ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

হুইলচেয়ারে ‘বন্দি’ বাসন্তির শৈশব

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৯
হুইলচেয়ারে ‘বন্দি’ বাসন্তির শৈশব হুইলচেয়ারে বাসন্তি, ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: এখন বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলায় মেতে থাকার কথা ছিল বাসন্তির। যাওয়ার কথা স্কুলেও। কিন্তু কোথাও তার সরব উপস্থিতি নেই। হুইলচেয়ারে আটকে গেছে বাসন্তির দুরন্ত সেই শৈশব স্বপ্ন।

সিলেটের দলদলি চা বাগানের শ্রমিক অমল দাস ও বিলছি দাসের মেয়ে বাসন্তি। স্বপ্ন তাদের বড় হয়ে মেয়ে রং ছড়াবে ভুবনে।

হয়তো এমন ভাবনায় নাম রেখেছিলেন বাসন্তি।

জটিল রোগ বাসন্তিকে পঙ্গু করে দিয়েছে মাত্র ৯ বছর বয়সে। এক বছর বয়স থেকে তার হাত-পা বেঁকে পেয়েছে ধনুকাকৃতি। এভাবে আটটি বছর কেটেছে হুইল চেয়ারে বসে। বাবা-মায়ের সাহায্যে এভাবেই বেড়ে উঠছে বাসন্তি। বাসন্তিদের রং বদলায় না! বদলায় না ভাগ্যও।

নুন আনতে পান্তা ফুরায় চা শ্রমিক অমল দাসের। মেয়ের চিকিৎসা সে তো আকাশ কুসুম কল্পনা। তারপরও চেষ্টার কমতি ছিল না বাবা-মায়ের। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বাসন্তিকে দেখেছেন চিকিৎসক। দেওয়া হয়েছে ওষুধ। কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যয় বহনের সামর্থ নেই পরিবারের। মেয়ের এমন অবস্থায় দুশ্চিন্তা পেয়ে বসেছে অমল দাসকে। মেয়ের দুশ্চিন্তায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।

বাসন্তির মা বিলছি দাস বাংলানিউজকে জানান, জন্ম থেকে বাসন্তির এ রোগ ছিল না। মেয়েটির বয়স যখন এক বছর, তখন পা বেঁকে যেতে দেখেন তারা। তার ধারণা একবার কোলে থেকে পড়েছিল সে। এরপর থেকে হাত-পা বেঁকে যেতে শুরু করে।
 হুইলচেয়ারে বাসন্তি, ছবি: বাংলানিউজচিকিৎসা না করানোর বিষয়ে বিলছি দাস বলেন, ‘দু’বেলা খাবার জোটে না, চিকিৎসা করাবো কি করে? বাসন্তির হুইল চেয়ারটিও স্থানীয় ইউপি সদস্য দিয়েছেন। ’

তবে বাসন্তির মায়ের ধারণাকে উড়িয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাসন্তির এ অবস্থা মায়ের কোলে থেকে পড়ে  হয়নি। এটা এক ধরনের জটিল রোগ। এর চিকিৎসাও ব্যয় বহুল।  

এ বিষয়ে সিলেটের সিভিল সার্জন হিমাংশু লাল রায় বাংলানিউজকে বলেন, শিশুটিকে না দেখে রোগ সম্পর্কে বর্ণনা করা উচিত হবে না। তবে বাগান ব্যবস্থাপককে বলে রেখেছিলাম কেউ অসুস্থ থাকলে জানাতে। আমরা নিজেরা গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৯
এনইউ/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।