ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিজিবি-বিএসএফ নৌকাবাইচে আনন্দমুখর ব্রহ্মপুত্র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯
বিজিবি-বিএসএফ নৌকাবাইচে আনন্দমুখর ব্রহ্মপুত্র নৌকাবাইচে বিজয়ী হয়েছে বিজিবি দল। ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ: আসল মাঝি-মাল্লা কেউ নন। তবুও শক্ত হাতে বৈঠা চালাচ্ছেন একেকজন। প্রতি নৌকায় বসা ৫০-৬০ জওয়ান, যেন ঘাম ঝরানো যুদ্ধে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী! সময় গড়াচ্ছে আর দ্রুতগতিতে ভেসে চলছে নৌকা। ‘কেউ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান’ অবস্থা।

ব্রহ্মপুত্রের দু’পাড়ে শিশু থেকে শুরু করে নারী-পুরুষ সবার কণ্ঠেই হর্ষধ্বনি। আবহমান বাংলার বিলুপ্তপ্রায় এ সংস্কৃতি হৃদয়ে দোলা দিচ্ছে বলেই ধুম পড়েছে হাততালির।

একসময়ের প্রমত্তা নদের বুকে ঐতিহ্যের এ প্রীতি নৌকাবাইচ উৎসব নিমিষেই এনে দিয়েছে অবারিত আনন্দের ফল্গুধারা।

এ দৃশ্য বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলের। ময়মনসিংহে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যকার প্রীতি নৌকাবাইচের।

আবহমান গ্রামবাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও নিজস্বতা ধরে রাখতে হাজারও প্রাণের আনন্দ-উচ্ছ্বলতায় ভরপুর বিকেলের এমন চিত্র বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে সম্প্রীতির অটুট বন্ধন বজায় রাখার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন আয়োজকেরা।

ময়মনসিংহে বিজিবি-বিএসএফের উৎসবমুখর ও উত্তেজনাকর এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা এর আগে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। এক বছর বিরতির পর বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মানুষজন ফের মেতেছে আনন্দ উৎসবে। দুঃসহ গরমের মধ্যেই বিকেল পেরিয়ে এ উৎসব চলে সন্ধ্যা নাগাদ।

বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টরের আয়োজনে এবারের নৌকাবাইচ উৎসবে বিএসএফকে হারিয়ে বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বিজিবি। নৌকাবাইচটি নগরীর খাগডহর এলাকা হতে শুরু হয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল উদ্যানে এসে শেষ হয়।

এ আয়োজনের মাধ্যমে দুই দেশের মানুষের সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতি বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আনিসুর রহমান ও বিএসএফের ওয়াটার স্পোর্টস কোচ সঞ্জয় বেঞ্জোয়াল।

নৌকাবাইচ শেষে বিজয়ী দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিজিবি সরাইল রিজিওনের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাকির হোসেন।

এসময় ৩৯ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শহীদুর রহমান, ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান, ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার শাহ্ আবিদ হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউসুফ খান উপস্থিত ছিলেন।

মোট তিনটি পর্বে এবারের নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্বে বিজিবির মধ্যে দু’টি গ্রুপের লড়াইয়ে পঙ্খীরাজকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় মামা-ভাগ্নে। দ্বিতীয় পর্বে জামালপুর ও শেরপুর থেকে আসা তিনটি দলের মধ্যে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় শেরপুরের আবুল কালাম আজাদের দল, রানার্সআপ আলী মোহাম্মদ ফজলুল হকের দল, তৃতীয় স্থান অর্জন করে জামালপুরের মেহের আলীর দল।

বাংলাদেশ সময় ২১১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
এমএএএম/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।