ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ডিসি-এসিদের থানা তদারকির নির্দেশ দিয়ে কমিশনারের চিঠি

প্রশান্ত মিত্র, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯
ডিসি-এসিদের থানা তদারকির নির্দেশ দিয়ে কমিশনারের চিঠি

ঢাকা: দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই থানায় পুলিশি সেবার মান বাড়াতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নব-নিযুক্ত কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ডিএমপির ক্রাইম ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের থানা তদারকির নির্দেশনা সম্বলিত চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।

থানায় জনসাধারণের ভোগান্তি এড়াতে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) এবং সহকারী কমিশনারদের (এসি) সার্বক্ষণিক থানা মনিটরিংয়ের কথা বলেছেন তিনি। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট উপ-কমিশনারদের (ডিসি) সপ্তাহে অন্তত ২-৩ ঘণ্টা থানায় অবস্থান করে থানার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে বলেছেন ডিএমপি কমিশনার।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ডিএমপি কমিশনারের পাঠানো এক চিঠিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায়, নিরীহ অসহায় জনসাধারণের একটা বিরাট অংশ থানায় তার প্রাপ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমলযোগ্য অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ আমলে না নেওয়া এবং অনাকাঙ্ক্ষিত কালক্ষেপণ করা হয়। ভুক্তভোগীর কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণসহ অনেক সময় অযথা হয়রানিমূলক আচরণের মাধ্যমে তাদেরকে প্রাপ্য আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগও পাওয়া যায়।  

তাই থানায় সেবার মান বাড়াতে ও সেবাপ্রত্যাশীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন সে ব্যাপারে ওসিরা কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন। পাশপাশি জোনাল এসি ও এডিসিরা সার্বক্ষণিক থানার কার্যক্রম মনিটরিং করবেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ডিসিরা তার আওতাভুক্ত প্রতিটি থানায় প্রতি সপ্তাহে অবস্থানের জন্য পরিকল্পনা করবেন। সেই অনুযায়ী থানায় কমপক্ষে ২-৩ ঘণ্টা অবস্থান করে থানার বাস্তব কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন। সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে সরাসরি আইন অনুযায়ী সমস্যার সমাধানের ব্যবস্থা করবেন।

এমন নির্দেশনা সম্বলিত চিঠির বিষয়ে অবগত রয়েছেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ডিএমপির ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আবদুল্লাহিল কাফী।  

তিনি বলেন, আমরা নির্দেশনা পেয়েছি। সেই অনুযায়ী আমরা কাজ শুরু করেছি। আমি নিজে আজ হাজারীবাগ থানায় অবস্থান করে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি।

মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত এক অভ্যন্তরীণ সভায় ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম পুলিশ সদস্যদের থানার মান উন্নয়নের বিষয়ে নতুন পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, প্রত্যেক থানায় ডিএমপি সদর দফতর থেকে জিডি ও মামলা সম্পর্কে দুইটি ছক পাঠানো হবে। প্রতিদিন বেলা ১২টার মধ্যে এই ছকে জিডি ও মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ডিএমপি সদর দফতরে পাঠাতে হবে। বিকেল থেকে আমার অফিসের একটি টিম এ বিষয়ে তদারকি শুরু করবে।

জিডি ও মামলাকারীর কাছে ফোন করে থানার সেবার মান কেমন ছিল, আর্থিক লেনদেনে বাধ্য হয়েছেন কি না, আচরণ ও ব্যবহার কেমন ছিল, আপনাকে কেমন সহযোগিতা করেছে, থানার সেবা পেতে কোনো হয়রানি হতে হয়েছে কি না, কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মামলা তদারকি করছে কি না- এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে। যদি কেউ সেবাপ্রত্যাশীর সঙ্গে খারাপ ও হয়রানিমূলক আচরণ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ১৫ সেপ্টেম্বর নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, থানায় পুলিশ সদস্যদের আচরণগত কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন না হলে আমি নিজে থানায় গিয়ে ওসিগিরি করবো। সিনিয়র অফিসারদের থানায় বসিয়ে দেব। ডিসিদের সপ্তাহে অন্তত একদিন থানায় বসিয়ে দেব। তারা থানায় বসে ওসিগিরি করবেন।

পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিজের পরিকল্পনায় থানা পুলিশকে অগ্রাধিকারের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, থানা থেকে বের হয়ে মানুষ যেন আশ্বস্ত হয়ে ফিরতে পারেন। থানায় সেবা নিতে যাওয়া কাউকে যেন কোনো ধরনের হয়রানি না করা হয়, সেই বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে ওসি-ডিসিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ঢাকার সব থানার ওসি-ডিসিদের সঙ্গে বসেছিলাম। তাদের প্রয়োজনীয় ও কঠোর মনিটরিংয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে পুলিশ ভীতি থেকে বের হতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯
পিএম/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।