ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বঙ্গবন্ধু নদীপদক: ২৩ আবেদন যাচাই হবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯
বঙ্গবন্ধু নদীপদক: ২৩ আবেদন যাচাই হবে সভায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ অতিথিরা, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু নদীপদক দেওয়ার জন্য জাতীয় পর্যায়ে আটটি এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ১৫টি আবেদনপত্র পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্য থেকে জাতীয় পর্যায়ে তিনটি এবং বিভাগীয় পর্যায়ে আটটি পদক দেওয়া হবে। উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া না গেলে পদকের সংখ্যা কম হতে পারে।

প্রাপ্ত আবদনপত্র থেকে যোগ্য প্রার্থীর কার্যক্রম যাচাইয়ের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে দু’জন করে কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করবেন। তারা তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করবেন।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু নদীপদক দেওয়া জাতীয় মনোনয়ন কমিটির উপদেষ্টা খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধু নদীপদক দেওয়ার জন্য জাতীয় মনোনয়ন কমিটির সভায় এ তথ্য দেন। সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সরকার বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, নদী দখল রোধ, শিল্প কারখানার সৃষ্ট বর্জ্যের দূষণ রোধ, পরিবেশ দূষণ রোধ, নদীর তীরে ও অভ্যন্তরে অবৈধ অবকাঠামো নির্মাণসহ নদী ভরাট রোধ, নদীর স্বাভাবিক গতি-প্রবাহ রক্ষার কাজে সহায়তা দেওয়া, নদীকে নৌ-চলাচলে উপযোগী করে নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং নদীকে দূষণ ও অবৈধ দখল ভরাটমুক্ত করে স্বাভাবিক রূপে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তিকে প্রথমবারের মতো ‘বঙ্গবন্ধু নদীপদক’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

নদী রক্ষায় বঙ্গবন্ধু নদীপদকে জাতীয় পর্যায়ে ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান, সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাকে বিশেষ অবদানের জন্য ১৮ ক্যারেট মানের ৫০ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, নগদ ৭৫ হাজার টাকা ও সার্টিফিকেট এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান, সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাকে বিশেষ অবদানের জন্য ১৮ ক্যারেট মানের ৩০ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, নগদ ৫০ হাজার টাকা ও সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতি বিভাগে একটি করে মোট আটটি এবং জাতীয় পর্যায়ে তিনটি পদক দেওয়া হবে।

পদক দেওয়া সংক্রান্ত নির্দেশিকা অনুসারে উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় এবং জাতীয়/কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবছর সেপ্টেম্বরে কিংবা সুবিধা মতো সময়ে ‘বিশ্ব নৌ দিবস’ এর দিন পদক দেওয়া হবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় পুরস্কারের সংখ্যা ও মূল্যমান বাস্তবতার নিরিখে পরিবর্তন করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বঙ্গবন্ধু নদীপদক নীতিমালা-২০১৯’ অনুমোদন করেছেন।

প্রতিবছর আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থা (আইএমও) সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে বিশ্বব্যাপী সামুদ্রিক পরিবেশ, নৌযানের নিরাপত্তা এবং চলাচলের পথ সুগম করার লক্ষ্যে ‘বিশ্ব নৌ দিবস’ উদযাপন করে থাকে। এ বছর ২৬ সেপ্টেম্বর আইএমও’র বিশ্ব নৌ দিবস পালনের জন্য নির্ধারিত হয়েছে।

নদীমাতৃক এ বাংলাদেশের নদী ও সমুদ্র সুরক্ষা, দূষণ রোধ এবং নৌ চলাচলের পথ সুগম করার লক্ষ্যে জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করার প্রয়াসে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বিশ্ব নৌ দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘নৌ পেশায় দক্ষ নারী, সবাই মিলে দেশ গড়ি’ এ প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ অথবা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের যেকোনো দিন বাংলাদেশে বিশ্ব নৌ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

নৌ দিবসে নদীর নাব্যতা রক্ষা, নদী দখল ও দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মনোনীত ব্যক্তি ও সংস্থাকে দেওয়ার জন্য সরকার ‘বঙ্গবন্ধু নদীপদক’ প্রবর্তনের বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করে। নদী রক্ষা কার্যক্রমে সরকারের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সারাদেশে বিশ্ব নৌ দিবস উদযাপন এবং বঙ্গবন্ধু নদীপদক দেওয়ার মাধ্যমে নদী রক্ষায় সবার ব্যাপক অংশগ্রহণ ও অংশীদারিত্ব সৃষ্টি করা অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে এ বছরই বিশ্ব নৌ দিবসে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু নদীপদক দেওয়ার জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনের সংস্থাগুলো নদীর নাব্যতা রক্ষা, দখল ও দূষণ রোধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নদী রক্ষাকল্পে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনগণের অংশগ্রহণ ও সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সরকারের সহায়ক শক্তি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় পর্যায়ে পদক দেওয়া হলে নদী রক্ষা কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।

সভায় প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ বলেন, নদী রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার এ প্রচেষ্টা সঞ্জীবনী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমান সরকার নদী রক্ষায় দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি করেছে। নদী রক্ষায়  প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু নদীপদক দেওয়া নদী রক্ষা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুস সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের  মধ্যে মনোনয়ন কমিটির সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৯ 
এমআইএইচ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।