ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এসএম শফির মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯
এসএম শফির মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক 

খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম শফির (৬৪) মৃত্যুতে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত পাঠানো এক বিবৃতিতে এতথ্য জানা যায়।  

এতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা এসএম শফির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির অন্যতম সমন্বয়ক উল্লেখ করে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

একই বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

সকালে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শফির মৃত্যু হয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এদিন রাত আনুমানিক ১১টার দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে পারিবারিকভাবে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এসময় পরিবারের সদস্য, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘদিন ধরে তিনি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও ভারতের চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার দু’টি কিডনি প্রায় অকেজো ছিল, হার্টও দুর্বল।  

এছাড়া তিনি ডায়বেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি পৈত্তিক সম্পত্তি বিক্রি করে চট্টগ্রাম, ঢাকা, ভারতে টানা চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ত্যাগী এ নেতাকে ডেকে তার খোঁজ-খবর নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবং প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের তত্ত্বাবধানে শফি ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজ এবং ইউরোলজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা কোনো ধরনের অপারেশনের অনুকূলে নয় বলে চিকিৎসকরা বাড়িতে নিয়ে মেডিক্যাল ম্যানেজম্যান্টের মাধ্যমে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। টানা দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সকালে তিনি মারা যান।
 
এদিকে, বিকেলে চট্টগ্রাম থেকে শফির মরদেহ খাগড়াছড়িতে আনা হয়। বিকেল ৫টায় খাগড়াছড়ি কেন্দ্রীয় ঈদগাঁও মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান, সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।  

পরে সেখানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা শরণার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্স ও দলের পক্ষ থেকে ফুলের শ্রদ্ধা জানান। ফুলের শ্রদ্ধা জানান পৌর মেয়র রফিকুল আলমসহ বিভিন্ন ক্লাব সংগঠন।
 
এর আগে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে শফির মরদেহ আনা হলে সেখানে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
 
বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের আগে শফি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফাতেহপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে তিনি মদুনাহাটে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন। এসময় অন্য নেতাদের সঙ্গে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হলে ’৭৫ সালে পালিয়ে খাগড়াছড়িতে আসেন।
 
সেসময় তিনি খাগড়াছড়ি এসে চাঁদের গাড়ি চালান। তিনি টানা তিনবার খাগড়াছড়ি পৌর সভার কাউন্সিলর ছিলেন। পরবর্তীতে শ্রমিক লীগ থেকে আওয়ামী লীগের নেতা হন। সর্বশেষ তিনি খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পদ-পদবী পেলেও তিনি ব্যক্তি জীবনে উল্লেখ করার মত সহায় সম্পত্তির মালিক হননি।
 
তার মৃত্যুতে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, নারী সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা, সাবেক সংসদ সদস্য যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী শোক প্রকাশ করেন।
 
এছাড়া পৌর মেয়র রফিকুল আলম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শানে আলম, খাগড়াছড়ির জাতীয় পার্টির সভাপতি অমৃত লাল, সাংবাদিক চৌধুরী আতাউর রহমান, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি জীতেন বড়ুয়াসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন শোক প্রকাশ করেছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯
এডি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।