নদীবেষ্টিত উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ও চরজানাজাত ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জনপদ বিলীন হচ্ছে পদ্মার ভাঙনে। বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য স্থাপনা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছে ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ।
এদিকে, ভাঙন ঠেকাতে জিওব্যাগ ফেলে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় ভাঙনও বেড়েছে প্রচণ্ড আকারে। গত মঙ্গলবার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মাগুরখণ্ড এলাকার একটি তৃতীয়তলা ভবনের প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে চলে গেছে। বিদ্যালয়টি ওই এলাকার একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আশ্রয়কেন্দ্র ছিল।
এদিকে, বন্দোরখোলা ইউনিয়নের কাজিরসুরা এলাকার একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিও রয়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে। নদী প্রতিদিনই এগিয়ে আসছে বিদ্যালয়টির কাছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান। লেখাপড়া অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়েছে ওইসব বিদ্যালয়ের প্রায় সাত শতাধিক শিক্ষার্থীর।
কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের মাগুরখণ্ড এলাকার বাসিন্দা তামিম ইসমাইল বলেন, শেষ সম্বল হিসেবে টিকে থাকা বসতবাড়িটাও অবশেষে পদ্মায় নিয়ে গেছে। এর আগে গেছে ফসলি জমি। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও শেষ। শত শত পরিবার নদী ভাঙনে গৃহহারা আজ।
চরাঞ্চলের বাসিন্দারা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় দুইশ’ মিটার জায়গা নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। বসতবাড়ি, গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ভাঙন মুখে রয়েছে আরও তিনটি স্কুল ভবনসহ পাঁচটি স্কুল, দু’টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, হাট-বাজারসহ তিনটি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও হাজারো বসতবাড়ি।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত-ইউএনও) আল নোমান বলেন, পদ্মায় পানি বেড়ে ভাঙনের মাত্রাও বেড়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকা আমরা দফায় দফায় পরিদর্শন করেছি। সেখানে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া নদী ভাঙনে বড় ধরনের প্রকল্প হাতে না নিলে চরাঞ্চলের ভাঙন ঠেকানো মুশকিল হয়ে পড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯
আরবি/