ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যেখানে-সেখানে কারখানা হলে গ্যাস-বিদ্যুৎ পাবে না

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯
যেখানে-সেখানে কারখানা হলে গ্যাস-বিদ্যুৎ পাবে না প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদের সাক্ষাৎ। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: যেখানে-সেখানে কল-কারখানা হলে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে না জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছি, শিল্প-কারখানা সেখানে করতে হবে।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদের নবনির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে একথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাস্তার পাশে কোনো ইন্ডাস্ট্রি হবে না।

তাহলে কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবে না।  

তিনি বলেন, রাস্তার পাশে যেখানে-সেখানে জমি কিনেই ইন্ডাস্ট্রি করা হলে আমরা কিন্তু কিছুই দেবো না। বিদ্যুৎ দেবো না, গ্যাসও দেবো না, পানিও দেবো না। কিচ্ছু দেবো না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছি, সেখানে শিল্প-কারখানা করতে হবে। সেখানে সব ধরনের সুবিধা থাকবে। যেখানে ইন্ডাস্ট্রি হবে সেখানে শ্রমিকদের থাকার ব্যবস্থাও করতে হবে।

বিদেশে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কাজ করতে ব্যবসায়ীদের আহ্বান

নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থে বিদেশে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের কিছু লোক আছে অনবরত আমাদের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা চালায়। এটা আপনাদের অ্যাড্রেস করতে হবে। যার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত আপনারা হন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে পলিটিক্যালি ক্ষতি করতে চায়। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যান আপনারা ব্যবসায়ীরা।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশটাকে আমরা গড়ে তুলতে চাই, সব দিক থেকে। আর আমাদের অর্থনীতি যদিও কৃষিপ্রধান, কিন্তু এটাও ঠিক শিল্পায়ন ছাড়া কোনো দেশের উন্নতিটা ত্বরান্বিত হয় না। এটাও বাস্তবতা। সেজন্য একদিকে আমরা কৃষিকেও গুরুত্ব দেই, আবার শিল্পকেও গুরুত্ব দেই।  

শিল্পায়নের ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের কর্মসংস্থান ব্যাপকভাবে বাড়ছে এতে কোনো সন্দেহ নাই।

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সরকারে আসার পর থেকে যত রকমের সুবিধা দেওয়ার কথা সেটা কিন্তু করে যাচ্ছি।

নতুন বাজার খোঁজা ও পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে গার্মেন্টস সেক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি আমাদের এটাও চিন্তা করতে হবে আমাদের ডাইভারসিফিকেশন প্রয়োজন। বিভিন্ন পণ্য বহুমুখীকরণ এটাও প্রয়োজন। কোন দেশে কোন পণ্যের বাজার আছে সেটা দেখা।

বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকির কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

রেলের উন্নয়নের সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও এ সেক্টরের উন্নতির কথা তুলে ধরেন তিনি।

বাংলাদেশের শ্রমিকদের উৎপাদন ক্ষমতা ও কম খরচের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব দেশের সঙ্গে আমাদের রপ্তানি আছে সেটা থাকবে। তাদের গরজেই এটা থাকবে, একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, শুধু লেবার খরচই কম তা কিন্তু না। আমরা যে পরিমাণে সাপ্লাই দিতে পারি, ভলিউমটা যে পরিমাণে দিতে পারি অন্য কোনো দেশ দেবে না।  

শ্রমিকদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের শ্রমিকরা কিন্তু খুবই ভালো। তারা যে আট ঘণ্টা কাজ করে, অতিরিক্ত কাজ করতে বললে ওরা করে দেয়। ছুটির দিনেও কাজ করে দেয়। পৃথিবীর অন্য দেশে কেউ কিন্তু করে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা যখন কাজ করে তারা কাজকে আপন করে নেয়। এই গুণটা বাংলাদেশের মানুষের আছে।

ব্রেক্সিট ইস্যুতে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে আলাপের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের যে চুক্তি আছে সেটা যেভাবে আছে সেভাবে চলতে থাকবে। ব্রেক্সিট-এ আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে খুব একটা প্রভাব পড়বে না।

বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হকের নেতৃত্বে সংগঠনটির নেতারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, বিজিএমইএ এর সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা, সিদ্দিকুর রহমান, আনোয়ারুল আলম পারভেজ প্রমুখ।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯
এমইউএম/এএ/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।