ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রক্ত ঝরাচ্ছে মুসলমানরা, সুবিধা নিচ্ছে অন্যরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯
রক্ত ঝরাচ্ছে মুসলমানরা, সুবিধা নিচ্ছে অন্যরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে রক্ত ঝরাচ্ছে। আর এ থেকে সুবিধা ভোগ করছে অন্যরা।

বুধবার (সেপ্টেম্বর ৪) ঢাকা সফররত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

পরে, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য দরকার। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ-সংঘাত চলছে, এ সুযোগে থার্ড কান্ট্রি বা থার্ড পার্টি (তৃতীয় পক্ষ) লাভবান হচ্ছে। মুসলমানরা নিজেদের মধ্য রক্ত ঝরাচ্ছে আর অন্যরা এ থেকে সুবিধা ভোগ করছে।

মুসলমানদের মধ্যে সমস্যা ও সংঘাত নিজেরাই দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের ওপর জোর দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এর জন্য কোনো রক্তপাতের প্রয়োজন নেই।

মুসলমানদের নিজেদের মধ্যে সংঘাত বন্ধে ওআইসি’কে (অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন) ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলমানদের মধ্যে সংঘাত বন্ধে ওআইসির এগিয়ে আসা উচিত।

এসময় বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতির কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা প্রায় এক লাখ সন্তান জন্ম দিয়েছে বলে জানান তিনি।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণই তার লক্ষ্য বলেও জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৪ শতাংশ রেখে বাংলাদেশের জিডিপি ৮ দশমিক ১ শতাংশ অর্জনের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

ইরানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে আমাদের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক। বাংলা ভাষায় অনেক ফারসি শব্দ থাকার কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

এসময় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ।  ছবি: পিআইডি

দুই দেশের মধ্যকার সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরান-বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।

সাক্ষাতে ইরানের ওপর আমেরিকার অবরোধ আরোপের পর দেশটির বর্তমান অবস্থার কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ।

ইরান সৌদি আরবসহ সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ঐক্য চাই। সৌদি আরবসহ সব প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাই। কোনো বৈরিতা চাই না।

মুসলিম দেশগুলোকে অস্ত্রের পেছনে অর্থ খরচ না করে তা জনকল্যাণে ব্যয় করার আহ্বান জানিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা অস্ত্রের জন্য টাকা খরচ করতে চাই না। এ টাকা দিয়ে জনকল্যাণ করতে চাই।

ওআইসিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসা করেন ইরানি মন্ত্রী।

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতির প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এসব হয়েছে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতি দৃষ্টান্তমূলক অর্জন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ইরানের উন্নয়নের কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তুলে ধরেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ইরান সেমিনার করবে বলেও জানান তিনি।

১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন জাভেদ জারিফ।

ইরানি প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নাফার। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯
এমইউএম/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।