ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এফবিআই’র সঙ্গে দুদক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯
এফবিআই’র সঙ্গে দুদক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে বৈঠকে উপস্থিত অতিথিরা

ঢাকা: এফবিআইয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য দুদক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সেগুনবাগিচার দুদক কার্যালয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের আবাসিক আইন উপদেষ্টা এরিক অপেঙ্গার সঙ্গে বৈঠকে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, দুদক এফবিআইয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।

কমিশন প্রত্যাশা করে, দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত বিশেষ করে মানিলন্ডারিং, সাইবার ক্রাইম, আর্থিক লেনদেনের তদন্তের ক্ষেত্রে ফরেনসিক অ্যানালাইসিস, ট্রেড বেইজড মানিলন্ডারিং, অপরাধীদের জিজ্ঞাসাবাদের কৌশল, সম্পদ পুনরুদ্ধার (স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি), তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সংঘটিত আর্থিক ক্রাইম, মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স, তথ্য বিনিময়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা আরো বিকশিত হবে।

তিনি আরো বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ও এফবিআই’র সঙ্গে দুদকের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান এদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ প্রত্যার্পণ ও কমিশনের নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে যথেষ্ট সহযোগিতা করছে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, প্রশিক্ষণ মানেই বিদেশে যেতে হবে। কমিশন এমনটা মনে করে না। প্রয়োজনে এসব বিষয়ে এফবিআই অথবা জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের প্রথিতযশা রিসোর্স পারসনরা বাংলাদেশে এসে কমিশনের কমকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন অথবা আঞ্চলিক পর্যায়ে যেমন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা ইন্দোনেশিয়ায় সমন্বিতভাবে এসব প্রশিক্ষণ হতে পারে। অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে কমিশন সবসময়ই ভ্যালু ফর মানির বিষয়টি বিবেচনা করে।

তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন এখন প্রতিটি অনুসন্ধান বা তদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে নোট বুক অব ইনকোয়ারি সংযোজন বাধ্যতামূলক করেছে। ফলে কমিশন রিপোর্ট দেখেই তদন্তের গতি-প্রকৃতি অনুধাবন করতে পারছে। এতে কমিশনের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি প্রতিরোধ করাও ক্রমান্বয়ে সহজ হচ্ছে।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থপাচারের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ট্রেড বেইজড মানিলন্ডারিং। এ জাতীয় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে দুদক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় সমন্বয়ের প্রয়োজন। তাই কমিশন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে অভিপ্রায় ব্যক্ত করে চিঠি দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কর্মকৌশল বাস্তবায়ন করা গেলে অর্থপাচারের লাগাম টেনে ধরা যেতে পারে।

তিনি বলেন, কেউ যদি আমেরিকায় অর্থ উপার্জন করে গাড়ি-বাড়িসহ সম্পদ গড়ে তোলেন, সে বিষয়ে দুদকের কোনো মাথাব্যাথা নেই, তবে বাংলাদেশ থেকে কেউ যদি অবৈধভাবে অর্থপাচার করে আমেরিকা বা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে সম্পদ তৈরি করেন সেটা দুদক আইনের আওতাভুক্ত অপরাধ। এসব অর্থপাচারকারীদের আইন-আমলে আনতে তিনি এফবিআইসহ সবদেশের এজাতীয় সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন।

দুদক চেয়ারম্যান আরো বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সততা ও নৈতিকমূল্যবোধ সম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কমিশন দেশের প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সততা সংঘ গঠন করেছে। এসব সততা সংঘের সদস্যদের মাধ্যমে কমিশনের অর্থায়নে দুর্নীতিবিরোধী এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ জীবন-যাপনে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে বিতর্ক প্রতিযোগীতা, রচনা প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।

তিনি বলেন, ব্যক্তি জীবনে নৈতিকতার ব্যবহারিক চর্চার উদ্দেশ্যে সততা সংঘ রয়েছে এমন প্রায় চার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সততা স্টোর স্থাপন করা হয়েছে। এসব স্টোরে বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ, চিপস্, চকলেটসহ বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী রয়েছে। আবার প্রতিটি পণ্যের মূল্য তালিকা, পণ্যমূল্য পরিশোধের জন্য ক্যাশ বাক্স ইত্যাদি সবই রয়েছে, নেই শুধু বিক্রেতা। এমনকি এসব স্টোরগুলো সিসিটিভির আওতামুক্ত।  

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের আবাসিক আইন উপদেষ্টা এরিক অপেঙ্গা দুর্নীতি দমন কমিশনের বিভিন্ন কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। কমিশনের অভিযোগ কেন্দ্রের হটলাইন-১০৬ ও তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তিনি গণশুনানি ও সততা স্টোর পরিদর্শনে অভিপ্রায় ব্যক্ত করলে দুদক চেয়ারম্যান তাকে এসব কার্যক্রম দেখানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালককে অনুরোধ করেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখথ, প্রতিরোধ অনুবিভাগের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ, আইসিটি ও প্রশিক্ষণ অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম সোহেল প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯
এসএমএকে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।