ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুদকের মামলায় সাজার হার এখন ৭০ শতাংশের কাছাকাছি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
দুদকের মামলায় সাজার হার এখন ৭০ শতাংশের কাছাকাছি

ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় একসময় সাজার হার মাত্র ২২ শতাংশে নেমে গিয়েছিল, যা এখন প্রায় ৭০ শতাংশের কাছাকাছি বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশনের (কোইকা) কান্ট্রি ডিরেক্টর জো হায়য়ুন জুজির নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি একথা জানান।

কমিশনের সক্ষমতার কিছুটা হলেও উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনের মামলায় একসময় সাজার হার মাত্র ২২ শতাংশে নেমে গিয়েছিল, যা এখন প্রায় ৭০ শতাংশের কাছাকাছি।

বিগত তিন বছর যাবত সাজার হারের একটি ইতিবাচক সামঞ্জস্যপূর্ণ ধারাবাহিকতা রয়েছে।

তিনি বলেন, অপরাধীদের চিহ্নিত, থামিয়ে দেওয়া, প্রতিরোধ ও আইনের মুখোমুখি আনতে যে মানের প্রযুক্তির প্রয়োজন, তা কমিশনের এখনও নেই। কমিশনের নিজস্ব ফরেনসিক ল্যাব, মোবাইল ট্র্যাকিং সিস্টেম না থাকায় মামলার তদন্ত এবং আসামিদের গ্রেফতারে যেসব সমস্যার উদ্ভব ঘটে, তা তিনি প্রতিনিধি দলটিকে অবহিত করেন।

তিনি আরও বলেন, মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্টের মাধ্যমে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর কাছে যেসব তথ্য চাওয়া হয়, তা প্রায়ই সময় মতো পাওয়া যায় না। তথ্য না পাওয়ার কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানিলন্ডারিং মামলার তদন্ত শেষ করা যায় না। অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায় না এবং পাচার হওয়া সম্পদও ফিরিয়ে আনা যায় না।

‘মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাসে অর্থায়ণ, ঘুষ লেনদেন হচ্ছে কি-না তা মনিটরিং করার জন্য যে মানের প্রযুক্তির দরকার, তাতে কমিশনের ঘাটতি রয়েছে। ’

এসময় কমিশনের প্রযুক্তির উন্নয়ন, কর্মকৌশলপত্র প্রণয়ন, উত্তম চর্চার শেয়ারিং এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কমিশনের সক্ষমতা বাড়াতে তাদের সহযোগিতা কামনা করেন দুদক চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের নৈতিকতার বিকাশে দুদক যা করছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য দুদকের নেওয়া পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। তরুণদের মাঝে দুর্নীতিবিরোধী ক্যাম্পেইন দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক। দুদককে কীভাবে কারিগরি সহযোগিতা করা যায়- এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সরকারিসেবা প্রদানে হয়রানি, দুর্নীতি, অনিয়ম ও দীর্ঘসূত্রিতা দূর করতে বিজনেস প্রসেস রি-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ প্রণয়ন করে সরকারের কাছে পাঠিয়েছে দুদক। বিজনেস প্রসেস রি- ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে সুশাসনের পথকে আরও সুগম করার অভিপ্রায়ে এ জাতীয় সুপারিশ করা হচ্ছে।  

তিনি বলেন, দুদকের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা মোকাবিলার জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের আর্থিক সহযোগিতার চেয়ে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক জ্ঞান সংবলিত কর্মকৌশলের বেশি প্রয়োজন। কমিশনের চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে নিজস্ব সক্ষমতার ঘাটতি, কাঙ্ক্ষিত মাত্রার জনআস্থার অভাব, প্রযুক্তিগত দুর্বলতা, বিশ্বব্যাপী তথ্য প্রাপ্তির দীর্ঘসূত্রিতা-অনীহা ইত্যাদি।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনের নিজস্ব সক্ষমতার সমৃদ্ধিতে কমিশন বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এমনকি আজকেই কমিশনের ১০ জন কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের উদ্যোগে ঢাকায়, আরও ১০ জন কর্মকর্তা ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে এবং অপর দুই জন কর্মকর্তা থাইল্যান্ডে তদন্ত ও প্রসিকিউশনের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
এসএমএকে/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।