ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

শিক্ষকের ছেলে থেকে শতকোটি টাকার মালিক শামীম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯
শিক্ষকের ছেলে থেকে শতকোটি টাকার মালিক শামীম

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের মৃত মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে জি কে শামীম। তিন ছেলে নাসিম, শামীম ও হোসাইনের মধ্যে শামীম ছিলেন দ্বিতীয় সন্তান। তার বাবা ছিলেন হরহরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। 

শামীমরা তিন ভাই-ই রাজনীতি করেন; যার মধ্যে তার বড় ভাই নাসিম জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যুক্ত, আর শামীম যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।  

শামীম ছোটবেলা থেকেই ছিলেন মেধাবী।

সোনারগাঁও বারদী আলিয়া মাদ্রাসা থেকে এসএসসি ও পঞ্চমীঘাট কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালে এইচএসসি পাশ করেই ঢাকায় লেখাপড়া করতে সোনারগাঁও ত্যাগ করেন তিনি। ঢাকায় গিয়ে জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে এরপর আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।  

জানা যায়, ঢাকায় প্রথমে একটি মেসে থাকতেন শামীম। সেখান থেকে ধীরে ধীরে নিজের বাড়ি গাড়িসহ অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান তিনি। বাসাবো ও সবুজবাগ এলাকায় বেড়ে উঠা তার। নিজস্ব কর্মী বাহিনী থেকে সন্ত্রাসী বাহিনীও তৈরি করেন তিনি। সোনারগাঁওতে বাড়ি থাকলেও এখানে থাকতেন না তিনি। বাবার বাড়িতে নতুন করে ভবন নির্মাণ করেন।  

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ১০ শতাংশ জমির উপর তিনতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন তিনি। বাড়িটিতে বিলাসবহুল আসবাবপত্র ও কোটি টাকার মালামালসহ একজন কেয়ারটেকার থাকেন শুধু। তবে দু’দিন আগেই সে ছুটি নিয়ে সদর দরজা তালা দিয়ে চলে যান। এখন সুনসান নীরবতা ওই বাড়িটিতে।  

পুরো তিনতলা বাড়িটি শামীম একা থাকার জন্যই তৈরি করেছেন। এখানে কোনো ভাড়াটিয়াকেও ভাড়া দেওয়া হয়নি। ভেতরে রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের বিশাল ব্যবস্থা।  

জানা যায়, গত রমজানের ঈদে সর্বশেষ বাড়ি এসেছিলেন শামীম। তিনটি গাড়িতে করে সঙ্গে ৬ জন গানম্যান নিয়ে বাড়ি আসেন তিনি। এ ছাড়াও সঙ্গে আরও কয়েকজন আসেন ঢাকা থেকে। ঈদের দিনটি এখানে কাটিয়ে আবার তিনি ফিরে যান ঢাকায়। এরপর আর আসেননি এখানে। তবে বাড়ি আসার সময় সঙ্গে অস্ত্রসহ ৬ জন গানম্যান আনার বিষয়টি নজর কাড়ে এলাকাবাসীর।  

এলাকাবাসী জানান, তারা তার সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না। শুধু জানেন ঢাকায় বড় ব্যবসা ও আওয়ামীলীগ করে। এখানে তেমন আসেন না। বাড়িটির ভেতরে অনেক সুন্দর তবে তিনি এখানে থাকেন না। ভেতরে অনেক দামি আসবাবপত্রও রয়েছে।

তারা জানান, বাবার রেখে যাওয়া ১০ কানি (৩০০ শতাংশ) জমি ছাড়া এখানে আর তাদের কোন সম্পত্তি নেই। তবে শামীম নিজে বাড়িটি অনেক খরচ করে করেছেন এবং ভেতরে অনেক বিলাসবহুল আসবাবপত্র কিনেছেন।

তার ভাতিজা সনমান্দি ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার জানান, চাচা তো যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা। শেষ ঈদে বাড়ি এসেছিলেন। কেয়ারটেকার চলে গেছে দু’দিন আগে তালা দিয়ে তবে কোথায় গেছে জানি না।  

যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক পরিচয়ধারী জি কে শামীমকে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) তার গুলশানের নিকেতনের কার্যালয় থেকে বিপুল অস্ত্র-মাদক ও টাকাসহ আটক করে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন(র‍্যাব)।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯
জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।