ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মোবাইল চুরির অভিযোগে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ!

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯
মোবাইল চুরির অভিযোগে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ!

মধুপুর (টাঙ্গাইল): টাঙ্গাইলের মধুপুরে মোবাইল চুরির অভিযোগে শরীফুল ইসলাম শরীফ (১৭) নামে এক কিশোরের পরিবারের বসতভিটা উচ্ছেদ করে অন্যত্র চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন গ্রাম্য শালিসী বৈঠকের বিচারকগণ।

মধুপুর উপজেলার বেরীবাইদ ইউনিয়নের ধামাবাশুরি বাজারের কাছে বেরীবাইদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শরীফ ওই গ্রামের আবদুল হাকিমের ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, কিশোর শরীফের বিরুদ্ধে একই গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে খালেকের মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ আনা হয়। এ অভিযোগে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে বেরীবাইদ গ্রামের অভিযুক্ত শরীফের বাড়িতে গ্রাম্য সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যসহ মাতাব্বরগণ বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন। বিচারে শরীফকে দোষী সাব্যস্ত করে গ্রামকে চুরিমুক্ত করতে কিশোর শরীফের বাড়ি উচ্ছেদ করে তার পরিবারকে গ্রাম ছাড়ার রায় দেওয়া হয়। এ রায় শুনে অভিযুক্তের এক মামাসহ বিচারক ও বাদীদের লোকজন শরীফের বাড়িতে হামলে পড়ে বাড়ি-ঘর ভাঙচুর শুরু করে। ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পরিবারটি প্রতিবাদটুকু করতে পারেনি।

‘শরীফের দুই একটি অপরাধের কথা স্বীকার করে এখন অনেকটা সংশোধনের পথে’ উল্লেখ করে পরিবারের এক সদস্য বাংলানিউজকে জানায়, কথিত মোবাইল ফোনের মালিক প্রতিবেশী খালেকের মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার জেরে চুরির অপবাদ দিয়ে শরীফের বিরুদ্ধে এমন বিচারের আয়োজন করা হয়েছিল। রায় দেওয়ার পর বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে দ্রুত বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

ওই এলাকার বাসিন্দা মিজান বাংলানিউজকে জানান, এলাকা চোরমুক্ত রাখতে মাতাব্বররা মিলে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য (৮ নম্বর ওয়ার্ডের) হেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, শুনেছি বাড়ি-ঘর ভেঙে তারা এলাকা ছাড়ছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জুলহাস উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, এক এক করে সাতবার চুরি করে ধরা পড়েছে শরীফ। এ নিয়ে বিচারে এলাকার মানুষের সিদ্ধান্তে অভিযুক্ত পরিবারকে বাড়ি-ঘর ভেঙে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

বাড়ি-ঘর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান বাংলানিউজকে জানান, তাদের বাড়িতে কেউ আক্রমণ করেনি। শরীফের স্বজনরাই বাড়ি-ঘর ভেঙে তাদের চলে যাওয়ায় সহায়তা করেছে।  

মধুপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাসলিমা আহমেদ পলি বাংলানিউজকে জানান, এমন অপরাধে কাউকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করা যায় না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।