ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রোহিঙ্গাদের পাসপোর্টের নেপথ্যে জন্মসনদ!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯
রোহিঙ্গাদের পাসপোর্টের নেপথ্যে জন্মসনদ! পাসপোর্ট গ্রহণে সহায়তাকারী চক্রের ৬ সদস্য

ঢাকা: মাত্র ৫-১০ হাজার টাকার চুক্তি। টাকা দিলেই সিটি করপোরেশন ও ইউনিয়ন পরিষদের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে মিলতো আসল জন্মসনদ। তথ্যভাণ্ডারে থাকা ওই জন্মসনদের সহায়তায় পাসপোর্টও পেয়ে যেতেন যে কেউ।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা, ফেরারি আসামি ও দাগী অপরাধীদের জন্মনিবন্ধন সনদ সরবরাহ করে পাসপোর্ট গ্রহণে সহায়তাকারী চক্রের ৬ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব-২।

আটকরা হলেন- নারায়ণগঞ্জের ফজলুল করিম (৩৩), সাইফুল ইসলাম (২৪), আজিম হোসেন (২৬), নেত্রকোনার একটি ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা সদস্য মামুন মিয়া (৩৫), ঢাকার একটি সিটি করপোরেশনের মাঈন উদ্দিন (৩৮) ও জাহাঙ্গীর (৩৬)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে সিটি করপোরেশনের ভুয়া জন্মনিবন্ধন সিল, সনদের হার্ড কপি ও সফট কপির হার্ডডিস্ক   উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-৩) পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী বাংলানিউজকে জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের পাশে তিনটি দোকানে অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। চক্রটি ৫-১০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন সিটি করপোরেশন ও ইউনিয়ন পরিষদের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে জন্মনিবন্ধন সনদ সরবরাহ করতো। রোহিঙ্গা ও সাজাপ্রাপ্ত ফেরারি আসামিদের মধ্যে বিদেশ যেতে আগ্রহীরা ছিল তাদের অন্যতম গ্রাহক।

এ চক্রের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ১৩-১৪ জন রোহিঙ্গা জন্মসনদ নিয়েছে জানিয়ে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, তাদের সরবরাহকৃত জন্মসনদ দিয়ে পাসপোর্টের আবেদন করলে জন্মসনদের তথ্য ভাণ্ডারে থাকা তথ্যের মিল থাকায় আবেদনকারীরা পাসপোর্ট পেয়ে যেতেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ক্ষেত্রে নাম, বাবার নাম, বয়স, ঠিকানা পরিবর্তন করে পাসপোর্ট করায় তাদেরকে বিমান বন্দরে আটকানো যেতো না বলেও জানান তিনি।

এসপি মহিউদ্দিন ফারুকী আরো বলেন, অভিযানের সময় জব্দকৃত ও তাদের কম্পিউটারে থাকা জন্মসনদ নিবন্ধিত অর্থাৎ আসল। যাদের নামে জন্ম সনদগুলো তৈরি করা হয়েছে তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দা নয়। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও উদ্যোক্তা সদস্য, সিটি করপোরেশনের নিবন্ধন কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা পরিষদ ও বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ের কর্মচারীদের যোগসাজশে তারা জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটন্যাশনাল সার্ভার ব্যবহার করে আসছিল।

জব্দকৃত কম্পিউটার ও ল্যাপটপের হার্ডডিস্ক তল্লাশি করে অন্তত ২৫ হাজার জন্মসনদ পাওয়া গেছে। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে র‌্যাবের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।