ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বন্ধ হওয়ার পথে সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৯
বন্ধ হওয়ার পথে সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানা

নীলফামারী: পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একমাত্র সেতু কারখানাটি যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবস্থিত ওই সেতু কারখানাটি থেকে রেলওয়ের সর্ববৃহৎ হার্ডিঞ্জ সেতুসহ প্রায় ২০০০ হাজার সেতু, কালভার্ট রক্ষণাবেক্ষণ (মেইটেন্যান্স) হয়ে থাকে।

লোকবল সংকট ও দীর্ঘদিনেও আধুনিকায়ন না হওয়ায় সেতু কারখানাটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ১২০ জন লোকবলের বিপরীতে এখন কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২০ জন।

নানা প্রতিবন্ধকতা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা এ কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে এসব সেতু-কালভার্ট পড়বে ঝুঁকিতে, এমন আশঙ্কা খোদ কর্তৃপক্ষের।
 
বিকল হয়ে পড়ে আছে রেলওয়ের দামী মেশিনগুলোরেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৮৭০ সালে তৎকালীন আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের বৃহত্তম এ কারখানাটি গড়ে ওঠে। এর পাশেই একই সময় প্রায় ১৮ একর জমির উপর গড়ে তোলা হয় গুরুত্বপূর্ণ  সেতু কারখানাটি (ব্রিজ ওয়ার্কশপ)। এর উদ্দেশ্য হলো সারাদেশের রেলপথে যেসব ব্রিজ, কালভার্ট রয়েছে তার উপকরণ, নির্মাণ ও স্থাপন এবং সরবরাহকরণ।

এই সেতু কারখানাটির মাধ্যমে পশ্চিমাঞ্চল প্রায় দুই হাজার সেতু কালভার্ট মেরামত হচ্ছে। এর অন্যতম হলো পাবনার পাকশীতে অবস্থিত রেলওয়ে স্থাপনা হার্ডিঞ্জ সেতু ও লালমনিরহাটের তিস্তা রেল সেতু।  

একই সূত্র জানায়, লোকবল সংকট ও দীর্ঘদিনেও আধুনিকায়ন না হওয়ায় সেতু কারখানাটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এর ১২০ জন লোকবলের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২০ জন। সেতু কারখানাটির প্রধান সহকারী ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ার (এবিই) এক বছর আগে অবসরে গেছেন। ওই শূন্যপদ এখনও পূরণ করা হয়নি। এমনকি ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদেও লোকবল নেই। ফলে প্রতিষ্ঠানটি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে এর অধিকাংশ কার্যক্রম। বর্তমানে ওই কারখানাটিতে কাজ হচ্ছে রেল সেতুর গার্ডার নির্মাণ, রেলওয়ে স্থাপনার জন্য পানির ট্যাংক নির্মাণ, রেললাইনের জন্য পয়েন্ট অ্যান্ড ক্রেসিং ও ট্যাঙ্ক রেল সেটআপ এবং হার্ডিঞ্জ সেতুর জন্য এক্সপাঞ্জ সুইচ নির্মাণ। এছাড়াও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ওই সেতু কারখানায় রেলের সেতু ও কালভার্ট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ অব্যাহত রয়েছে।  

অযত্নে পড়ে আছে রেলওয়ের সম্পদসরেজমিনে গেলে কথা অফিস ইনচার্জ আশরাফ আলীর সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘদিনেও সেতু কারখানাটির আধুনিকায়ন হয়নি। কারখানাটির ইয়ার্ডে পড়ে আছে অব্যবহৃত লোহা-লক্কর। জঙ্গলে ঢাকা পড়ছে পুরো এলাকা। নষ্ট হয়ে পড়ে আছে পাঁচটি এয়ার কম্প্রেসার, তিনটি ওয়েডিং প্লান্ট, উইংস ক্রাপ, গার্ডার ইয়ার্ডের শেয়ারিং মেশিন। অনুরুপ ৩৫টি মেশিন বিকল হয়ে পড়ে আছে। যার মূল্য প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।

এ নিয়ে কথা হয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সৈয়দপুর রেলওয়ে পূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এইএন) আহসান উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি স্বীকার করেন কারখানাটি আগের মতো কর্মব্যস্ততা নেই। লোকবলও নেই। ফলে যে কোনো সময় সেতু কারখানাটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad