েই গ্রেফতার করা হবে। যা বলা আছে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কাজেই এখানে কোনো ব্যাক্তি বিশেষ বা কোনো গোষ্ঠী যেই হোক অপরাধ অপকর্ম করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ধৈর্য ধরুন অপেক্ষা করুন এর শেষটা দেখবেন।  

যুবলীগের সম্মেলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কয়েকটা সম্মেলন আমরা করেছি। যেগুলো বাকি আছে তাদেরকে বলা হয়েছে শিগগিরই সম্মেলন করতে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেই অঙ্গসংগঠনগুলোর সম্মেলনের বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেবো।  

পরিবহন সেক্টরের চাঁদাবাজি ক্যাসিনো থেকে অনেক বেশি হয়, এ বিষয়ে সরকার কী ব্যবস্থা নেবে এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, পরিবহনখাতে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। অপকর্ম ও অপরাধ যেই করবে, চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজির জন্য নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতার জন্য নয়, অপরাধী যেই হোক তাকে শাস্তি পেতে হবে।  

পেঁয়াজের দামের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম বেড়েছে এটা সত্য। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে শিগগিরই দাম কমে যাবে। আমাদের দেশে একটা প্রবণতা আছে। একটা অযুহাত পেলেই সেটাকে ব্যবহার করে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বেড়ে যায়। যতোটা বাড়ার কথা না তার থেকে বেশি বেড়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৯/আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা
জিসিজি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।