ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কাঙ্ক্ষিত মাত্রার জনআস্থা অর্জন করতে পারেনি দুদক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
কাঙ্ক্ষিত মাত্রার জনআস্থা অর্জন করতে পারেনি দুদক দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক

ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রমে সরকার বা কোনো রাজনৈতিক দল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে না, যা আমাদের বড় শক্তি বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। 

তিনি বলেন, আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে যে, দুদক তার কাজ-কর্মের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত মাত্রার জনআস্থা অর্জন করতে পারেনি। তাই নাগরিকদের আস্থা অর্জনের উদ্দেশ্যেই বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত করছে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুদক কার্যালয়ে ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম এর দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিনিধি ড. সুরুচি পান্ট এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি একথা বলেন।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতে আগামীতে যে ১১টি দেশ (ঘ-১১) বিশ্ব অর্থনীতির নেতৃত্ব দেবে তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বিশ্ব অর্থনীতির নেতৃত্ব দিতে হলে দেশের সম্ভাবনাময় তরুণ প্রজন্মকে মানবসম্পদে পরিণত করার কোনো বিকল্প নেই। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় উল্লেখিত গুণগত শিক্ষার মাধ্যমেই   জনতাত্ত্বিক লভ্যাংশ পাওয়া যেতে পারে। সক্ষম মানবসম্পদ সৃষ্টি করা না গেলে জনতাত্ত্বিক লভ্যাংশ পাওয়ার সুযোগ সীমিত।

তিনি বলেন, ঠিক এ কারণেই কমিশন শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি দমন, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে যেসব দুর্নীতি সংঘটিত হয় তা নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। অপরাধীরা এমনভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে যা নিয়ন্ত্রণ করা চ্যালেঞ্জিং।  

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ অর্থের লেনদেন হচ্ছে কিনা তা মনিটরিংয়ের জন্য কমিশন তাদের ডাটাবেজে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিতভাবে এবং প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে ট্রেড বেইজড মানিলন্ডারিংসহ সব ধরনের অবৈধ লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। অর্থপাচার বন্ধ করতে হলে এসব প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। যারা জাল-জালিয়াতি করে ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করছেন তারাই ওভার-ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করছেন বলে আমাদের ধারণা। তাই সবার সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন।

তিনি বলেন, কমিশন উত্তম চর্চার বিকাশ, তথ্য বিনিময়, দুর্নীতি দমনে কৌশল নির্ধারণসহ বিভিন্ন ইস্যুতে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য ভুটান, রাশিয়া ও ভারতের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। আরো বেশ কয়েকটি দেশের এ জাতীয় সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে বিষয়গুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তাদের সক্ষমতা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে আনার জন্য দেশে-বিদেশে নিবিড় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ সফর মুখ্য বিষয় হতে পারে না। আপনাদের প্রথিতযশা রিসোর্স পারসনরা বাংলাদেশে এসে কমিশনের কমকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। এক্ষেত্রে কমিশন স্থানীয়ভাবে যানবাহন ও লোকাল হসপিটালিটিসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ বহন করতে পারেন।  

চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের অভ্যন্তরীণ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি অবলম্বন করছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কমিশনের ভেতরে দুর্নীতি করে কেউ পার পাবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯
এসএমএকে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।